জাগো নারায়ণগঞ্জ
নারায়নগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার কাশিপুর ইউনিয়ন যেন একটা ক্রাইমজোন । প্রতিনিয়তঃ কোন না কোন অপরাধ ঘটেই চলেছে এই ইউনিয়নে । শাসক দলের শীর্ষ নেতা, নেতা পুত্র, নেতার চেলা চামুন্ডাদের নাম ব্যবহার করে প্রকাশ্যেই চলছে সকল ধরণের অপরাধ। এমন অপরাধের ধারাবাহিকতায় প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ মিয়াকে (৭০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে । যার সিসি ক্যামেরার ভিডিও চিত্র দেখে শিউরে উঠে সকলেই।
এমন হত্যাকান্ডের ঘটনায় বাপ্পি ও জামাল নামে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৯ জুন) দুপুরে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে শুক্রবার (২৮ জুন) রাতে নিহতের ছেলে মুন্না বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরে আযম মিয়া মামলা ও গ্রেফতারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
ওসি মো. নুরে আযম মিয়া বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ছেলে মুন্না বাদী হয়ে স্থানীয় সন্ত্রাসী সালু, হীরা, তমাল, শফর আলিসহ প্রায় ২১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে শুক্রবার রাতে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলায় থানা পুলিশ এজাহার নামীয় দুই আসামি বাপ্পি ও জামালকে গ্রেফতার করেছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ওসি বলেন, মামলার মূল আসামি সালাউদ্দিন সালু ও হিরা তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। হতাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তসহ আসামিদের গ্রেফতারে থানা পুলিশের পাশাপাশি জেলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা নানা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার কাশিপুর ইউনিয়নের আলীপাড়া এলাকায় কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সুরুজ মিয়াকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়। এ সময় সুরুজ মিয়াকে বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হন তার দুই ছেলেসহ চারজন। পরে গুরুতর অবস্থায় পাঁচজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুরুজ মিয়ার মৃত্যু হয়। আহতদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় এখনও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় ইট বালু সিমেন্টসহ ইমারত নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ এবং আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিতে বাধা দেয়ায় তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সালু ও হিরার বিরোধ সৃষ্টি হয় সুরুজ মিয়ার সঙ্গে।
এমন নির্মম হত্যাকান্ড ছাড়াও ইতিপূর্বে আরো হত্যাকান্ডের ঘটনায় সকল সময় এলাকাবাসীর মাঝে আতংক থাকে সব সময়। আর অভ্যন্তরীর নোংড়া রাজনীতির কারনে অত্যান্ত কৌশলে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে স্থানীয় নেতাকে ম্যানেজ করেই এমন নির্মম ঘটনা ঘটিয়ে নিজেদেরকে প্রতিপক্ষ শত্রু মুক্ত করে অপরাধীরা। কাশিপুরের অসংখ্য এমন অপরাধের মুখ্য ভূমিকায় একজন মূমুর্ষ নেতা বিছানায় শুয়ে থেকেই সকল ধরণের কলকাঠি নাড়েন বলে চাউর রয়েছে এলাকাজুড়ে।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে কাশিপুর এলাকার আওয়ামীলীগ সমর্থন করা প্রবীন কয়েকজন ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘একজন নেতা যিনি মৃত্যুশয্যায়। এই নেতাই কাশিপুরের সকল অপরাধের হোতা। চলাফেরা করতে না পারলেও ওই নেতাই কলকাঠি এখনো নাড়ছেন সকল অপরাধের। নির্মম হত্যাকান্ডের আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ মিয়া নিজেও ও তার পরিবার মুমূর্ষ ওই নেতার সমর্থন করতেন আবার যারা হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তারাও একই নেতার নাম নিয়ে সকল ধরণের অপরাধ করতো। তাইলে ওই নেতার হুকুম ছাড়া যেমন সুরুজ মিয়া ও তার পরিবার এক চুলও পা ফেলতো না তেমনি সুরুজ মিয়ার হত্যা মামলার মূল আসামি সালাউদ্দিন সালু ও হিরাচক্র ওই মূমুর্ষ নেতার কথার বাইরে কোন কাজ করতো না । তা হলে এই সুরুজ মিয়ার হত্যাকান্ডের নেপথ্য নায়ক কে ?”
মুমূর্ষু ওই নেতার নাম জিজ্ঞেস করলে সকলেই বলেন, আপনারা যারা নারায়ণগঞ্জে সাংবাদিকতা করেন তারা সবই বুঝেন । কে এই মুমূর্ষু নেতা । আমাদের জিজ্ঞেস করে কেন বিভ্রান্ত করেন।