সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সমালোচনা করে বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক প্রেসসচিব এবং সাংবাদিক ও লেখক মারুফ কামাল খান বলেছেন, নিজের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে আর্মি, পুলিশ, বিডিআর, আনসার, র্যাব, আমলা, ব্যবসায়ী, বিচারক, পেশাজীবী, শিল্পী, দলীয় গুন্ডা সবাইকে সে ব্যবহার করেছে। লোভ-টোপ দিয়ে এবং সুযোগ-সুবিধা বিলিয়ে ওদের দিয়ে এমন কোনো খারাপ কাজ নাই যা সে করায় নাই। ওদেরকে ব্লাফ দিতো, আমার হাতে যাদু আছে। আমাকে কেউ ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে না। বলতো, হাসিনা কখনো পালায় না।
রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেন।
মারুফ কামাল বলেন, ৪১টি বড় সুটকেস ভরা ডলার নিয়ে নিজের বোনকে সঙ্গে করে উড়োজাহাজে চড়ে উড়ে পালালো ইন্ডিয়ায়। কারো কথা ভাবলো না, কাউকে আভাস দিয়েও গেল না। কেবল নিজের পরিবার ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের বিদেশে নিরাপদে সরিয়ে দিয়েছে। এই স্বার্থপর, ফ্যাসিস্ট, খুনি, ভোট ডাকাত, দখলবাজ, লুটেরা, বিকারগ্রস্ত নারী এখন আবার উসকাচ্ছে ওর ফেলে যাওয়া দোসরদের। নিজের মামলা ও বিচারের আয়োজনে ভয় পেয়ে সে এখন পরিস্থিতি অস্থির করতে চায়।
খালেদা জিয়ার সাবেক এই প্রেসচিব বলেন, হাসিনা আগে বলতো ‘একদিনও শান্তিতে থাকতে দেব না।’ এখনো ভারতে বসে অশান্তি সৃষ্টি করতে চায় দেশে। রক্ত ঝরাতে চায়। ওর দেহে প্রাণ থাকা পর্যন্ত রক্তের পিপাসা মিটবে না।
তিনি আরও বলেন, সবাই পালিয়ে যাওয়া এই স্বার্থপরের ওপর ক্ষুব্ধ। কৈফিয়ৎ চাইবে সবাই, কেন সবাইকে অরক্ষিত অবস্থায় ফেলে রেখে সে নিজের নিরাপত্তাটুকুর কথা শুধু ভাবলো?
সে সুযোগ না দেওয়ার জন্য ফ্যাসিস্ট, ভণ্ড, প্রতারক, অভিনেত্রী হাসিনা আবারো মুক্তিযুদ্ধ, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের হাস্যকর বুলি আওড়ে দোসরদের উসকাচ্ছে। এই ডাইনি, পেত্নী,পিশাচ ও ভূতের মুখে রাম নাম শুনে আবার প্রতারিত হবে, নিজেকে বিপদগ্রস্ত করবে এমন গর্দভ কজন আছে?
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই সেখানেই আছেন তিনি। ভারতে থাকা অবস্থায় হাসিনার একের পর এক ফোনালাপ ফাঁস হচ্ছে।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম ক্ষমতায় আসার পর হাসিনার আরেকটি অডিও কল সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দলের নেতাকর্মীদের দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের ছবি ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা ব্যবহার করে মিছিল-সমাবেশের মাধ্যমে সেই ছবি ও প্ল্যাকার্ড ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার নির্দেশ দেন তিনি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেগুলো ভাঙচুর ও অবমাননার ফুটেজ সংগ্রহের নির্দেশনাও দেন হাসিনা।
হাসিনার নির্দেশ মতে, আওয়ামী লীগ আজ রোববার রাজধানীর জিরো পয়েন্টে অবস্থানের ঘোষণা দেয়। কিন্তু তার আগেই শনিবার রাতেই ওই এলাকা দখলে নেয় ছাত্র-জনতা।
বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের সুসম্পর্ক বিনষ্টের অপচেষ্টার অংশ হিসেবে সাবেক এই স্বৈরশাসকের এমন অপতৎপরতায় ক্ষুব্ধ দেশবাসী।
যদিও আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এখনো দলটি সফলভাবে কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। এর আগে ১৫ আগস্ট, জেল হত্যা দিবসের মতো দিনগুলো নেতাকর্মীদের পালনের আহ্বান জানালেও তাতে খুব একটা সাড়া মেলেনি।
যুগান্তর