বিবিসি বাংলা
ফের হেলমেট বাহিনীর তাণ্ডব— মানবজমিন পত্রিকার প্রধান শিরোনাম এটি। এখানে বলা হয়েছে যে রোববার রাতের উত্তেজনা শেষে গতকাল দিনভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
দফায় দফায় হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার ও মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। বহিরাগতদের নিয়ে চালানো ছাত্রলীগের হামলা থেকে বাদ যাননি নারী শিক্ষার্থীরাও। দিনভর চলা সংঘর্ষ থামাতে কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। সন্ধ্যায় উত্তপ্ত ক্যাম্পাসে সহিংসতা থামাতে নামানো হয় পুলিশ। এ সময় তৎপর হয় প্রশাসনও।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের ওপরও হামলা হয়েছে মেডিকেলের জরুরি বিভাগে।
এই একই খবর আজ দেশের সকল দৈনিকের প্রধান শিরোনাম।
‘আত্মস্বীকৃত রাজাকারদের’ জবাব দিতে ছাত্রলীগই যথেষ্ট: কাদের— এটি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার প্রথম পাতার খবর।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের রাজাকার স্লোগানের জবাব ছাত্রলীগই দেবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
“ছাত্র আন্দোলনের যে বক্তব্য কতিপয় নেতা দিয়েছেন, সেটার জবাব ছাত্রলীগই দেবে। ছাত্রদের বিষয় ক্যাম্পাস পর্যন্ত সীমিত থাকবে। আমরা দেখি রাজনৈতিকভাবে কারা প্রকাশ্যে আসে। তখন দেখা যাবে। আমরাও মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।”
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্য আন্দোলনকারীদের আলটিমেটাম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাদের বলেন, “এটা অবশ্যই ধৃষ্টতা। এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই।”
যাঁরা ‘আমি রাজাকার’ বলেন, তাঁদের শেষ দেখে ছাড়বে ছাত্রলীগ— এটি দৈনিক প্রথম আলো’র প্রথম পাতার খবর। এই শিরোনামে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল শুরু হওয়ার আগে সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে যারা লালন করে না, তাদের হাতে আন্দোলনের (কোটা সংস্কার) ‘রিমোট কন্ট্রোল’ চলে গেছে। ছাত্রলীগ রাজনৈতিকভাবে কোটা সংস্কার আন্দোলন মোকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, মহান স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা এবং একাত্তরের গণহত্যাকারীদের পক্ষে যারা সাফাই গেয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা নৈরাজ্য তৈরি করতে চায়, রাজাকারদের তোষণ করার রাজনীতি বাংলাদেশে যারা বাস্তবায়ন করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধ রয়েছে।
নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জাও করে না: প্রধানমন্ত্রী— এটি কালের কণ্ঠ পত্রিকার প্রথম পাতার একটি প্রতিবেদন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র এই বক্তব্যও আজ দেশের প্রায় সব দৈনিকের প্রথম পাতায় প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি গতকাল সকালে তার কার্যালয়ে মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ‘বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর’ এবং ‘বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি’ ও ‘শুদ্ধাচার পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠানে সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের ‘তুমি কে? আমি কে? রাজাকার, রাজাকার’ স্লোগান দেওয়াকে অত্যন্ত দুঃখজনক আখ্যায়িত করে বলেন, নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জাও লাগে না।
তিনি বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও রাজাকার বাহিনী কীভাবে দেশে অত্যাচার চালিয়েছে, তা তারা জানে না। এসব অত্যাচার, রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকা এরা দেখেনি। তাই নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জাবোধ হয়নি।
সরকার চাইলে মুহূর্তেই সমস্যার সমাধান সম্ভব— এটি সমকাল পত্রিকার প্রথম পাতায় প্রকাশিত একটি অভিমত, যা লিখেছেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। এখানে তিনি বলেছেন, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা বংশপরম্পরায় থাকতে হবে– এটা কোনোমতেই যৌক্তিক নয়।
এতে লেখা হয়েছে, “মুক্তিযুদ্ধের ধারায় দেশ পরিচালনা যাতে নিশ্চিত হয়; সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার দিকে যেন আমরা যেতে পারি, সেটাই ছিল মুক্তিযুদ্ধের প্রধান চেতনা। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটা রাখলেই তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়ে যায় না।”
“অপপ্রচার চালিয়ে এ আন্দোলনকে ভুলভাবে সবার সামনে উপস্থাপন করা হচ্ছে। তরুণরা স্লোগান দিয়েছে– আমরা রাজাকার নই। তারা বলেছে– ‘চাইলাম অধিকার/ হয়ে গেলাম রাজাকার’। তারা পরিষ্কার বলেছে, আমরা রাজাকার নই। যা বাস্তব তা-ই বলেছে। এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে– তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। গণতান্ত্রিক এ আন্দোলনে দমননীতি চালিয়ে তারা তাদের ক্ষমতাকে আরও পাকাপোক্ত করতে চায়,” যোগ করেন তিনি।
Panic at DMCH emergency as ‘BCL men’ swoop on demonstrators— দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রথম পাতার খবর এটি। এখানে বলা হয়েছে, গতকাল বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে গিয়ে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
ওইদিন পরপর দুইবার ছাত্রলীগ ওখানে হামলা করায় রোগী ও রোগীর আত্মীয়স্বজনরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং এতে করে হাসপাতালের জরুরি সেবা ব্যাহত হয়েছে।
৫০ জনের বেশি ছাত্রলীগ নেতা লাঠিসোঁটা নিয়ে হেলমেট পরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রবেশ করে এবং তারপর কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের বেধড়ক মারধর করে।
6.13m go below poverty line in Bangladesh: BIDS study— নিউ এজ পত্রিকার দ্বিতীয় প্রধান শিরোনাম এটি। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস) পরিচালিত একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে ২০২২ সালে স্বাস্থ্যসেবা খাতের খরচ মেটাতে গিয়ে ৬১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে।
বিআইডিএস-এর এই গবেষণার ফলাফল বলছে, মাত্র ছয় দশমিক ২৯ শতাংশ মানুষ নিজের আয় দিয়েই স্বাস্থ্যব্যয় মেটাতে পারে এবং ৩২ দশমিক ৫৮ শতাংশ মানুষ তাদের সঞ্চিত অর্থ খরচ করে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে।
তবে হাসপাতালে ভর্তিতে আকাশচুম্বী খরচ হয় বলেই মানুষ এত বেশি হিমশিম খায়। এখানে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মাঝে আফগানিস্তানের পরে বাংলাদেশেই স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় মেটাতে সবচেয়ে বেশি মানুষ হিমশিম খায় এবং ৬১.১৩ শতাংশ মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হিমশিম খায়।
দুর্নীতি রোধে এনবিআরে আবাসিক পরামর্শক বসাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র— আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার খবর এটি। এখানে বলা হয়েছে, রাজনীতি ও কূটনীতিতে প্রভাব বিস্তারের পর এবার বাংলাদেশের কর ফাঁকি, কর আদায় এবং এ খাতের দুর্নীতি ধরিয়ে দিতে কর বিভাগের সঙ্গে সমান্তরালে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব ট্রেজারি।
প্রস্তাবে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে এনবিআরে আবাসিক পরামর্শক বসানোর কথা বলা হয়েছে। তিনিই এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক হিসেবে এখানে আরও পরামর্শক নিয়ে গঠিত টিমের নেতৃত্ব দেবেন। আর তারা রিপোর্ট দেবেন সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টকে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে মেয়াদ হতে পারে তিন থেকে পাঁচ বছর।
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের পাঠানো প্রস্তাবটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সিনিয়র সচিব হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়, রাজস্ব প্রশাসনের সংস্কারই যুক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য। এর পাশাপাশি তাদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের কর আদায় বাড়ানো, ফাঁকি ধরা এবং এ খাতে স্বচ্ছতা ফেরানোতে সহায়তা করা।
মার্কিন রাজনীতিতে রক্তের দাগ— এটি দেশ রূপান্তর পত্রিকার প্রথম পাতার অন্যতম শিরোনাম। এখানে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চার মাস আগে নির্বাচনি সমাবেশে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডেনাল্ড ট্রাম্পকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা হয়েছে।
এমনটি যে এর আগে ঘটেনি তা নয়; যুক্তরাষ্ট্রের চারজন প্রেসিডেন্ট আততায়ীর হামলায় নিহত হয়েছেন। এবার যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে রক্তাক্ত হতে দেখল বিশ্ববাসী। গত শনিবার সন্ধ্যায় পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের বাটলার এলাকায় ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। গুলি তার ডান কান ছুঁয়ে যায়।
গুলির শব্দে নিরাপত্তারক্ষীরা চারপাশ থেকে তাকে ঘিরে ধরেন। এরপর ট্রাম্প যখন উঠে দাঁড়ান, তখন তার কান থেকে গালের পাশ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। আহত ট্রাম্পকে মুষ্টিবদ্ধ হাত আকাশে ছুড়তে থাকেন এবং বলতে থাকেন ‘ফাইট! ফাইট! ফাইট!’
নিজেদের টাকায় নিজস্ব প্রকৌশলী দিয়ে নির্মাণ হয়েছিল তিস্তা ব্যারাজ— এটি বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম। এখানে বলা হয়েছে, স্বাধীনতার পর তিস্তা নদীর ওপর ব্যারাজ বা বাঁধ নির্মাণে নকশা ও পরিকল্পনার কাজে হাত দেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রকৌশলীরা।
এজন্য সম্পূর্ণ দেশী প্রযুক্তি ও জনবলকে কাজে লাগান তারা। প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ ও ভৌত উন্নয়নের কাজ শুরু হয় ১৯৭৯ সালে। বিদেশী অর্থায়নের অপেক্ষায় না থেকে নিজস্ব অর্থ ও জনবলে ভরসা করেই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন শুরু করেছিল বাংলাদেশ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেষ পর্যন্ত নিজস্ব অর্থ ও জনবল দিয়েই প্রকল্পের মূল বাঁধ অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ। এর নকশাকার ও প্রকৌশলী থেকে শুরু করে সাধারণ নির্মাণ শ্রমিক পর্যন্ত সবাই ছিলেন বাংলাদেশী। নিজস্ব সক্ষমতায় প্রকল্পটি সফলভাবে এগিয়ে যাওয়ায় একপর্যায়ে বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও এটি নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করতে থাকে। তবে শেষ পর্যন্ত প্রকল্পের মূল বাঁধ ও ভৌত পরিকাঠামো নির্মাণ হয়েছে কোনও ধরনের ঋণ, অনুদান বা বিদেশী সংশ্লিষ্টতা ছাড়াই।
নিষিদ্ধ হচ্ছে ইমরানের পিটিআই— এটি নয়া দিগন্ত পত্রিকার প্রথম পাতার শিরোনাম। এখানে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) নিষিদ্ধ করতে চলেছে দেশটির সরকার।
একই সাথে ইমরান খান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির বিরুদ্ধে সংবিধানের ছয় নং অনুচ্ছেদের আওতায় দেশদ্রোহের মামলাও হবে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার। তিনি বলেছেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পিটিআই’কে নিষিদ্ধ করতে একটি মামলা করবে কেন্দ্রীয় সরকার। এই মামলা করা হবে সুপ্রিম কোর্টে।
ইমরান খান ১৯৯৬ সালে গঠন করেন পিটিআই। এরপর ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসেন। কিন্তু ২০২২ সালের এপ্রিলে আস্থা ভোটে হেরে তিনি ক্ষমতা হারান। বর্তমানে তিনি দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের অভিযোগে কারাগারে আছেন।