মাইনুল ইসলাম রাজু
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আমতলীর দূরপাল্লার ইউনিক বাস কাউন্টারের পাল্টাপাল্টি দখলের অভিযোগে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে ধারালো দা ও রামদা নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে ১১ জন আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে মুমুর্ষ অবস্থায় পটুয়াখালী ও বরিশাল নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে আমতলী পৌর সভার বটতলা নামক স্থানে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। এ ঘটনার পর দুপুর থেকে বটতলায় অবস্থিত ঢাকাসহ দেশের দূর পাল্লার পরিবহনের সকল কাউন্টার ৪ঘন্টা বন্ধ ছিল।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুর ১২টার সময় আমতলী পৌরসভার বটতলা নামক স্থানে দূরপাল্লার পরিবহন ইউনিক কাউন্টারের পাল্টাপাল্টি দখল নিয়ে যুবদল আহবায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক কাউন্সিলর সামসুল হক চৌকিদার ও পৌর বিএনপি ও যুবদলের আহবায়ক কবির ফকিরের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে এক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষ ধারালো রামদা ও লাঠিসোটা ব্যবহার করায় বটতলা থেকে নতুন বাজার চৌরাস্তা পর্যন্ত পুরো এলাকায় রনক্ষেত্র তৈরী হয়। এসময় আতঙ্কিত মানুষজন দৌড়ে পালিয়ে যায় এবং দোকান পাট বন্ধ করে ব্যবসায়ীরা নিরাপদে চলে যান। এসময় বাঁধঘাটে অবস্থিত মোশারেফ হোসেন নামে একজনের ধানের আড়তে হামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১১জন নেতা কর্মী আহত হয়েছে। আহতরা হলো ফরহাদ ফকির (৩২), রাহাত ফকির (২৮), মিজানুর রহমান মোল্লা (৪৮), সাইফুল ইসলাম (৩৮), বায়েজিদ (৩০), আলী হোসেন (৩২) মো. ইছা (২৪), লিমন মৃধা (২৪), সামসুল হক চৌকিদার (৪৬), আলামিন ফকির (৩৪) ও বেল্লাল (৩১)। খবর পেয়ে আমতলী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। আহতদের প্রথমে আমতলী হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎষা শেষে প্রথম তালিকার ৮জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতার ও ৩ জনকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
সংঘর্ষের পরপরই আমতলী থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার শতাধিক বাস কাউন্টার দুপুরের পরপরই বন্ধ হয়ে যায়। গুরুতর আহত মিজানুর রহমান মোল্লা বলেন, আমি বিআরটিসি কাউন্টারের সামনে দাড়ানো ছিলাম এসময় সামসুল হক চৌকিদারের লোকজন এসে রামদা দিয়ে আমাকে কোপানো শুরু করেন।
এক গ্রুপের নেতা যুবদলের এক নম্বর সদস্য সাবেক কাউন্সলর ও সাবেক শ্রমিকদল সভাপতি সামসুল হক চৌকিদার অভিযোগ করে বলেন, ইউনিক কাউন্টার আমার। এ নিয়ে দুদফা সালিশ বৈঠকও হয়েছে। তারপরও শুক্রবার রাতে কবির ফকিরের লোকজন কাউন্টারের তালা ভেঙ্গে ল্যাপটপ এবং টিকেট নিয়ে যায়। শনিবার দুপুরের সময় তারা আবার কাউন্টার দখলে গেলে আমাদের লোকজন বাধা দেয় এ সময় তাদেও ৩জনকে কুপিয়ে জখম করে। তিনি আরো বলেন, রামদার কোপে আমার ডান হাতের একটি আঙ্গুলও কেটে গেছে।
যুবদল ও পৌর বিএনপির আহবায়ক কবির ফকির সামসুল হক চৌকিদারের আনা অভিযোগ অস্বীকার করে
বলেন, ইউনিক কাউন্টার আমাদের পক্ষের লোকজনের। আমাদের লোকজন কাউন্টার চালাচ্ছিল। শনিবার দুপুরে সামসুল হক চৌকিদার প্রায় দুই থেকে আড়াই শতাধিক ভাড়া করা সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ইউনিকসহ বিআরটিসি কাউন্টার দখল নিতে গেলে আমাদের লোকজন বাধা দেওয়ায় তাদের ৮জনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। তাদেরকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিততি নিয়ন্ত্রে আনেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এঘটনায় মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।