নির্বাচনী হলফনামায়ও ৫৫ গুণ সম্পদ বৃদ্ধির তথ্য
একসময় ঢাকা সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে দাঁড়িয়ে শোচনীয় পরাজয় বরণ করেন অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। তবে এর প্রায় দেড় দশক পর এই কামরুলই আওয়ামী লীগের মনোনয়নে টানা চারবার এমপি ও দুই মেয়াদে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। এমপি-মন্ত্রী হয়েই বেপরোয়া দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়ান তিনি। গত ১৫ বছরে দুর্নীতি-লুটপাটের মাধ্যমে বিপুল অর্থসম্পদের মালিক বনে যান। তাঁর নিজের নামে রাজধানীতে রয়েছে একাধিক বাড়ি, ফ্ল্যাট ও বেশ কয়েক কাঠা জমি। নিজ নামে ও সন্তানদের নামে দেশ-বিদেশে গড়েছেন অঢেল সম্পদের পাহাড়ও। পাচার করেছেন বিপুল অর্থ।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য। গত সোমবার রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে যে কয়েকজন বেপরোয়া এমপি-মন্ত্রী ছিলেন, তাদের অন্যতম এই কামরুল। তিনি এতটাই বেপরোয়া ছিলেন, প্রায় সময়ই তাঁর ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও বেপরোয়া বক্তব্য এবং অতিকথন জনমনে বিরক্তি তৈরি করেছে। বিরোধী দল ও মত দমনের ‘মহাস্ত্র’ হিসেবে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। আইন প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে নিম্ন আদালতে অধিকাংশ কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি-অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নিতেন। আবার খাদ্যমন্ত্রী থাকাকালে ব্রাজিল থেকে ‘পচা গম’ কিনে আত্মসাৎ করেন সরকারের কয়েকশ কোটি টাকা। সেই সময় তাঁর নামকে বিকৃত করে ‘গমরুল’ উপাধি দেওয়া হয়।
এ ছাড়া ক্ষমতায় থাকতে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম ও মামলা-হামলায় ইন্ধনের অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। মন্ত্রী-এমপি হয়েই হঠাৎ তাঁর নামের আগে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ লেখা নিয়েও রয়েছে গুরুতর প্রশ্ন।
যেভাবে উত্থান কামরুলের
১৯৬৯ সালে ছাত্রলীগ ও ১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি। পর্যায়ক্রমে অবিভক্ত ঢাকা মহানগর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান তিনি। সেই সময় অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের পুরান ঢাকার লালবাগ থেকে ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে দাঁড়িয়ে শোচনীয় পরাজয় ঘটে।
ওয়ান-ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গ্রেপ্তার হলে সুচতুর কামরুল অনেকটা ‘কৌশলী ভূমিকা’ নিয়ে দলীয় নীতিনির্ধারক নেতাদের নজরে আসেন। বিশেষ করে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার হাজিরার দিনগুলোতে আদালতে হাজির হয়ে দলীয় প্রধানের বিশেষ দৃষ্টি কাড়েন। এতেই তাঁর কপাল খুলে যায়। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-২ আসন থেকে তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়ে যান। অবশ্য দলীয় প্রার্থী ঘোষণার দিন শেখ হাসিনার ধানমন্ডির বাসভবন সুধাসদনের সামনে ‘বিতর্কিত কাউকে কাউকে দলীয় মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার’ অভিযোগে দলীয় নেতাকর্মীর হাতে চরম লাঞ্ছিত হন কামরুল।
২০০৮ সালের নির্বাচনে ঢাকা-২ আসনে জিতে আওয়ামী লীগ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। পরে ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনেও অনায়াসে জিতে যান। এই সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে প্রথমে সদস্য ও পরে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হলে দলের মধ্যে তাঁর প্রভাব আরও বেড়ে যায়।
আইন প্রতিমন্ত্রী হয়েই দুর্নীতি–লুটপাট
২০০৯-১৪ মেয়াদে কামরুল যখন আইন প্রতিমন্ত্রী, তখন আইনমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। সে সময় সাব-রেজিস্ট্রার নিয়োগ-বদলি, সরকারি পিপি-জিপি নিয়োগ ও কাজি নিয়োগ, বদলি এবং পদোন্নতি সবই হয়েছে কামরুলের কথায়। সাব-রেজিস্ট্রারদের দুর্নীতিরোধে মন্ত্রী ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও প্রতিমন্ত্রীর কারণে কার্যকর করতে পারেননি। এ নিয়ে একাধিকবার উষ্মা প্রকাশ করেন শফিক আহমেদ। এ ছাড়া আইন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে সরকার গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, বিচার বিভাগ ও উচ্চ আদালতের কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করেছেন। সে সময় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে নানা বিতর্কিত মন্তব্যে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
কামরুল থেকে ‘গমরুল’
২০১৪ সালের নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ সরকারের পূর্ণমন্ত্রী ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে পড়েন কামরুল। সে সময় প্রায়ই নিয়োগ, বদলি ও খাদ্য আমদানিসহ নানা কাজে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।
২০১৫ সালের জুনে ব্রাজিল থেকে ৪০০ কোটি টাকা মূল্যের দুই লাখ টন পচা গম আমদানির ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এই গম চট্টগ্রাম বন্দরে পরীক্ষার সময়ই গলদ ধরা পড়ায় আটকে যায়। কিন্তু খাদ্য অধিদপ্তরের নীতিনির্ধারকদের চাপে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এসব গম ছাড় দেওয়া হয়। পরে পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার রেশনের জন্য পাঠানো হলে তারাও এসব গম খাওয়ার অযোগ্য জানিয়ে ফেরত নিতে খাদ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানায়। কিন্তু মন্ত্রণালয় সাড়া না দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে বিষয়টি জানায় পুলিশ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) খাদ্যবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের নমুনা পরীক্ষায় আমদানিকৃত গম নিম্নমানের বলে প্রমাণ হয়। এ নিয়ে একটি পত্রিকায় কামরুলকে নিয়ে কার্টুন প্রকাশ করলে ব্যাপক আলোচিত হয়। আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সব মহলে তাঁর নাম ‘গমরুল’ হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ছাড়া খাদ্যমন্ত্রী থাকাকালেও বিএনপিসহ বিরোধী জোটের বিরুদ্ধে নানা সময়ে তিরস্কার ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে কামরুল আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন।
যত সম্পদ এই সাবেক খাদ্যমন্ত্রীর
গত সোমবার গ্রেপ্তারের আগেই ১৪ অক্টোবর সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আইন প্রতিমন্ত্রী এবং ঢাকা-২ আসনের সাবেক এমপি কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তথ্যানুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের এই অনুসন্ধান ও সমকালের কাছে থাকা তথ্য বলছে, কামরুল ইসলাম নিজের এবং স্ত্রী-সন্তানদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন। তার নিজ নামে রাজধানীর ৪৮/১ নম্বর আজগর লেনে চারতলা বাড়ি নির্মাণ, মিরপুর আবাসিক এলাকায় দুটি ফ্ল্যাট, নিজ নামে মিরপুর হাউজিং এস্টেটে ৪ কাঠা জমি, নিউ টাউনে ১০ কাঠা জমি এবং তার দুটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি রয়েছে। তিনি ও তাঁর অন্য আত্মীয়স্বজনের নামে-বেনামে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রচুর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন।
কামরুলের বিরুদ্ধে বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের অভিযোগও দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হয়েছে। এই কারণে দুদক তাঁর দুর্নীতির প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান সংস্থাটির কর্মকর্তারা।
মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন
২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেন কামরুল ইসলাম। তবে তাঁর এই পরিচয় নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। উইকিপিডিয়াসহ বিভিন্ন গ্রন্থে প্রকাশিত তথ্য বলছে– মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ঢাকায় শান্তি কমিটি গঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা ও নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক হাকিম হাফেজ আজিজুল ইসলাম ছিলেন কামরুলের বড় ভাই। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি তাঁর ভাইয়ের মালিকানাধীন প্রিন্টিং প্রেসে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। সে সময় মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ‘ইবলিশের দিনলিপি’ নামে সাপ্তাহিক বিশেষ সম্পাদকীয় প্রকাশ করতেন তিনি। যুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রমাণও নেই। অথচ তিনি মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হয়ে ভাতাও পেতেন।
নির্বাচনী হলফনামায় সম্পদ বৃদ্ধি ৫৫ গুণ
ঢাকা-২ আসনের চারবারের এমপি কামরুল গত নির্বাচনের আগে দেওয়া হলফনামায় তাঁর অর্থসম্পদের যে তথ্য দিয়েছিলেন, সেখানেই ১৫ বছরে বিপুল পরিমাণ সম্পদ ও আয় বৃদ্ধির কথা স্বীকার করেন। তাঁর চারটি নির্বাচনের হলফনামা বিশ্লেষণ করেও এমন তথ্যের সত্যতা মিলেছে।
দেখা গেছে, ২০০৮ সালে নবম জাতীয় নির্বাচনের আগে কামরুলের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। ২০২৪ সালে এসে সেটা দাঁড়ায় ৪ কোটি ৬৯ লাখ ৪৭ হাজার ৪১১ টাকা। অর্থাৎ ১৫ বছরে তাঁর অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে প্রায় ৫৫ গুণ। আবার প্রথমবার এমপি হওয়ার সময় তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। ২০২৪-এ এসে সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ৩১ লাখ টাকার বেশি। অর্থাৎ ১৫ বছরের ব্যবধানে তাঁর আয় বেড়েছে ২৮ গুণ। অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া, আইন পেশা, ব্যাংক সুদ, টেলিভিশনের টকশো, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানি থেকে তাঁর এই আয় হয় বলে হলফনামায় উল্লেখ করেন তিনি।
প্রথমবার এমপি হওয়ার আগে কামরুলের কোনো গাড়ি ছিল না। এখন তাঁর দুটি টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি রয়েছে। গত নির্বাচনের আগে দাখিল করা হলফনামায় গাড়ি দুটির দাম উল্লেখ করা হয়েছে ১ কোটি ৪৮ লাখ ৬০ হাজার ৪৬২ টাকা। এর মধ্যে একটি গাড়ির মালিক হন ২০১৮ সালের আগে, যা একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় হলফনামায় উল্লেখ করেছিলেন।
এ ছাড়া ১৫ বছর আগে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কামরুলের ছিল ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা আর তাঁর স্ত্রীর নামে ছিল ১০ হাজার টাকা। বর্তমানে সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি টাকার বেশি।
কামরুলের সাঙ্গোপাঙ্গরা এলাকাছাড়া
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, কামরুল ইসলাম গ্রেপ্তারের আগে থেকেই তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে স্কুলছাত্র জিহাদ হোসেন নিহত হওয়ার ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় কামরুলসহ ১১৮ জন ও অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর থেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সাবেক এই মন্ত্রীর সহযোগীরা।
সূত্র মতে, বিগত সরকারের সময় কামরুলের প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচনী এলাকা কেরানীগঞ্জ, সাভার, হেমায়েতপুর, ভাকুর্তা, হেমায়েতপুর ও আমিনবাজারে আধিপত্য বিস্তার করতেন ঢাকা জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সফিউল আযম খান বারকু, কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউসুফ আলী চৌধুরী সেলিম, সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন বিপ্লব, কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মনির হোসেন মনির, শাক্তা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব, কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবু সিদ্দিক ও আইকে শাহীনসহ অনেকেই। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কামরুলসহ তাঁর সহযোগীরা আত্মগোপনে চলে যান।
অভিযোগ রয়েছে, কামরুলের প্রভাব খাটিয়ে এসব নেতা পৃথকভাবে উপজেলার টিআর, কাবিখা ও এডিবির কাজের ওয়ান পার্সেন্ট ভাগবাটোয়ারা করে লুটপাট, মধুসিটি হাউজিং কোম্পানি খুলে ব্যবসা, কোরবানির সময় কেরানীগঞ্জের সর্ববৃহৎ পশুর হাট হজরতপুর (পারাগ্রাম) বাজারসহ ১০-১৫টি হাট গোপনে টেন্ডার দিয়ে লুটপাট, সরকারি বরাদ্দের অর্থ লুটপাট, কালীগঙ্গা নদী থেকে সরকারি বালু উত্তোলনের নামে কোটি টাকা ভাগবাটোয়ারার অভিযোগ রয়েছে। কামরুলের পেটোয়া বাহিনীর কাছে কেরানীগঞ্জের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিল। সম্প্রতি পেটোয়া বাহিনীর সদস্য আবু সিদ্দিক, কামরু ইসলাম কামু ও মোহাম্মদ পিনু পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন।
আট দিনের রিমান্ডে, সালাম দেওয়ায় নাজিরের কার্যালয় ভাঙচুর
গতকাল মঙ্গলবার কামরুল ইসলামকে আট দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ নিহতের ঘটনায় এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত।
এদিকে, দুপুরে রিমান্ড শুনানির সময় সাবেক মন্ত্রী কামরুলকে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময়ের জেরে ঢাকা মহানগর আদালতের নাজির শাহ মামুনের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
রিমান্ড শুনানির সময় কামরুল ইসলাম আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, হত্যার ঘটনার সময় তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এই দিন দিন নয়, আরও দিন আছে। সব দিন তো একরকম যায় না। সামনে ভালো দিন আসবে।’ এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা হইচই শুরু করেন। উৎসুক কিছু আইনজীবী কামরুলকে গালাগালও করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত কামরুল ইসলামের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সুত্র: সমকাল