বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো নিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাবের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, ‘উনি মনে হয় ভুল করে বাংলাদেশের নাম বলে ফেলেছেন। আমার তো মনে হয় উনার দেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা প্রয়োজন, কেননা আপনারা দেখেছেন সেখানে সংখ্যালঘুদের (মুসলমানদের) কীভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে।’
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স মাল্টিপারপাস ট্রেনিং গ্রাউন্ডে ‘আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস ২০২৪’ উপলক্ষে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান। সোমবার বিধানসভা অধিবেশনে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনার সময় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণ এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রস্তাব দিলাম। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদি) বিবৃতি দিন। রাষ্ট্রসংঘের নজরে আনা হোক বিষয়টি। কেন্দ্র রাষ্ট্রসংঘের কাছে আবেদন করুক, শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর জন্য।’
বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব কোনো ধরনের হুমকির মধ্যে নেই জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘সীমান্তে উত্তেজনা নেই। সীমান্ত অন্যান্য সময়ের মতো স্বাভাবিক অবস্থায় আছে। তবে ভারতীয় মিডিয়া বাংলাদেশ সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বাংলাদেশের মিডিয়াকে সত্য খবর প্রকাশ করে ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের জবাব দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একটা দেশ অন্য দেশ নিয়ে কতটা নগ্ন ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করতে পারে ভারতীয় মিডিয়া এর উদাহরণ। আমরা যারা এই দেশে আছি সবাই একসঙ্গে এর প্রতিবাদ করবো।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভারত ইস্যুতে কোনো উদ্বেগজনক আশঙ্কা নেই। তারা যা করছে আপনারা (সাংবাদিকরা) এর প্রতিবাদ করবেন। সত্যি ঘটনা প্রকাশ করবেন।’
সকল রাজনৈতিক দলকে জাতীয় ঐকের ডাক দেওয়া হয়েছে, বিষয়টি কি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা যখন সবাই একসঙ্গে হব তখন অবশ্যই ইতিবাচক প্রভাব হবে। এতে করে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করবো, একসঙ্গে প্রতিবাদ করতে পারবো। এটা খুবই ভালো দিক।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সারাদেশে ৬২ হাজার ভলান্টিয়ার তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে। ইতোমধ্যে তারা ৫৫ হাজারের বেশি ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদস্যদের এককভাবে বন্যা, ভূমিকম্প ইত্যাদি দুর্যোগ মোকাবিলা করা দুরূহ। এক্ষেত্রে ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে তাদের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। বিশেষ করে ভূমিকম্পের মতো ভয়াবহ দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল স্তরে স্বেচ্ছাসেবক এবং তাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল।