নারায়ণগঞ্জ সোমবার | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
  সর্বশেষঃ
সাংবাদিক সোহেলের মা’য়ের মৃত্যুতে মডেল রিপোর্টার্স ক্লাবের শোক
সরিষা ফুলের মধু আহরণে স্বাবলম্বী মৌয়ালরা
বকশীগঞ্জে ইউএনও’র বরণ ও বিদায় সংবর্ধনা
ইসলাম শাহ উরফে পাগলা বাবার ৭ দিনব্যাপী উরস মোবারক উদ্বোধন 
প্রশ”সারাদেশে ছিনতাই, ধর্ষন ও হত্যার প্রতিবাদে ছাত্র ফেডারেশন এর মানববন্ধন”
সোনারগাঁয়ে ২৫ কেজি গাঁজা ও পিকআপ ভ্যানসহ আটক-৩
আমতলীর দুই গ্রামে ৪ ইট ভাটা, পরিবেশসহ ফসল বিপর্যয়
আমতলীর ইউএনওর বদলীর আদেশ প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন
আমতলী উপজেলা শাখার জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত
রেলওয়ের জায়গা দখল করে শ্রমিকদল নেতা সফির ঘর নির্মাণ!
অসুস্থ বিএনপি নেতা অধ্যাপক মনিরুল ইসলামকে দেখতে গেলেন মুহাম্মদ সাদরিল
ইসলামপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার বিক্ষোভ সমাবেশ
নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে মানেই চাঁদাবাজীর অভয়ারন্য!
বকশীগঞ্জে রফিক ফাউন্ডেশনের শীতবস্ত্র বিতরণ
বাংলাদেশে হিন্দুদের জন্য কতদূর কী করার আছে ভারতের?
“সারাদেশে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ কলেজ শাখার মানববন্ধন”
আমতলীর ইউএনওর বদলীর আদেশ প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন!
আমতলীতে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ, গলায় ফাঁস লাগিয়ে স্বামীর আত্মহত্যার নাটক!
জনগণের রক্ত নিয়ে যারা হোলি খেলেছে তাদেরকে ক্ষমতায় দেখতে চাই না -মুফতি মাসুম বিল্লাহ
ইসলামপুর মোটর সাইকেল সংঘর্ষে কিশোরের মৃত্যু আহত দুই
সোনারগাঁয়ে ফেন্সিডিলসহ আটক-১
সোনারগাঁয়ে ৪ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার-১ 
আমতলীতে খাবারের লোভ দেখিয়ে প্রতিবন্ধি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ!
ফতুল্লায় গাড়ী চোর চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার
হাসিনা-টিউলিপের রাশিয়া সফর ও ৪ বিলিয়ন পাউন্ড ঘুস
বিডিআর হত্যাকাণ্ড: ট্রাইবুনালে হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের
ভয়ংকর যেসব মাদকে আসক্ত তিশা টয়া সাফা ও সুনিধি
বিজয় দিবস উপলক্ষে জাগরনী ক্রীড়াচক্র ক্লাবের আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরন
নারায়ণগঞ্জ বধির উন্নয়ন সংস্থার পক্ষে বিজয় দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি
আমতলীতে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালিত
Next
Prev
প্রচ্ছদ
ফ্যাক্টরি রিসোর্ট শুটিং স্পট সবই আছে মতিউরের

ফ্যাক্টরি রিসোর্ট শুটিং স্পট সবই আছে মতিউরের

প্রকাশিতঃ

এনবিআর কর্মকর্তা কোথায়, বলছে না কেউ

ঈদের দিন বাড়িতে ছিল রঙিন আলোর ঝলকানি। বাড়ির নিচে বাঁশের খুঁটিতে বাঁধা ছিল বেশ কয়েকটি গরুছাগল। কোরবানি হয়েছে সব। কিন্তু এক ছাগলকাণ্ডে এখন সবই নিস্তব্ধ। বাসার মূল ফটক বন্ধ, খুলে রাখা হয়েছে নেমপ্লেট। রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমান তাঁর ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত কোথায়নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ।

রাজধানীর ধানমন্ডির নম্বর রোডে ৪১/ নম্বর ইম্পেরিয়াল সুলতানা ভবনের পাঁচতলায় গতকাল শুক্রবার গিয়ে জানা যায়, ইফাতের পরিবার সেখানে নেই। বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী জানান, মঙ্গলবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর আর ফিরে আসেননি। যে বাড়িতে ইফাতের জন্ম, সেই বাড়ি ছেড়ে তিনি কোথায় গেছেন তা জানা নেই। বাড়ির সামনে সাংবাদিকরা অবস্থান করায় এক পর্যায়ে ওপর থেকে মলমূত্র ছুড়ে মারা হয়। এই ভবনের পাঁচ তলার পুরো ফ্লোর মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতারের নামে কিনে দামি আসবাব দিয়ে সাজানো হয়েছে বলে জানা যায়। একটি সূত্র জানায়, ইফাতের ছাগলকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ধানমন্ডির বাসা ছেড়ে কাকরাইলে নিজেদের আরেকটি ফ্ল্যাটে গিয়ে ওঠেন ইফাত, তাঁর মা শাম্মী আখতার ছোট ভাই। গতকাল দুপুরে কাকরাইলে স্কাইভিউ মমতা সেন্টার নামে ওই ভবনে গিয়ে জানা যায়, ভবনের /ডি নম্বর ফ্ল্যাটটি তাদের। ফ্ল্যাটের নিরাপত্তাকর্মী রবিউল ইসলাম জানান, বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত তারা বাসায় ছিলেন। এই ফ্ল্যাটে ইফাত, তাঁর মা ছোট ভাই মাঝেমধ্যে থাকেন। সেখানে আসেন মতিউর রহমান।

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় / নম্বর রোডের ৩৮৪ নম্বর বাড়িতে কাঠা আয়তনের প্লটে তৈরি করা সাততলা ভবনের এক ফ্লোরে বাস করেন মতিউর রহমান তাঁর প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি। এই বাড়িতে মতিউর, তাঁর স্ত্রী ছেলের ৫টি গাড়ি রাখা। কিন্তু গতকাল এই বাসায় মতিউর রহমানকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

একটি সূত্র জানায়, ছাগলকাণ্ডের পর ছেলেকে অস্বীকার করে এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে গাঢাকা দিয়েছেন। তবে ইফাত ইতোমধ্যে বিদেশ পাড়ি দিয়েছেন বলে দায়িত্বশীল একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

ছাগলকাণ্ড ছাপিয়ে এখন আলোচনায় মতিউরের সম্পদ। একজন সরকারি কর্মকর্তা কীভাবে এত টাকার মালিক হলেনউঠেছে সেই প্রশ্ন। মতিউরের সম্পদের বিষয়ে পাওয়া গেছে নানা তথ্য। দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) মতিউরের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে।

কে এই মতিউর
তাঁর ডাক নাম পান্নু। স্কুল সার্টিফিকেটে তিউর রহমান। বাড়ি রিশালের মুলাদী উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিন্যান্স বিষয়ে অনার্স, মাস্টার্স করার পর এমবিএ করেন। ১৯৯০ সালে চাকরি নেন পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনে। ১৯৯৩ সালে ১১তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কাস্টমসে যোগ দেন এবং ২০১৫ সালে কমিশনার হিসেবে পদোন্নতি পান। তিনি ব্রাসেলসে বাংলাদেশের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর, চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার, ভ্যাট কমিশনারসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি কাস্টমস, এক্সাইজ ভ্যাট আপিল ট্রাইব্যুনালের (সিইভিটি) প্রেসিডেন্ট। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে যুগ্ম কমিশনারের দায়িত্বে থাকাকালে শুরু হয় তাঁর উত্থান।

এদিকে মতিউরপুত্র ইফাত মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল থেকে ২০২৩ সালে এসএসসি পাস করে এখন নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী। মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলীর আরও দুই সন্তান রয়েছে। এক মেয়ের নাম ইফতিমা রহমান মাধবী। তিনি বারডেম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। আর ছোট ছেলে ইরফানের বয়স বছর। প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি ছিলেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষক। বর্তমানে তিনি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তাঁর ছেলে তৌফিকুর রহমান অর্ণব। আমেরিকায় শিক্ষাজীবন শেষে দেশে ফিরে ব্যবসায় যোগ দিয়েছেন। আর মেয়ে ফারজানা রহমান ঈপ্সিতা কানাডায় থাকেন বলে জানা গেছে।

মতিউরের অঢেল সম্পদ
অনুসন্ধানে মতিউর রহমানের অঢেল সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। নরসিংদী, ময়মনসিংহের ত্রিশাল ছাড়াও গাজীপুরের পূবাইলে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলো, জমিসহ নামেবেনামে রয়েছে অনেক জমি স্থাপনা। বরিশালেও রয়েছে তাঁর সম্পদ। ঢাকায়ও আছে একাধিক প্লট দামি গাড়ি। স্ত্রী, সন্তান আত্মীয়স্বজনের নামে সম্পদ গড়েছেন মতিউর।

ঢাকায় মতিউর রহমানের স্ত্রীসন্তান ঘনিষ্ঠদের নামে ডজন বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে বলে জানা যায়। বসুন্ধরার ডিব্লকের / রোডের ৩৮৪ নম্বর ভবনের মালিক তিনি। সাততলা ভবনের প্রথম, দ্বিতীয় তলায় স্ত্রী লায়লা কানিজকে নিয়ে বাস করেন। গুলশানের সাহাবুদ্দিন পার্কের পাশে ৮৩ নম্বর রোডের ১১ নম্বর প্লটে আনোয়ার ল্যান্ডমার্কের বেগ পার্ক ভিউতে রয়েছে ৪টি ফ্ল্যাট। কাকরাইলে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে ছোট স্ত্রীর নামে। ছাড়া ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে একাধিক ফ্ল্যাটের খোঁজ পাওয়া গেছে। বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ডেভেলপার কোম্পানি শান্তা ডেভেলপারের করা বিভিন্ন ভবনে তাঁর ৮টি ফ্ল্যাট রয়েছে বলে জানা গেছে। এসব ফ্ল্যাট প্রথম স্ত্রীর সন্তান ফারজানা রহমান ঈপ্সিতা ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের নামে কেনা হয়েছে।

টঙ্গীতে ৪০ হাজার বর্গফুটের এসকে ট্রিমস নামে ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাকসেসরিজ কারখানা আছে তাঁর। যদিও কাগজকলমে কারখানার মালিক তাঁর ভাই এমএ কাইয়ুম হাওলাদার। টঙ্গী শ্চিম থানাধীন সাতাইশ তিলারগাতি এলাকায় এসকে ট্রিমস কারখানাটিতে স্কুল ্যাগ তৈরি করা হয়। নিরাপত্তাকর্মী মালেক মিয়া জানান, কারখানার মালিকের নাম তিনি জানেন না, তবে এমডির নাম কাইয়ুম হাওলাদার।

নরসিংদীর রায়পুরায় ওয়ান্ডার পার্ক অ্যান্ড ইকো রিসোর্ট রয়েছে মতিউরের। এসব রিসোর্টের মালিকানায় আছে তাঁর ছেলে মেয়ে। ময়মনসিংহের ভালুকার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের ঝালপাজা মৌজায় একটি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর আছে গ্লোবাল শুজ লিমিটেড নামে জুতার ফ্যাক্টরি। এখানে প্রায় ৩০০ বিঘা জমিজুড়ে রয়েছে গ্লোবাল শুজ লিমিটেড কারখানা, বাগানবাড়ি, দেশিবিদেশি ফলের বাগান ফসলি জমি। জুতার ফ্যাক্টরিতে প্রায় ৪০০ কর্মকর্তাকর্মচারী। ফ্যাক্টরির উৎপাদিত জুতা রপ্তানি হয় বিভিন্ন দেশে। কারখানার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মীরা জানান, মাঝে মাঝে ফ্যাক্টরি পরিদর্শনে আসেন এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমান। সকালে এসে বিকেলে চলে যান। ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের ঝালপাজা চেঁচ্চার মোড় থেকে বাম দিকে কিছুটা গেলেই দেখা মেলে মতিউর রহমানের বিশাল জুতার কারখানা। ভালুকা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোর্শেদ আলম ওই জুতার কারখানা জমি দেখাশোনা করেন। স্থানীয় বাজারদরে ওই ৩০০ বিঘা জমির দাম প্রায় ১০০ কোটি টাকা। শুধু ভালুকা নয়, গাজীপুরের পূবাইলেও রয়েছে মতিউর রহমানের বিশাল সাম্রাজ্য। পূবাইলের খিলগাঁওয়ের টঙ্গীঘোড়াশাল সড়কের দক্ষিণ পাশে বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে তুলেছেনআপন ভুবনপিকনিক অ্যান্ড শুটিং স্পট। এই স্পটের তত্ত্বাবধায়ক মো. মাসুদ জানান, জমি লিজ বার্ষিক ভাড়ায় নিয়ে ২০১৮ সালের দিকে স্পটটি চালু করা হয়। রিসোর্টটি প্রায় ২৫ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত।

নিজ এলাকা মুলাদী উপজেলায় বাড়িঘর ছাড়াও তাঁর নামে প্রায় হাজার ৫০০ বিঘা জমি রয়েছে। নরসিংদীর মরজালে তাঁর স্ত্রী উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকির নামে ১০০ বিঘা জমির ওপর রয়েছে ওয়ান্ডার পার্ক অ্যান্ড ইকো রিসোর্ট। তাঁর মেয়ে ফারজানা ঈপ্সিতার নামে মরজাল বাসস্ট্যান্ড আশপাশ এলাকায় ১০ বিঘা জমি রয়েছে। ছাড়া ছেলে তৌফিকুর রহমান অর্ণব মেয়ে ঈপ্সিতার নামে ৫০ বিঘা জমি রয়েছে। নাটোরের সিংড়ায় ২০ বিঘা জমি রয়েছে। স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকির নামে নরসিংদীর রায়পুরার মরজালে বিঘা জমির ওপর রয়েছে অট্টালিকা।

ছাড়া গাজীপুর সদর, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় ৬০ শতাংশ জমি আছে। সাভার থানার বিলামালিয়া মৌজায় ১২ দশমিক ৫৮ শতক জমি রয়েছে। লায়লা কানিজের নামে সাভার থানার বিলামালিয়ায় ১৪ দশমিক ০৩ শতাংশ জমি রয়েছে মতিউরের।

এনবিআর কর্মকর্তা মতিউরের ছেলে ইফাত পার্ল কালারের প্রাডো মডেলের যে গাড়ি (ঢাকা মেট্রো ১৫৯৩২৭) হাঁকিয়ে বেড়ান, তার মালিকানা এসকে ট্রিম অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে। এটি গার্মেন্ট সরঞ্জাম তৈরি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। টঙ্গীতে প্রতিষ্ঠানের স্পন্সর ডিরেক্টর হিসেবে মতিউর রহমানের ভাই এমএ কাইয়ুম হাওলাদারের নাম পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ১৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ শেয়ারের মালিক তিনি। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকও তিনি। আবার প্রাডো গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নথিতে এসকে ট্রিম ইন্ডাস্ট্রিজের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে নিকেতনের ব্লক, নম্বর রোডের ৩৪ ৩৬ নম্বর প্লটে অবস্থিত মুন আইল্যান্ড নামক ভবনের স্যুট নম্বর ৮। ইফাত তাঁর মা শাম্মী আখতার প্রিমিও মডেলের (ঢাকা মেট্রো ৩২৬২৩৯) যে গাড়ি ব্যবহার করেন, সেটির মালিকানা গ্লোবাল ম্যাক্স প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে। নিকেতনের একই ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। গতকাল সেখানে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানের সামনে সাইনবোর্ডে লেখা ওয়ান্ডার পার্ক অ্যান্ড ইকো রিসোর্ট। সাইট অফিসের ঠিকানামারজাল, রায়পুরা, নরসিংদী। রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল খায়ের মানিক এবং পরিচালক মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রীর ছেলে তৌফিকুর রহমান মেয়ে ফারজানা রহমান।

মতিউর তাঁর পরিবারের সদস্যদের গাড়ি চালানোর জন্য পাঁচজন চালক আছেন বলে জানা যায়। প্রাডো, বিএমডব্লিউ, রেঞ্জ রোভারসহ বিলাসবহুল থেকে ১০টি গাড়ি আছে তাদের। তবে প্রায় সব গাড়ির মালিকানা তাদের বিভিন্ন কোম্পানির নামে। ছাড়া তাঁর মেয়ের ল্যাম্বারগিনি নামে বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহারের ছবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যার দাম প্রায় লাখ কানাডিয়ান ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় কোটি টাকা।

স্কুলশিক্ষক বাবাকে বানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান
বাহাদুরপুর গ্রামের হাকিম হাওলাদার পরিবারের বাহাদুরি একবার দেখেছে মুলাদীর কাজীরচর ইউনিয়নবাসী। রাজনৈতিক পরিচয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাকিম হাওলাদার প্রথমবার চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েই পরাজিত করেন তখনকার শক্তিশালী চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ আলীকে। ২০০৩ সালের নির্বাচনে ওই ঘটনা উপজেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোড়ন তোলে। ২০ বছর পর এখনও গ্রামবাসীর বিশ্বাসছেলের অগাধ টাকার জোরে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হয়েছিলেন বাবা হাকিম। গ্রামে পরিবারটি বিএনপিপন্থি হিসেবে পরিচিত।

হাকিম হাওলাদারের ছেলে মেয়ের মধ্যে বড় মতিউর। বাড়িতে থাকেন শুধু ছোট ছেলে নুরুল হুদা। তাঁর মেজো ভাই যুবদল নেতা কাইয়ুম হাওলাদার ঢাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী বলে জানেন গ্রামের মানুষ।

শুক্রবার বাহাদুরপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামে বাবার ভিটেয় দুই তলা ভবন করেছেন মতিউর। ২০০৩ সালের নির্বাচনে মতিউরের বাবা হাকিম হাওলাদারের কাছে হেরেছিলেন বর্তমানে মুলাদী উপজেলা ১৪ দলের সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ আলী। তখনকার উপজেলা বিএনপি সভাপতি বর্তমানে উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সাত্তার জানান, হাকিম হাওলাদার বিএনপি প্রার্থী ছিলেন। দলে তাঁর প্রাথমিক সদস্যপদ ছিল। তাঁর মেজো ছেলে ঢাকার ব্যবসায়ী কাইয়ুম হাওলাদার এখনও কাজীরচর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। হাকিমের আরেক ভাই এবিএম সিদ্দিক হাওলাদার ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। বাড়ির সবাই বিএনপিপন্থি।

সমকালের হাতে আসা মুলাদী উপজেলা বিএনপির একটি প্যাডে দেখা গেছে, ২০১০ সালের জুন গঠিত কাজীরচর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির তৃতীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন মতিউরের ভাই কাইয়ুম। ওই কমিটি এখনও বহাল বলে জানা গেছে।

মতিউরের আপন চাচাতো ভাই আবদুল্লাহ হাওলাদার মাসুম হাওলাদার ঢাকায় থাকেন। ঈদ করতে বাড়ি এসেছেন। একই শহরে থাকলেও মতিউরের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ নেই বলে জানান। মাসুম জানান, মতিউরের সঙ্গে তাঁর সর্বশেষ দেখা হয় ২৭ বছর আগে ১৯৯৭ সালে। আবদুল্লাহ জানান, ২০১৮ সালে পিতা হাকিম হাওলাদারের মৃত্যুতে বাড়ি এলে মতিউরের সঙ্গে তাঁর সর্বশেষ দেখা হয়।

এ সম্পর্কিত আরো খবর

উপদেষ্টা মন্ডলীঃ

ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম

সম্পাদক মন্ডলীঃ

মোঃ শহীদুল্লাহ রাসেল

প্রধান নির্বাহীঃ

মোঃ রফিকুল্লাহ রিপন

সতর্কীকরণঃ

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি
অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও
প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
সকল স্বত্ব
www.jagonarayanganj24.com
কর্তৃক সংরক্ষিত
Copyright © 2024

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ

বনানী সিনেমা হল মার্কেট
পঞ্চবটী ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ
ফোন নম্বরঃ ০১৯২১৩৮৮৭৯১, ০১৯৭৬৫৪১৩১৮
ইমেইলঃ jagonarayanganj24@gmail.com

Website Design & Developed By
MD Fahim Haque
<Power Coder/>
www.mdfahim.com
Web Solution – Since 2009

error: Content is protected !!