ষ্টাফ রিপোর্টার:
নারায়ণগঞ্জ জেলায় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় জেলার নবাগত পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন,আপনারা বলছেন সাংবাদিক ভাইয়েদের নামে মামলা হচ্ছে। আসলে যে কেউ বাদি হয়ে মামলা করতেই পারে। মামলা হওয়ার মানে তো এই না যে তার জেল হাজত হয়ে যাচ্ছে বা সে অভিযুক্ত হয়ে যাচ্ছে। মামলাটা হলো প্রাথমিক পর্যায়। এরপর আমরা ওইটা তদন্ত করবো। তারপর যদি তার বিরুদ্ধের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে সে অভিযুক্ত হবে, সতত্যা না পাওয়া গেলে তাকে অভিযোগ থেকে বাদ দেওয়া হবে। তদন্ত না করে কাউকে অহেতুক গ্রেফতার করবে না পুলিশ।
২রা সেপ্টেম্বর দুপুর সোয়া ১২ টায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে জেলার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
এসময় নতুন এসপি প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, আমি ২৫তম বিসিএস এর একজন কর্মকর্তা। এর আগে এখানে যে দায়িত্বে ছিলো গোলাম মোস্তফা রাসেল সে আমার ব্যাচমেট ও বন্ধু। একটি প্রতিকুল পরিস্থিতিতে আমি এখানে পুলিশের দায়িত্ব নিয়ে এসেছি। এই দায়িত্ব পালনে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। অনেক চড়াই উড়াই আছে। গত ৫ আগস্টের পর আমাদের বিভিন্ন থানা ও অফিস ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। যার ফলে পুলিশের মনোবলটাও ভেঙ্গে গেছে। আমরা পুলিশের মনোবল ফেরাতে প্রথমে কাজ করবো। পাশাপাশি জনগনের মধ্যেও পুলিশের প্রতি যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছিলো, সেই জায়গা থেকে উত্তরণের আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। এক্ষেত্রে সবার আগে সহযোগিতা প্রয়োজন আপনাদের। আপনারা যদি অতীতের মতো সহযোগীতা না করেন, তাহলে আমরা সব পুলিশ মিলেও জনগনের আস্থা ফেরানো সম্ভব না। আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন, আমার পুলিশকে সহযোগিতা করবেন। আপনারা আমাদের কোন ভুলত্রুটি দেখলে তা শুধরে দেওয়ার জন্য বলবেন এখানে এটা হচ্ছে, যদি সাথে সাথে আমি বা আমার পুলিশ ব্যবস্থা নিলে তখন আপনেরা বলবেন কারণ আপনারা এখানকার স্থানীয়। আমরা আসছি চাকরি করতে। আমাদের চেয়ে আপনারা ভালো জানবেন, এখানে কোথায় কি হচ্ছে। আপনারা আপনাদের কলমের মাধ্যমে অপরাধ তুলে ধরেন। আর আমরা আইনগত ভাবে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিতে কাজ করি। আমরা শুধু নির্দিষ্ট একটা পোশাক পরি আপনারা পরেন না, এটাই আপনাদের ও আমাদের মধ্যেকার পার্থক্য। আমি মনে করি, নারায়ণগঞ্জের সবাই আমার আপনজন, শুধু দুস্কৃতকারীরা ছাড়া।
প্রত্যুষ কুমার মাদককে জিরো টলারেন্স উল্লেখ করে বলেন, মাদকের ব্যপারে জিরো টলারেন্স। আপনারা যদি কেথাও কোন প্রমান পান যে আমার পুলিশের কেউ এর সাথে জড়িত, আমাকে প্রমানসহ দিতে হবে। আপনি প্রমান দিবেন, আমি অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো। কিশোর গ্যাং নিয়ে যদি এখন কাজ করতে যাই, তাহলে উল্টো বিপদ আছে। কি বিপদ? সবাই এক হবে, আবার আমাদের থানা পোড়ানো শুরু হবে। আগে আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ গুলো শুরু করি।
তিনি আরো বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জে এসে প্রথমেই আড়াইহাজার গিয়েছিলাম পরিদর্শনে তারপর এখাকার যানযট দেখে বলেছি, এটাতো কোন শহরের অবস্থা না। আমি সাথে সাথে আমাদের ট্রাফিক পুলিশদের ডেকেছিলাম, টিআইদের ডেকেছিলাম। তারাও মানসিক ভাবে একটু খারাপ অবস্থায় ছিলো। আমি তাদের উজ্জীবিত করেছি। আমি বলেছি, প্রথমে যানযটের সমস্যা সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি ভলেন্টিয়ার দেওয়া যায় কিনা সে বিষয়ে আমরা কথা বলেছি। আপনাদের ভেতর থেকেও কারো দশটা সিএনজি বা দশটা অটো আছে এসব নিয়ে তদবির করবেন না প্লিজ। তাহলে আমি কিন্তু কাজ করতে পারবো না।
নবাগত এসপির সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ আমীর খসরু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) চাইলাউ মারমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার( ডিএসবি) মোঃ সোহান সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ডিবি) মোঃ তরিকুল ইসলাম সহ জেলার প্রিন্ট,ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দরা।