ষ্টাফ রিপোর্টার:
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগষ্ট দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিলো স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুধু শেখ হাসিনা নয় তার দলের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দসহ অনেকে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন এবং অনেকে এখনও পর্যন্ত আত্মগোপনে রয়েছে। নারায়ণগঞ্জে বিগত ১৬ বছরে সবচেয়ে বেশী প্রভাব খাটিয়েছিলো ওসমান পরিবার। তাদের অপরাধের সা¤্রাজ্য ছিলো পুরো জেলা জুড়ে। এমন কোন সেক্টর বাদ ছিলনা তাদের কজ¦া থেকে। শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের নিয়ন্ত্রনে ছিলো জেলার ছাত্রলীগের রাজনীতি। আর সরকারী তোলারাম করেজের ভিপি ও মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ ছিলো অয়ন ওসমানের হাতিয়ার গুলোর মধ্যে অন্যতম একজন। ৫ আগষ্টের পর অয়ন ওসমানের নির্দেশে রিয়াদ তোলারাম কলেজের ভিতরে যে টর্চার সেল তৈরী করেছেন এবং সেখানে অনেক সাধারন মানুষকে নির্যাতন করেছেন তা নিয়েও লেখালেখি হয়েছিলো স্থানীয় গনমাধ্যমে। সেই হাবিবুর রহমান রিয়াদ ৫ আগষ্টের পর এলাকা হতে বোরকা পরিহিত অবস্থায় স্থানীয় স্বজনদের সহযোগিতায় এলাকা ছেড়েছেন তাও সকলের কাছে জানা। এরপর আর রিয়াদকে তার ফেসবুকে তেমনটি দেখা যায়নি। ৯ জানুয়ারী রিয়াদ তার ফেসবুক ভেরিফাইড পেজে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তার আক্ষেপ করে লিখেছেন:
“৫ তারিখে আগে ও পরেঃ
দল ক্ষমতাশীন থাকা অবস্থায় বিএনপির অনেকেই আওয়ামিলীগের কিছু বড় নেতাদের সাথে আত্মাত করে চলতো। তারা দল আওয়ামীলীগ করলেও বিএনপির লোকজনের সাথেই অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবসা বানিজ্য করত। তারা অনেকেই মিলেমিশে ব্যবসা করত,এমনকি জায়গার ব্যবসাও। এসব নেতারা পাড়া মহল্লা ভিত্তিক আওয়ামীলীগ বিএনপি লিয়াজু ম্যান্টেন করে চলছে…দলের কমান্ড ও আদর্শ নিয়ে সংগঠন করায় শুধুই ছাত্রলীগ কে বলি পাঠা বানানো হইছে। এর পিছনে অনেক ঘটনা আছে, সময় হলেই বলবো। যারা দলকে ব্যবহার করে ব্যবসা, বানিজ্য বাগিয়ে নিয়েছে সবচেয়ে বেশি ভেনিফিশিয়ারি হয়েছে,তারা অনেকেই বিএনপি সাথে মিল করে আরামে দিন কাটাচ্ছে। কারন একসময় তারাও বিএনপির কিছু নেতাকর্মীদের খেয়াল রাখতেন সেই প্রতিদান তারা পাচ্ছেন আর আমরা ঘরবাড়ি ছাড়া,পরিবার ছাড়া নিরাপত্তাহীন। আমরা কোন লিয়াজুর রাজনীতি করিনি তাই হয়তো আমাদের উপরে নির্যাতন। কিছু যারা সিনিয়র নেতা হিসেবে সব কিছুর ভেনিফিশিয়ারি হলেও তাদের নামে নারায়ণগঞ্জ এর কোন পত্রিকায় কোন নিউজ হয়নি,তারা অনলাইন,পত্রিকা তানভীর, জুয়েল ও বাবলা সাহেবদের কিনে ফেলেছেন। সাংবাদিক ভাইরা আমাদেরতো দেয়ার কিছুই নেই আমরা ছাত্র ছিলাম। ৫ তারিখের পর যুবদল ও বিএনপির যেসব নেতারা মাসদাইর বিসিক থেকে শুরু করে যে পরিমান অর্থ লুটপাট করে নিল আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন,ব্যবসায়ী নেতা মাসুদ ভাই ও হাতেম এই চাদাবাজির টাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তারাও এখন আপনাদের নেতা,এই অবিচার, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম না ধরে ছাত্র বয়সের ছেলেদের হাইলাইটস করেছেন কার ইশারায়? লুটপাটকারিদের বাচিয়ে দিয়েছেন,এত সহজ নয়! আমরা ছাত্রলীগ করছি তাই বলির পাঠা বানান বারে বারে। আমাদেরতো আপনাদের মত টাকা নাই মাসে মাসে যে সাংবাদিক সাহেবদের কিনতে পারবো! সাংবাদিক ভাইদের বলবো আপনারা কোন তথ্য যাচাই না করে অন্যদের বাচিয়ে দিয়ে আমাকে হাইলাইটস করেন এখানে কি আপনাদের মনে হয়না সত্যিকার যারা ক্ষতিকর সেই লোকদের আপনারা বাচালেন। এইভাবে দেশ ও সমাজকে আপনারা কিভাবে পরিবর্তন করবেন। অপরাধীরা আপনাদের আশ্রয়ে আশীন।
৫ তারিখ আমার বাসায় হামলা হয়েছে,এক যুবদল নেতা ও কিছু বিএনপি নেতা ভাংচুর করেছে,অত্যাচার, নির্যাতন, ২ ডজনের উপরে ভুয়া মামলার শিকার,আজ বললাম। নারায়ণগঞ্জে ছাত্রলীগের দীর্ঘসময় রাজনীতি জাতিরপিতার আদর্শ মেনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে নারায়ণগঞ্জ এর সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ সরকারি তোলারাম কলেজ এর ছাত্রছাত্রীদের প্রতিনিধি হিসেবে ১৫ বছর নেতৃত্ব দিয়েছি। এটাই কি আমার অপরাধ! আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করিনা। রাজনীতিতে বিভিন্ন দল মত থাকবেই, আমরা সংগঠন করেছি বিএনপিসহ অন্য দলের সাথে আমাদের রাজনৈতিক মতভেদ থাকতে পারে কিন্তু কারো সাথেই ব্যাক্তিগত কোন দ্বন্দ্ব ছিল না।যারা আজকেই এই ষড়যন্ত্র,লুটপাট পরিবর্তনকে পুজি করে আমাদের উপর আঘাত করেছেন,আমি আপনাদের অনেককে চিনি বা আপনাদের সাথে আমার কোন ব্যক্তিগত দ্বন্দ ও ছিলনা। সকলের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, সময় পরিবর্তনশীল, এই দেশ এ-ই নগরী আপনার আমার সকলের আমরা এমন কোন কাজ থেকে বিরত থাকব যাকি না আগামীতে বড় প্রশ্ন তদেরি করে। কিছু মানুষ তাদের চরিত্র কখনও বদলাতে পারে না,তাদের আপনি যাই বলেন। সবশেষ বলবো সময় আসবেই, আলো আসবেই”।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু