স্টাফ রিপোর্টার ( ) নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা থানার আওতাধীন কুতুবপুর ইউনিয়নের টাওয়ার পাড় এলাকায় প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে ‘লাকি কুপন। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিটি হাট-বাজার ও গ্রামের অলিগলিতে বিক্রি হচ্ছে এসব টিকিট। রাতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে র্যাফেল ড্র, সেখানে দেওয়া হচ্ছে ৩৭টি পুরস্কার। অর্ধ শতাধিক প্রচার গাড়ির মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে টিকিট। প্রতিটি টিকিটের মূল্য ২০ টাকা। একেকটি গাড়িতে বিক্রি হচ্ছে ৫’শ থেকে এক হাজার টিকিট। এই হিসাবে প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ লক্ষ্য টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র।
জানা যায় দেলপাড়া এলাকার বাসিন্দা কুখ্যাত জুয়ারি জব্বর মোল্লা, জুয়ারি বরিশাইল্লা জাফর, কুতুবপুর ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম তেলার বড় ভাই রফিক ও তার সহযোগী রুবেল সহ কিছু নামধারী বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে এই র্যাফেল ড্র এর নামে জুয়াটি চলছে।
২৫ এপ্রিল থেকে কুতুবপুর ইউনিয়নের টাওয়ার পাড় এলাকায় অবৈধ মেলা বসিয়ে হচ্ছে দৈনিক বন্ধু র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠান। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেলা শুরুর পর থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার টিকিট কিনছেন নিম্ন আয়ের লোকজন। ফলে লোভে পড়ে অনেকেই হচ্ছেন সর্বস্বান্ত।
শনিবার রাতে সরেজমিন কুতুবপুর ইউনিয়নের টাওয়ার পাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একটি বিশাল বড় বালুর মাঠে প্যান্ডেল তৈরি করে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কুপন বিক্রির কার্যক্রম। তার আশেপাশে রয়েছে বিভিন্ন রকমের দোকান দিয়ে মেলার আয়োজন। কিন্তু লাকি কুপনের ব্যানারে লেখা রয়েছে, দৈনিক বন্ধু র্যাফেল ড্র।মাঠের চারপাশে ও রাস্তায় টেবিলে-টেবিলে বিক্রি হচ্ছিল টিকিটগুলো। পাঁচ’টি পৃথক রঙের টিকিট থাকায় একেকজন টিকিট কিনছিলেন কয়েক ডজন করে। টিকিটের একটি অংশ নিজের কাছে রেখে অপর একটি অংশে নাম ও মোবাইল নম্বর লিখে নির্ধারিত বাক্সে ফেলছিলেন ক্রেতারা। কথা হয় টিকিট কিনতে আসা টাওয়ার পাড় এলাকার বাসিন্দা একজন দিনমজুরের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের এলাকার এই মেলায় লটারি আসছে এখান থেকে টিকিট কিনলে নাকি ফ্রিজ, টিভিসহ দামী দামী জিনিস পাওয়া যায় তাই শত শত টাকার টিকিট কিনছি। তবে এখন পর্যন্ত এই দুইদিনে কোনো পুরস্কার পাই নাই। কিছু না পাইলে কেনো কিনছেন এত টাকার টিকিট এই প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, দেখি যদি ভাগ্যে থাকে, পাইতেও পারি। এজন্য কিছু টাকা খরচ হলে হোক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেলা আসা একজন যুবক বলেন, অনেক সময় দামী পুরস্কার গুলো পাওয়া টিকিটের পেছনে থাকা মোবাইল নম্বর ভুল আছে তাই টিকিটের মালিক’কে পাওয়া যাচ্ছে না এমন কৌশল করে নিজের কাছেই রেখে দেয়। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিটি হাট-বাজার ও গ্রামের অলিগলিসহ বিভিন্ন স্থানে রিকশার মাধ্যমে মেলা মেলা ওঠাও বাচ্চা যদি লাইগ্যা যায় এ রকম আকর্ষণীয় মাইকিংয়ে প্রচার করে বিক্রি করা হচ্ছে হরেক রকমের রঙিন লটারির টিকিট।
এই বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা কোনো মেলার অনুমোদন দেয়নি। যদি কেউ অবৈধ মেলা বসিয়ে থাকে তাহলে আমরা দ্রুত এর ব্যবস্থা নিবো।
একই বিষয়ে ফতুল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ শরিফুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, মেলা অনুমোদন দেয় ডিসি মহোদয় তবে যারা মেলা চালাচ্ছে তারা নাকি ডিসি মহোদয়ের নিকট থেকে অনুমোদন নিয়েছে এমন একটা কাগজ তারা আমাকে দিয়েছে তা সত্য নাকি মিথ্যা জানিনা।