ষ্টাফ রিপোর্টার:
সিদ্ধিরগঞ্জে নিষিদ্ধ আ.লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী ও কিশোরগ্যাং লিডার পানি আকতারের সহযোগী সাকিব হোসেন অভি ছাত্রদল নেতা পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীদের গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন।
জানা যায়, আদমজীর নতুন বাজার মার্কেটে চাঁদাবাজি ও মার্কেট ম্যানেজারকে মারধর করে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ কর্মী ও বর্তমানে ওয়ার্ড ছাত্রদল নেতা পরিচয়দানকারী সাকিব হোসেন অভি ও নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত সাকিব নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের আদমজী বিহারী ক্যাম্পের মাদক ব্যবসায়ী টন বাবলার ছেলে। চাঁদাবাজি ও মারধরের ঘটনায় ছাত্রলীগ কর্মী সাকিব সহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন মার্কেট ম্যানেজার সবুজ। শনিবার (১০ মে) দুপুরে সাকিব সহ ০৫ জনকে আসামি ও অজ্ঞাত আরও ১২/১৫ জনকে আসামি করে অভিযোগটি দায়ের করেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের এসওরোড এলাকার শ্রমিকলীগ নেতা আশরাফ উদ্দিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোঃ সালাউদ্দিন (৪৯), পিতা-মৃত সিদ্দিক, আশরাফের আরেক সহযোগী যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব @ হাবিব মন্ডল (৪৮), পিতা-ইদ্রিস মন্ডল, আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের সহযোগী মোঃ কিবরিয়া (৫৬), পিতা-গোলাম রহমান, ছাত্রদল নেতা মোঃ সাকিব (২৪), পিতা-বাবলা, কদমতলী এলাকার মোঃ বজলুর রহমান (৫৫), পিতা-মৃত মোঃ ফজলুল হক সহ অজ্ঞাতনামা আরো ১২/১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগটি দায়ের করা হয়। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিবাদীরা অত্র এলাকার উগ্র, বদমেজাজী, মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ প্রকৃতির লোক। বিবাদীরা আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকার সময়কালে এলাকার মানুষদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করিয়া আসিতেছিল এবং চাঁদাবাজী করিয়া বেড়াইতো। কেহ তাহাদের কথামতো চাঁদা না দিলে তাহাদের মারধর করতঃ বিভিন্নভাবে ক্ষয়ক্ষতি সাধণ করিত। আমি পেশায় একজন চাকুরীজীবি। আমি নতুন বাজার মিথিলা মার্কেটের ম্যানেজার হিসেবে চাকুরী করিয়া আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করিয়া আসিতেছি। উক্ত মার্কেটটি সরকার কর্তৃক লিজ গ্রহণ করিয়া এবং নিজস্ব ক্রয়কৃত জমিতে কর্তৃপক্ষ মার্কেটটি মাসিক ভাড়ায় দোকান ভাড়া দিয়া পরিচালনা করিয়া আসিতেছে। প্রতি মাসের ন্যায় ৯ মে শুক্রবার সন্ধ্যায় মার্কেটে আমি দোকানদারদের নিকট হইতে মাসিক ভাড়া আদায়কালে বিবাদীরা বেআইনী জনতাবদ্ধে দেশীয় অস্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত হইয়া আমার গতিরোধ করিয়া ভাড়া আদায়ে বাঁধা প্রদান করে এবং আমার নিকট মাসিক ৬০,০০০/- (ষাট হাজার) টাকা করিয়া চাঁদা দাবি করে অন্যথায় আমাদেরকে মার্কেট পরিচালনা করিতে দিবে না বলিয়া জানায় এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালজ করতঃ বিভিন্ন প্রকার হুমকী ধামকী প্রদান করিতে থাকে। আমি তাহাদেরকে গালিগালাজ করিতে নিষেধ করিলে বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হইয়া আমাকে এলোপাথারী মারধর করিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করিতে থাকে। তখন আমি ডাক-চিৎকার করিতে থাকিলে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আগাইয়া আসিতে থাকিলে বিবাদীরা আমার নিকট থাকা ভাড়া উত্তোলনকৃত নগদ ৬৮,৩০০/- (আটষট্টি হাজার তিনশত) টাকা নিয়া নেয় এবং তাহাদের দাবিকৃত টাকা না দিলে আমার বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি করিবে ও প্রাণে মারিয়া ফেলিবে মর্মে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকী প্রদান করিয়া ঘটনাস্থল হইতে চলিয়া যায়।
নাসিক ৬নং ওয়ার্ডবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ০৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ পতনের পর কিশোর গ্যাং লিডার সন্ত্রাসী পানি আক্তারের সহযোগী সাকিব ছাত্রলীগ কর্মী থেকে হঠাৎ ছাত্রদল নেতা বনে যান। গত ০৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও বিহারি ক্যাম্পের ফুটপাত থেকে সাকিব নিয়মিত চাঁদা আদায় করে বলে অভিযোগ করেন ক্যাম্পের ব্যবসায়ীরা। গত শুক্রবার আদমজীর ফুটপাত থেকে চাঁদা আদায় করতে গেলে ব্যবসায়ীদের গণধোলাইয়ের স্বীকার হন সাকিব। এ ঘটনাকে বিএনপি নেতা আসলাম ও সিরাজ মন্ডলের সমন্ধী কিবরিয়ার কুবুদ্ধিতে ভিন্ন খাতে নিয়ে নিজের চাঁদাবাজি ঢাকার চেষ্টা করছে সাকিব। প্রশাসন সঠিকভাবে তদন্ত করলেই ছাত্রলীগ কর্মী সাকিবের চাঁদাবাজির বিষয়টি বের হয়ে আসবে।
এবিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীনুর আলম জানান, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। ঘটনার সত্যতা মিললে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।