নারায়ণগঞ্জ সোমবার | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
  সর্বশেষঃ
সাংবাদিক সোহেলের মা’য়ের মৃত্যুতে মডেল রিপোর্টার্স ক্লাবের শোক
সরিষা ফুলের মধু আহরণে স্বাবলম্বী মৌয়ালরা
বকশীগঞ্জে ইউএনও’র বরণ ও বিদায় সংবর্ধনা
ইসলাম শাহ উরফে পাগলা বাবার ৭ দিনব্যাপী উরস মোবারক উদ্বোধন 
প্রশ”সারাদেশে ছিনতাই, ধর্ষন ও হত্যার প্রতিবাদে ছাত্র ফেডারেশন এর মানববন্ধন”
সোনারগাঁয়ে ২৫ কেজি গাঁজা ও পিকআপ ভ্যানসহ আটক-৩
আমতলীর দুই গ্রামে ৪ ইট ভাটা, পরিবেশসহ ফসল বিপর্যয়
আমতলীর ইউএনওর বদলীর আদেশ প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন
আমতলী উপজেলা শাখার জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত
রেলওয়ের জায়গা দখল করে শ্রমিকদল নেতা সফির ঘর নির্মাণ!
অসুস্থ বিএনপি নেতা অধ্যাপক মনিরুল ইসলামকে দেখতে গেলেন মুহাম্মদ সাদরিল
ইসলামপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার বিক্ষোভ সমাবেশ
নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে মানেই চাঁদাবাজীর অভয়ারন্য!
বকশীগঞ্জে রফিক ফাউন্ডেশনের শীতবস্ত্র বিতরণ
বাংলাদেশে হিন্দুদের জন্য কতদূর কী করার আছে ভারতের?
“সারাদেশে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ কলেজ শাখার মানববন্ধন”
আমতলীর ইউএনওর বদলীর আদেশ প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন!
আমতলীতে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ, গলায় ফাঁস লাগিয়ে স্বামীর আত্মহত্যার নাটক!
জনগণের রক্ত নিয়ে যারা হোলি খেলেছে তাদেরকে ক্ষমতায় দেখতে চাই না -মুফতি মাসুম বিল্লাহ
ইসলামপুর মোটর সাইকেল সংঘর্ষে কিশোরের মৃত্যু আহত দুই
সোনারগাঁয়ে ফেন্সিডিলসহ আটক-১
সোনারগাঁয়ে ৪ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার-১ 
আমতলীতে খাবারের লোভ দেখিয়ে প্রতিবন্ধি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ!
ফতুল্লায় গাড়ী চোর চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার
হাসিনা-টিউলিপের রাশিয়া সফর ও ৪ বিলিয়ন পাউন্ড ঘুস
বিডিআর হত্যাকাণ্ড: ট্রাইবুনালে হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের
ভয়ংকর যেসব মাদকে আসক্ত তিশা টয়া সাফা ও সুনিধি
বিজয় দিবস উপলক্ষে জাগরনী ক্রীড়াচক্র ক্লাবের আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরন
নারায়ণগঞ্জ বধির উন্নয়ন সংস্থার পক্ষে বিজয় দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি
আমতলীতে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালিত
Next
Prev
প্রচ্ছদ
ভারতকে যে চরম উভয় সংকটে ফেলেছেন শেখ হাসিনা

ভারতকে যে চরম উভয় সংকটে ফেলেছেন শেখ হাসিনা

প্রকাশিতঃ

 বিবিসি

বহু বছর ধরে ভারতের সবচেয়ে প্রিয় বিদেশি অতিথিদের অন্যতম হলেন শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীই থাকুন বা বিরোধী নেত্রী, কিংবা ব্যক্তিগত জীবনে চরম বিপদের মুহুর্তে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীবিগত প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে দিল্লির দরজা তার জন্য সব সময় অবারিত থেকেছে। সেটা ইন্দিরা গান্ধীর জমানাতে যেমন, তেমনি বাজপেয়ীমনমোহন সিং বা নরেন্দ্র মোদীর আমলেও।

কিন্তু সোমবার সন্ধ্যায় এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনাকে নিয়ে বাংলাদেশ এয়ারফোর্সের একটি সামরিক বিমান দিল্লির উপকণ্ঠে অবতরণ করার পর যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য দিল্লি একেবারেই প্রস্তুত ছিল না।

বস্তুত এই অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি ভারত সরকারকে এতটাই অপ্রস্তুত হতচকিত করেছে যে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক একটি বিবৃতি দিতেও তারা চব্বিশ ঘণ্টারও বেশি সময় নিয়েছে। অথচ এই সময় পার্লামেন্টের অধিবেশন চলছিল, যেখানে সরকার প্রতিটি ছোটবড় ঘটনা নিয়ে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকে।

সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে ক্যাবিনেটের নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা করতে জরুরি বৈঠকেও বসেছিলসেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনসহ সিনিয়র কর্মকর্তারা সবাই উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ নিয়ে ভারত ঠিক কী করবে, ওই বৈঠকে সে ব্যাপারেও কোনও নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি।

এমন কী বিবিসি জানতে পেরেছে, শেখ হাসিনা যতটুকু সময়ই দিল্লিতে থাকুনপ্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার সঙ্গে প্রকাশ্যে সাক্ষাৎ করবেন কি না অথবা করলেও সেই বৈঠকের কথা প্রকাশ করা হবে কি না, সে ব্যাপারেও এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে ওঠা যায়নি। অথচ শেখ হাসিনা নিজে এই দেখা করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।

দিল্লিতে একাধিক পর্যবেক্ষক বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, সামগ্রিকভাবে এই পরিস্থিতি ভারত সরকারকে একটাক্যাচ টোয়েন্টি টু সিচুয়েশনবা চরম উভয় সংকটে ফেলে দিয়েছে, কথা মনে করার যথেষ্ঠ কারণ আছে।

আর এই বিপদটা আসছে দুদিক থেকেএক, ব্যক্তি শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে দিল্লি কী পদক্ষেপ নেবে আর দুই, বাংলাদেশের ভেতরে যা ঘটছে সেটাকেই বা দিল্লি কীভাবে অ্যাড্রেস করবে।

যেমন, শেখ হাসিনাকে দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়াটা ভারতের উচিত হবে কি না, তা নিয়েও ভারতে দুরকম মতামত শোনা যাচ্ছে। অনেকে যেমন এর পক্ষে যুক্তি দিচ্ছেন, আবার এর বিপক্ষেও মত দিচ্ছেন কেউ কেউ।

আবার বাংলাদেশের ভেতরে এই মুহূর্তে যে ধরনের পরিস্থিতির খবর আসছে, সেখানে দিল্লির কী করণীয় আছে তা নিয়েও পর্যবেক্ষক বিশ্লেষকদের মধ্যে স্পষ্ট দ্বিমত আছে।

একদল মনে করেন, বাংলাদেশে এখন যে ধরনের ভারতবিরোধিতার ঝড় দেখা যাচ্ছে তাতে ভারত অতিসক্রিয়তা দেখাতে গেলে পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যাবে। সে দেশে ভারতীয় স্থাপনা, ভারতের শিল্প বা ভারতীয় নাগরিকদের আরও বড় বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হবে এবং ভারতবিরোধিতা আরও বেশি ইন্ধন পাবে বলে তাদের যুক্তি।

দিল্লিতে বর্তমানে অন্য আর একটি মতবাদ হল, ভারত যদি বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি দেখেও চুপচাপ হাত গুটিয়ে থাকে তাহলে ঘরের পাশে আর একটি মৌলবাদী শক্তির উত্থান অবধারিত, এমন কী লক্ষ লক্ষ হিন্দু শরণার্থীর ধাক্কা সামলানোর জন্যও ভারতকে প্রস্তুত থাকতে হতে পারে।

সরকারিভাবে ভারত অবশ্য এখনওওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ’ – অর্থাৎ পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখার কৌশল নিয়েই এগোচ্ছে, কিন্তু এই পাল্টাপাল্টি যুক্তিতর্কগুলো ভারতকে যে প্রবল দ্বিধাদ্বন্দ্বে ফেলেছে তাতে কোনও সংশয় নেই।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এই যুক্তিগুলো কী, এই প্রতিবেদনে সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া উচিত হবে?

সোমবার বিকেলে যখন শেখ হাসিনার গতিবিধি নিয়ে তখনও চরম অনিশ্চয়তা, ঢাকায় ভারতের হাই কমিশনার ছিলেন এমন একজন সাবেক শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিবিদকে মেসেজ করেছিলাম, “শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে ঢাকা ছেড়েছেন জানতে পারছি, আপনি কিছু শুনেছেন?”

সঙ্গে সঙ্গে তিনি সংক্ষিপ্ত জবাব দেন, “যেখানে খুশি যান, ভারতে নাএলেই হল!”

বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকটের জেরে শেখ হাসিনাকে ভারতে পালিয়ে আসতে হলে সেটা নিয়ে যে দিল্লিতেই একটা প্রবল দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করবে, তা তার ওই মন্তব্যেই স্পষ্ট ছিল।

দিল্লির থিঙ্কট্যাঙ্ক আইডিএসএ সিনিয়র ফেলো তথা বাংলাদেশ গবেষক ম্ম্রুতি পট্টনায়ক এই কথাটাই আবার বলছেন একদম চাঁছাছোলা ভঙ্গীতে।

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি শেখ হাসিনা যদি ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় চান, তাহলেও ভারতের উচিত হবে না সেটা মঞ্জুর করা”, এদিন একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন।

: পট্টনায়ক যুক্তি দিচ্ছেন, বাংলাদেশে সম্প্রতি সরকারের বিরুদ্ধে যে তীব্র আন্দোলন হয়েছে তার একটা স্পষ্ট মাত্রা ছিল ভারত বিরোধিতা।

ভারতকে যেহেতু আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা সরকারের সবচেয়ে বড় সমর্থক হিসেবে দেখা হত, তাই হাসিনা বিরোধিতার আন্দোলনে স্বভাবতই মিশে ছিল ভারতবিরোধিতার উপাদান।

এই পটভূমিতে ভারত যদি তাকে এখন রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়, সেটা একটা ভুল বার্তা দেবে এবং বাংলাদেশের ভেতরে ভারত বিরোধিতাকে আরও উসকে দেবে”, জানাচ্ছেন স্ম্রুতি পট্টনায়ক।

ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত আবার যুক্তি দিচ্ছেন, ১৯৭৫ যে পটভূমিতে শেখ হাসিনাকে ইন্দিরা গান্ধী সরকার ভারতে আশ্রয় দিয়েছিল তার চেয়ে এখনকার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা।

তখন যেটা সম্ভব ছিল, এখন সেটা সম্ভব নয়। সে সময়কার মতো শেখ হাসিনাকে তো আর পান্ডারা রোডের একটা ফ্ল্যাটে কার্যত কোনও নিরাপত্তা ছাড়াই রাখা যাবে না, এখন সম্পূর্ণ অন্য ব্যবস্থা করতে হবে।

আর শেখ হাসিনা তসলিমা নাসরিনও নন যে দিল্লি পুলিশের পাহারায় শহরের কোনও ফ্ল্যাটে তাকে রাখা যাবে। আর এই সিদ্ধান্তেরজিওপলিটিক্যাল রিস্ক’-টাও অনেক বেশি, সেটাও মাথায় রাখতে হবে”, বিবিসিকে বলছিলেন তিনি।

এই পর্যবেক্ষকরা দীর্ঘমেয়াদে শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার বিরুদ্ধে যুক্তি দিলেও সম্পূর্ণ অন্য কথা বলেছেন ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।

তিনি যদি কোনও কারণে ভারতে থাকতে চান, তার মর্যাদা সম্মান অনুযায়ী যথাযথ পর্যায়ে (অ্যাপ্রোপ্রিয়েট লেভেল) তার সঙ্গে আমাদের এনগেজ করতে হবে। এখানে দ্বিতীয় কোনও ভাবনার অবকাশ নেই”, বলছেন মি শ্রিংলা।

সোজা কথায়, পুরনো ইতিহাস এতদিনের সম্পর্ককে মাথায় রেখে তার ইচ্ছাকে ভারতের সম্মান দিতে হবেএটাই তার যুক্তি।

ভারতে শাসক দল বিজেপির ঘনিষ্ঠ পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞ শুভ্রকমল দত্ত আবার মনে করেন, এখনই স্থায়ীভাবে নাহলেও শেখ হাসিনাকে নিয়ে ভারত তার দায়িত্ব এড়াতে পারে না।

যতদিন না তৃতীয় কোনও দেশে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে তিনি আশ্রয়ের নিশ্চয়তা পাচ্ছেন, ততদিন পর্যন্ত ভারতের উচিত হবে তাকে সসম্মানে ভারতেই রাখা”, বিবিসিকে বলছিলেন : দত্ত।

বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে ভারতের কী করণীয়?

বাংলাদেশে বিশেষ করে গত আটচল্লিশ ঘণ্টায় যে ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যে ধরনের অরাজকতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বা সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত হচ্ছেন বলে খবর আসছেতাতে ভারতের এখন ঠিক কী করা উচিত তা নিয়েও দেশের ভেতরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

বিশেষ করে প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তী সরকারে বিএনপি বা জামাত ইসলামীর ঘনিষ্ঠরা প্রাধান্য পেতে পারেন, এই ধরনের ইঙ্গিতও দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দে উদ্বেগের বাতাবরণ তৈরি করেছে।

হর্ষবর্ধন শ্রিংলা মনে করেন, “বাংলাদেশে ভারত একটি শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল স্থিতিশীল সরকার চায়, এর মধ্যে কোনও ভুল নেই। আর কোনও দেশই চায় না তার ঘরের দোরগোড়ায় একটি শত্রুভাবাপূর্ণ সরকার থাকুক।

সুতরাং বাংলাদেশে পরবর্তী সরকার যাতে ভারতের প্রতিবন্ধুত্বপূর্ণথাকে, তার জন্য যা যা করা উচিত সেটা করা দরকার বলেই মনে করেন তিনি।

কংগ্রেস নেতা সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শশী থারুরও বলেছেন, “জামাতের যে ভারতবিরোধিতার ইতিহাস, তাতে নতুন সরকারে তাদের প্রভাব কতটা হবে সে ব্যাপারে ভারতকে আগেভাগেই সতর্ক থাকতে হবে।

এমন কী, ওই সরকারের ওপর চীন বা পাকিস্তানের মতো শক্তিগুলো কলকাঠি নাড়াতে চাইবে বলেও মনে করেন মি থারুর। কিন্তু জামাতের এই তথাকথিতপ্রভাবঠেকানোর জন্য ভারত ঠিক কী করতে পারে, সে ব্যাপারে স্পষ্ট দিশা দেখাতে পারেননি তারা কেউই।

শ্রীরাধা দত্ত অবশ্য বলছিলেন, “আমার মতে প্রথমে কমিউনিকেশনের চ্যানেলগুলো খুলতে হবে। ওপেন আপ করতে হবে।

বাংলাদেশে কারা এই মুহুর্তে শেষ কথা বলছেন বা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, সেটা আমরা জানি না। তাদেরকে ভাল করে চিনিও না। আমরা যদি তাদের সঙ্গে একটা সুস্থ স্বাভাবিক ওয়ার্কিং রিলেশনশিপ চাই, তাহলে সবার আগে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে”, জানাচ্ছেন তিনি।

এদিকে ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপির ভেতর থেকেই কিন্তু বাংলাদেশের প্রতিসফট ডিপ্লোম্যাটিক অ্যাপ্রোচে বদলেকঠোর দৃষ্টিভঙ্গীনেওয়ার দাবি উঠছে।

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির শীর্ষ নেতা শুভেন্দু অধিকারী যেমন প্রকাশ্যেই বলেছেন, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের ওপর এখনই চাপ প্রয়োগ করা দরকারনইলে সে দেশ থেকে অন্তত এক কোটি হিন্দু পালিয়ে ভারতে চলে আসতে বাধ্য হবেন।

শুভ্রকমল দত্তও বলছেন, “একাত্তরের যুদ্ধও কিন্তু শুরু হয়েছিল শরণার্থী সমস্যা দিয়ে। আমি মনে করি বাংলাদেশের বর্তমান সংকটে ভারতের অনেক আগেই সরাসরি হস্তক্ষেপ করা উচিত ছিল, তখন সেটা নাহলেও এখন কিন্তু করতেই হবে।

হস্তক্ষেপমানে অবশ্য কেউ বাংলাদেশে সেনা পাঠানোর কথা বলছেন না, তবে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের ওপর কূটনৈতিক বা অর্থনৈতিক যত ধরনের চাপ প্রয়োগ সম্ভবসে দিকেই ইঙ্গিত করছেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাই কিমশনার ভিনা সিক্রি আবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন, “গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের জ্বালানি, অবকাঠামো থেকে শুরু করে অজস্র সেক্টরে ভারত শত শত কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছে, এটা ভুললে চলবে না।

সেই বিনিয়োগকে সুরক্ষিত রাখার জন্য একটাস্টেবল নেবারহুডবা স্থিতিশীল প্রতিবেশ চাইআর তার জন্য যা করা দরকার, ভারতকে তা করতে হবে বলেও যুক্তি দিচ্ছেন তিনি।

ভারত এখন ঠিক কী করছে?

মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পার্লামেন্টে বাংলাদেশ নিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছেন তাতে তিনি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন।

প্রথমত, তার আগের গত চব্বিশ ঘণ্টায় ঢাকায়কর্তৃপক্ষে সঙ্গে ভারত নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। তবে এই কর্তৃপক্ষ বলতে সেনাবাহিনী না কি প্রশাসনিক বিভাগ, সেটা তিনি কিছু ভেঙে বলেননি।

দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে হিন্দু অন্য সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, দোকানপাট বা ব্যবসা এবং মন্দিরে হামলার বহু ঘটনা ঘটেছে বলে খবর আসছে। এই পরিস্থিতির ওপর ভারত সতর্ক নজর রাখছে।

ইতিমধ্যে বেশ কিছু সংগঠন সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছে নানা পদক্ষেপও নিয়েছে, ভারত তা স্বাগত জানায়। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যত উন্নতি নাহওয়া পর্যন্ত ভারত অবশ্যই ব্যাপারে উদ্বিগ্ন থাকবে। সীমান্তে বিএসএফকেও অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তৃতীয়ত, ভারত মনে করছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখনও খুব দ্রুত পাল্টাচ্ছে (‘ইভলভিং’) ইতোমধ্যে সে দেশে থাকা প্রায় ১৯ হাজার ভারতীয় নাগরিকের সুরক্ষা নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। তবে এই ১৯ হাজারের মধ্যে প্রায় ৯০০০ই ছাত্রছাত্রী, যাদের অধিকাংশই গত মাসেই ভারতে ফিরে এসেছেন।

মি জয়শঙ্করের এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, ভারত সরকার বাংলাদেশের বর্তমাননীতিনির্ধারকদের সঙ্গে একটা যোগাযোগের চ্যানেল স্থাপন করে ফেলেছেন, দুপক্ষের মধ্যে কথাবার্তাও হচ্ছে।

তবে ভারতেই বহু পর্যবেক্ষক বিশ্লেষক মনে করেন, এটুকুই হয়তো যথেষ্ঠ নয়নিজেদের স্বার্থরক্ষা করতে হলে ভারতকে আরও অতিসক্রিয় (প্রোঅ্যাক্টিভ) দরকারে কঠোর অবস্থান নিতে হবে।

এর আগে সকালের সর্বদলীয় বৈঠকেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, শেখ হাসিনাকে তারভবিষ্যৎ পরিকল্পনাস্থির করার জন্য ভারত সময় দিতে চায়।

বৈঠকে উপস্থিত একজন বিরোধী দলীয় এমপি বিবিসিকে বলেছেন, “আমার মনে হয়েছে, শেখ হাসিনাকে ভারত ছাড়ার জন্য কোনও তাড়া দেওয়ার প্রশ্ন নেই, বরং তিনি যতদিন খুশি থাকতে পারেনএটাই তিনি বোঝাতে চেয়েছেন।

এদিকে আজ (বুধবার) ভারতের ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিওরিটি প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে আবারও বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনায় বসবে বলে বিবিসি জানতে পেরেছে। দেড় দিনের মধ্যে সেটা হবে কমিটির দ্বিতীয় বৈঠক।

কিন্তু গত চব্বিশ ঘণ্টায় ভারতের সার্বিক ভূমিকা থেকে এটা স্পষ্টতাদের কাছে সম্পূর্ণ অভাবিত অপ্রত্যাশিত এই সংকটকে ঠিক কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, সেই পরিকল্পনা বাপ্ল্যান অব অ্যাকশনদিল্লি এখনও চূড়ান্ত করে ফেলতে পারেনি।

এ সম্পর্কিত আরো খবর

উপদেষ্টা মন্ডলীঃ

ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম

সম্পাদক মন্ডলীঃ

মোঃ শহীদুল্লাহ রাসেল

প্রধান নির্বাহীঃ

মোঃ রফিকুল্লাহ রিপন

সতর্কীকরণঃ

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি
অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও
প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
সকল স্বত্ব
www.jagonarayanganj24.com
কর্তৃক সংরক্ষিত
Copyright © 2024

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ

বনানী সিনেমা হল মার্কেট
পঞ্চবটী ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ
ফোন নম্বরঃ ০১৯২১৩৮৮৭৯১, ০১৯৭৬৫৪১৩১৮
ইমেইলঃ jagonarayanganj24@gmail.com

Website Design & Developed By
MD Fahim Haque
<Power Coder/>
www.mdfahim.com
Web Solution – Since 2009

error: Content is protected !!