ষ্টাফ রিপোর্টার:
সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জের চলছে অপরাধীদের গ্রেফতারের জন্য “অপারেশন ডেভিল হান্ট” কার্যক্রম। ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। তার সাথে পালিয়ে যায় বিগত ১৭ বছরে দেশের অপরাধ জগতের হোতারা। সেই অপরাধীরা দেশের বাহিরে থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের যে নির্দেশনা দিচ্ছেন তা শুনেই দেশের প্রত্যন্ত স্থানে নানাবিধ অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্যান্য থানাগুলোতে ডেভিল হান্টের কার্যক্রম চোখে পড়ার মত হলে ব্যতিক্রম শুধুমাত্র ফতুল্লা থানাতে। এখানে আওয়ামীলীগের ডেভিলগুলো বিএনপির নেতাকর্মীদের আত্মীয়স্বজন হওয়ার সুবাদে সাধারন ক্ষমা পেয়ে গোপনে তারা তৈরী হচ্ছে অন্তবর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জন্য এমনটাই মনে করছেন শান্তিকামী সাধারন মানুষ।
একাধিক সুত্রে জানা যায় যে, অপারেশন ডেভিল হান্টের কার্যক্রম থেকে একেবারে মুক্ত রয়েছে মাসদাইর ও আশপাশ এলাকার আওয়ামী ডেভিলরা। বিগত ১৬ বছওে গডফাদার শামীম ওসমান সহ তার সঙ্গীদের পাশে থেকে ভুমিদস্যুতা,ঝুট সেক্টর ও চোরাই তেলের ব্যবসায়ীরা এখনও নিরাপদে নির্বিগ্নে রয়েছেন তাদেও স্বজনরা বিএনপি নেতা হওয়ার সুবাদে।
এনায়েতনগর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লিটন যিনি ছিলেন সাংসদ শামীম ওসমানের আস্থাভাজন। বিগত সময়ে বীরদর্পে থাকলেও বর্তমানে যে নিরবতা পালন করছেন তা নয়। বরং নারায়ণগঞ্জের গেম মেকার উপাধীপ্রাপ্ত চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মোহাম্মদ আলীর সুবাদে তিনি বর্তমানে একেবারেই নিরাপদ রয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার উপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা কয়েকটি মামলায় হাবিবুর রহমান লিটনও আসামী হয়েছেন। শুধুমাত্র চাচার সুবাদে মামলা আসামী এবং আওয়ামী ডেভিল হওয়ার পরও তিনি স্বাধীনভাবে প্রকাশ্যে চলাচল করছেন।
মতিউর রহমান মতি যিনি সাবেক সাংসদ ও গডফাদার শামীম ওসমানের আস্থাভাজন ভুমিদস্যু ছিলেন। এমপির কাছের লোক হওয়ার সুবাদে মাসদাইরসহ আশপাশ এলাকার নিরীহ মানুষের জমি দখল করতে জমির মালিককে ভুয়া অভিযোগে জেলে পালিয়ে জাল দলিলের মাধ্যমে উক্ত জমি দখল করে অন্যত্র বিক্রি করে এবং বিসিক,মাসদাইর চৌধুরী কমপ্লেক্স ও টাগারপাড় এলাকার বিভিন্ন গার্মেন্টস থেকে ঝুট নামিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে এখন তিনি শত কোটি টাকার মালিক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মাসদাইর কবরস্থান এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে হামলা চালিয়েও তিনি এখন প্রকাশ্যেই চলাচল করছেন। পাশাপাশি নিজ জমিতে বহুতল ভবনের নির্মান কাজও করছেন বাধাহীনভাবে। আওয়ামী এ ডেভিল অনেকটা নিরাপদে রয়েছেন ভাগিনা মশিউর রহমান রনির আর্শীবাদে। কারন রনি জেলা যুবদলের সদস্য সচিব।
এনায়েতনগর ইউপির ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার জাকারিয়া জাকিরও শামীম ওসমানের আরেক ঘনিষ্টজন। যিনি বিগত সময়ে ভুমিদস্যুতা ও ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রনে নিয়ে প্রায় শত কোটি টাকার মালিক বনেছেন।
যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান ওরফে বড় মিজান গাফফারগং। এরা সবাই শামীম ওসমানের ভুমিদস্যুতার আস্থাভাজন মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজামের বলয়ে থেকে বিসিকসহ মাসদাইর ও আশপাশ এলাকার ঝুট নিয়ন্ত্রক ছিলেন বলে জানান স্থানীয়রা। এ ঝুট নিয়ন্ত্রন নিয়েই নাকি সৈনিক লীগ নেতা মোকলেসুর রহমান মোকলেস হত্যা করে মিজান-গাফফারগং। এ নিয়ে হত্যা মামলা হলেও কয়েকদিন পর তা চুপসে পড়ে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন নস্যাৎ করতে বড় মিজানের নেতৃত্বে যুবলীগের ডেভিল সদস্যরা জুলাই-আগষ্টে মাসদাইর কবরস্থান এলাকায় দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উপর হামলার ঘটনাও ঘটায় মিজান-গাফফারগং। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় কর্তৃক ঘোষিত চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টের এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যেই পুর্বেও ন্যায় ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রন করছেন মিজান-গাফফারগং। পাশাপাশি গাফফার মাসদাইর কবরস্থান এলাকার আবদুল মোতালিব এন্টারপ্রাইজ নামক একটি ইট-বালুর দোকানেই প্রকাশ্যে বসে থাকেন নিয়মিত।
স্থানীয়দের দাবী,আওয়ামী দুঃশাসনামলে যুবলীগের এ ডেভিল মিজান-গাফফারদের ভয়ে আমরা কেউ কিছু বলতে সাহস পাইনি তাদের অপরাধের প্রতিবাদ করতে। যেখানে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্নস্থানে ডেভিলদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে সেখানে মাসদাইর ও আশপাশ এলাকার ডেভিলরা প্রকাশ্যেই পুর্বের ন্যায় যার যার কর্ম নিয়ে ব্যস্ত। তারা আরও বলেন,বড় মিজান হচ্ছেন ছাত্রদল নেতা ইয়াসিন আরাফাতের শশুর। যার ফলে ১৭ বছরে ব্যাপক অপরাধ করার পরও জামাতার কারনে নিশ্চিন্তে নিরাপদে আয়েশী জীবন যাপন করছেন শশুর বড় মিজানসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা। জামাতার সুবাদে মামলাযুক্ত রয়েছেন শশুর মিজান।
সিফাত যিনি ছাত্রদল নেতা ইয়াসির আরাফাতের ছোট ভাই এবং সাবেক ছাত্রলীগের ডেভিল রিয়াদ রাফেলের অন্যতম সহযোগি। অয়ন ওসমানের নির্দেশে যাবতীয় অপরাধের মাষ্টারমাইন্ড রিয়াদ-রাফেল গ্রুপের অন্যতম সদস্য সিফাত বর্তমানেও দূর্দান্ত প্রতাপের সাথে চলাচল করছেন ভাই আরাফাত ও মামা মশিউর রহমান রনির কারনে। বিগত সময়ে বর্তমানে অনেকটা বেপরোয়াভাবে চলাচল করছে এ সিফাত। মাসদাইর কবরস্থান ও আশপাশ এলাকায় সিফাত যেন একটি আতংকের নামে পরিনত হয়েছে বর্তমানে। রিয়াদ-রাফেলের সময়ে যাদের নিয়ে অপকর্ম করে বেড়াতো বর্তমানেও তাদেরকে নিয়েই পুর্বের মতই আতংক ছড়াচ্ছে এ সিফাত। শুধুমাত্র বড়ভাই ও মামার আর্শীবাদেই নাকি প্রকাশ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের এ ডেভিল সিফাত।
তারা দেশের প্রশাসনের কাছে জানতে চান যে,অপরাধ করার পর সে যদি কোন নেতার স্বজন হয়ে থাকে তাহলে তার পুর্বের অপরাধগুলো ক্ষমার যোগ্য হয়ে যায়। নিশ্চই না ? যদি আইন সবার জন্য সমান হয়ে থাকে তাহলে আওয়ামী ডেভিল-লিটন-মতি-মিজান-জাকির-গাফফার-সিফাতগং কেনই এতটা নিরাপদে রয়েছে তার উত্তরটুকু আমরা প্রশাসনের কাছে চাই। আমরা চাই অপারেশন ডেভিল হান্টে এ সকল আওয়ামী ডেভিলদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করা হোক।