বন্দর প্রতিনিধি: বন্দরে গরুর হাটের জায়গা নিয়ে জজ মিয়া নাটকের সূচনা করতে চাচ্ছেন শিল্পপতি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন। ব্যাক্তিগত স্বার্থ পূর্বের ক্ষোভ হাসিলের জন্য বিশেষ কৌশল অবলম্বন করেছেন বলে এলাকাবাসীর দাবী।
সূত্র মতে, বন্দরের উত্তরাঞ্চল খ্যাত মদনপুর সন্ত্রাসী/ত্রাসী এলাকা হিসেবে জেলায় আলোচিত-সমালোচিত। যে অঞ্চলে কথার আগে চলে খুন। দেড়যুগে ২৫ টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটলেও অনেকের হদিসই এখনো মেলেনি। সেই অঞ্চলে নাসিক ২৭ নং ওর্য়াড ফুলহর গরুর হাটের জন্য জায়গার অনুমতি দেয় আনোয়ার হোসেন। এরপর থেকেই ৪/৫ টি গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থানে গিয়ে হৈচৈ -গালিগালাজসহ মহড়া চলে। বিষয়টি প্রশাসনসহ শিল্পপতি আলহাজ্ব এম জামাল উদ্দিনের দৃষ্টিতে আসে। সার্বিক দৃষ্টিতে জামাল উদ্দিন তার ভাই আনোয়ার হোসেনকে জায়গার বিষয়টি সরাসরি না দিতে বলে দেন এমনকি তার প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি ইনচার্জের মাধ্যমে অনাপত্তিপত্র উপজেলায় দিলেও মূল জায়গায় এখনো মূলা ঝুলিয়ে রাখছেন। সিটি কর্পোরেশনে এখনো কোন কাগজ দেয়নি। যা শাক দিয়ে মাছ ডাকার মতই। এ যেন ধরি মাছ, না ছুই পানি।
অবশেষে বির্তকের মুখে কোরাবানির পশুর হাটের অনুমতি দেওয়া জমির উপর হাট বসানোর ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে লিখিত আবেদন করেছেন জেলা জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি ফ্যাসিস্ট দোসর আনোয়ার হোসেন।
সোমবার ১২ মে দুপুরে বন্দর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে স্বশরীরে নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আপত্তি জানিয়ে লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন তিনি।
নিহাল টেক্সটাইল মিলস এর প্যাডে আবেদন করা ওই আপত্তি পত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে স্থাানীয় এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে ফুলহর মৌজায় আমার মালিকাধানী জায়গায় অস্থাায়ী কোরবানীর পশুর হাট বসানোর জন্য অনুমতি দিয়ে একটি অপত্তিপত্র দিয়েছিলাম তা আপনার কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে আমার জানা নেই। বর্তমানে বিভিন্ন পরিস্থিাতি বিবেচনা করে ও ব্যক্তিগত কারণে আমি এখন আর উক্ত জায়গায় পশুর হাট বসানোর অনুমতি দিতে ইচ্ছুক নই। তাই ফুলহর মৌজায় আমার মালিকাধীন জায়গায় পশুর হাট বসাতে অনুমতি না দেওয়ার জন্য সুমর্জি কামনা করছি।
এর আগে ৫ মে তিনি উক্ত স্থাানে হাট বসানের জন্য দেওয়া অনাপত্তি পত্রের ফটোকপি সংযুক্ত করেছেন। যেখানে তার মালিকাধীন জমির বিবরণী উল্লেখ করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মদনপুর ফুলহর এলাকায় বিএনপির একাধিক গ্রুপ উক্ত স্থাান গুলোতে কোরবানী পশুর হাট করার জন্য অনুমতি চেয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এবং বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পৃথক তিনটি আবেদন জমা দিয়েছেন।
এর আগে বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়ে ছিলেন যেসকল স্থাানে হাটের জন্য আবেদন এবং আপত্তিপত্র এসেছে তার সব গুলোই আমরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে প্রেরণ করেছি। সেখান থেকে আমাদের তদন্তের জন্য বলা হলে তদন্তের পর আমরা রিপোর্ট দিবো। তদন্তে শেষে বলা যাবে হাটের অনুমতি হবে কি হবে না।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বাজার কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২৭নং ওয়ার্ড এলাকার মদনপুর ফুলহর এলাকায় হাটের অনুমতি চেয়ে একটি আবেদন এসেছে। আমরা সিটি কর্পোরেশন থেকে হাটের জন্য আবেদিত কাগজপত্র জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রেরণ করার পর এই আবেদনটি এসেছে। ফলে আমরা সেটি আর প্রেরণ করতে পারিনি।
এদিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে স্থাানীয় সরকার শাখা খোঁজ নিলে তারা জানান, মদনপুর এলাকায় হাটের জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে দুটি স্থাানের আবেদন এসেছে। আমরা সেগুলো তদন্তের জন্য পুনরায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। সেখানকার সহকারী কমিশনা (ভূমি) এবং নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত করে রিপোর্ট দিবেন সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে হাটের অনুমোদন হবে কি হবেনা সেই সিদ্ধান্ত হবে।
এদিকে সোমবার বন্দর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, বিকেল পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে হাটের তদন্তের জন্য কোন কাগজ এখন পর্যন্ত এসে পৌছায়নি। তবে আনোয়ার হোসন নামের একজন ভূমির মালিক তার নিজস্ব জমিতে পশুর হাট বসানোর ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে লিখিত আবেদন দিয়ে গেছেন।