এ যেনো স্বাধীন দেশে এক টুকরো পাকিস্তান।স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকেই হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের জমি জোরপূর্বক দখল করে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে একটি চক্র।বলছিলাম নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানার কাচঁপুর ইউনিয়নের ললাটি নামক এলাকার একটি ভূমিদস্যু ও জামাত শিবির পরিবারের কথা। স্থানীয় এলাকাবাসী জানান,ললাটি এলাকার আঃ মজিদের তিন ছেলে শফিকুর রহমান,আতিকুর রহমান,আনিসুর রহমান ও জামাত শিবিরের নেতা ও বিএনপির জ্বালাও পোড়াও মামলার অন্যতম আসামী আঃ রশিদের ছেলে রাশেদুল মামুন নিজস্ব বাহিনী তৈরী করে ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের জমি জোরপূর্বক দখল করে অন্যত্র বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে।তাদের এসব অপকর্মে বাঁধা দেয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ী মনির হোসেন ও মুক্তিযুদ্ধার সন্তান ও আব্দুল গাফফারের স্ত্রী আয়েশা আক্তার লাকিকে পিটিয়ে আহত করে। ওই ঘটনায় মামলাও হয়।
এলাকাবাসী আরও জানান,২০১৩ সালে হেফাজতের তান্ডবের সময় ৬ ফেব্রুয়ারী ললাটি এলাকার আঃ রশিদের ছেলে জামাত শিবির নেতা রাশেদুল মামুনের সহযোগী দেলোয়ারের বাড়ী থেকে বোমা উদ্ধার করে পুলিশ।সেই ঘটনায় রাশেদুল মামুনের নামে মামলা হলে দীর্ঘদিন পলাতক থেকে আবারো এলাকায় এসে তান্ডব চালায় মামুন বাহিনী।ললাটি এলাকায় ব্যবসা করতে গেলে হাসানউদ্দীন,সাইফুল ইসলাম,হুমায়ুন কবির, মনির হোসেন,মো: হোসেন ও মনির খান সহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের হয়রানী সহ তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করছে মামুন বাহিনী।তাছাড়া রাশেদুল মামুন ও তার মামা আতিকুর বাহিনী ললাটি জনতা বাজার এলাকার আক্তার মাষ্টারের ৩২ শতাংশ জমি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে। গত এক সপ্তাহ আগে ললাটি এলাকায় অবস্থিত নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ীর কয়েল কারখানায় গিয়ে মামুন ও তার লোকজন চাঁদা দাবি করে।এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ হলে এসআই মেহেদী হাসান খান ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেন এবং মামুনকে সাবধান করেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মনির হোসেন জানান,জামাত শিবিরের নেতা রাশেদুল মামুন ও তার পরিবার এলাকায় ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি গুলো ভুয়া দলিল ও কাগজপত্র তৈরী করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে দেয়।তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই আমাদের ওপর হামলা করে এমনকি বিভিন্ন সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে অপপ্রচার করে।তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে কয়েক বছর আগে তাদের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়,পুলিশ সুপার ও র্যাব-১১ তে লিখিত অভিযোগ করেছিলাম।তখন তারা দীর্ঘদিন পলাতক ছিলো।এমনকি রাশেদুল মামুনের মাদ্রাসায় জঙ্গিদের গোপন বৈঠককের খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাব সেখানে অভিযান চালিয়েছিলো।কিন্তু তখন তারা সুযোগ বুঝে পালিয়ে যায়।তাদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। আমরা এলাকাবাসী এই মামুন বাহিনীর হাত থেকে মুক্তি চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাশেদুল মামুন বলেন,তারা আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।আমরা কোন ভূমিদস্যু না।তবে বিএনপি জ্বালাও পোড়াও মামলার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি সেটাকে ষড়যন্ত্র বলে দাবী করেন।
কাচঁপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন,এই বাহিনীর বিভিন্ন অপকর্মের কথা শুনেছি।তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এসএম কামরুজ্জামান বলেন”ভুক্তভোগীরা এমন কোন বাহিনীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান,এমন ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।