এজেএম আহছানুজ্জামান ফিরোজ, শেরপুর প্রতিনিধি:
শেরপুরের শ্রীবরদীতে এজহার ভুক্ত আসামি আ’লীগ নেতা মিজানুর রহমান মিন্টু (৪৮) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে শ্রীবরদী পৌর শহর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে শ্রীবরদী থানা পুলিশ। গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় (মামলা নম্বর-১১) ৪ নং এজহারভুক্ত থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজানুর রহমান মিন্টু ১৯৮৯ সালে শ্রীবরদী কলেজ শাখার ছাত্রলীগের প্যানেলের সমাজ কল্যাণ সম্পাদক ও ১৯৯১ সালে উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তী সময়ে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আ’লীগের দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি সহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
মামলা ও স্থানয়ী সূত্রে জানা যায়, মিজানুর রহমান মিন্টু দীর্ঘদিন থেকে আ’লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু। সে টেঙ্গরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি হিসেবে চাকুরী করেন। ১৯৯৬ সালে আ’লীগ সরকারের আমলে নৌকার মনোনিত এমপি এমএ বারীকে দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে ঐ বিদ্যালয়ে অফিস সহকারি হিসেবে চাকুরি নেয় মিন্টু। কিন্তু দলের ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিদ্যালয়ে না গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে মাসের পর মাস বেতন উত্তোলন করতেন। এমনকি তিনি বিদ্যালয়ের অফিসিয়ালি কোন কাজও করতেন না। বিদ্যালয়ের কেউ কিছু বললে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় নামে-বেনামে অভিযোগ দিয়ে হয়রানির শিকার করতেন। তাই তার ভয়ে তটস্থ ছিলো বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এছাড়াও সে তার নিজস্ব পদ-পদবী ব্যবহার করে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করতো। প্রকৃতপক্ষে সে একজন পেশাদার অভিযোগকারী ও মামলাবাজ ব্যাক্তি। তা কাজই দলীয় পরিচয় বহন করে মানুষকে বিপদে ফেলে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করা। এছাড়াও মিন্টু বিভিন্ন সময়ে ঘাতক দালাল নিমূল কমিটির উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিয়েও প্রভাব বিস্তার করতো। মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানির বিষয়টি উপজেলা আইন শৃঙ্খলা মিটিং এ উত্থাপিত হলে সর্বসম্মতিক্রমে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিগত সময়ে সে চেক জালিয়াতির মামলায় জেল খেঁটেছেন। তার আটকের খবরে হয়রানির শিকার লোকজনের মাঝে স্বস্তি বিরাজ করছে। উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিম দুলাল বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে মিন্টু বিএনপির রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষের নামে অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করতো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাতো। তার উপযুক্ত বিচার হওয়া দরকার।
থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় মিন্টু নামে এজহর ভুক্ত এক আ’লীগ নেতাকে আটক করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার তাকে শেরপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।