ষ্টাফ রিপোর্টার:
অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগো নারায়ণগঞ্জ২৪.কমে প্রকাশিত “কিলার আক্তার-মিঠুনের নিয়ন্ত্রনে কুতুবপুরের মাদক সাম্রাজ্য” শীর্ষক সংবাদটি নিয়ে কুতুবপুরে জুড়েই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রুপান্তরিত হয়েছে। সংবাদ প্রকাশের পর অত্র প্রতিবেদককে কুতুবপুরের একাধিক মানুষ সাধুবাদ জানিয়ে বলেন,এটা একটি সময়োচিত উপযুক্ত সংবাদ। পুলিশের নিরবতার কারনে এবং স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে কিলার আক্তার ও মিঠুন তাদের বাহিনী দিয়ে পুরো কুতুবপুরকে মাদকের স্বর্গরাজ্য হিসেবে রুপান্তরিত করে তুলেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক বাসিন্দা জানান, কিলার আক্তার একজন প্রফেশনাল কিলার ও মাদক সম্রাট। মাদকের টাকায় তিনি ঢাকা নারায়ণগঞ্জে প্রচুর বিত্তবৈভবের মালিক বনে গেছেন। মুলত সপ্তাহে দুইদিন কুতুবপুরে আসেন এক বিএনপির নেতাকে টাকা দিতে। বেশীরভাগ সময়ে এ কিলার আক্তার তার বাহিনীর সদস্যদের কেরানীগঞ্জের কাউটাইলে অবস্থান করেন এবং কুতুবপুরে মাদকের বিভিন্ন তথ্যউৎপাত্ত সংগ্রহ করে। তবে আক্তারের অর্থনৈতিকভাবে উথ্থানের পেছনে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা যোগসাজেস রয়েছে বলে জানান তারা। এদের মধ্যে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা ও বর্তমানে ঢাকা সিআইডিতে কর্মরত মাজহারের নামটি বেশী উচ্চারিত হয়। কাউটাইলে যেস্থানে কিলার আক্তার তার বাহিনীদের নিয়ে আড্ডায় মশগুল থাকেন সেখানে নাকি উক্ত কর্মকর্তাকে জমি ক্রয় করে উপহার দিয়েছেন। সেই জমিতেই কিলার আক্তারগংদের মুল আড্ডাস্থল। জাগো নারায়ণগঞ্জে সংবাদ প্রকাশের পর ফেসবুক আইডিতে সেই কর্মকর্তা ও কিলার আক্তারকে নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করা হয়েছে।
তারা আরও জানান, কিলার আক্তার ও মিঠুনের অন্যতম সহযোগি হলেন নুরবাগ এলাকার তোতা মিয়ার ছেলে লেংরা লিখন। যার নিয়ন্ত্রনে রয়েছে নুরবাগ আদর্শনগরসহ আশপাশের এলাকা। আর লেংড়া লিখন নির্বিগ্নে মাদক ব্যবসা চালাতে তার আশপাশে অন্তত শতাধিক কিশোরগ্যাং নিয়োজিত রেখেছেন বিভিন্ন তথ্যের জন্য। লেংড়া লিখনের মাদক বিক্রি সংক্রান্ত কোন তথ্য স্থানীয় কেউ প্রকাশ করলেই তাদের বিরুদ্ধে নেসে আসে নির্যাতনের ষ্টীমরোলার। যার ফলে কেউ কিছু বলতে চায়না। একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠানে লেংড়া লিখনকে তার অফিসে দেখা যায় কিলার আক্তারসহ তার সহযোগিদের সাথে। অপরদিকে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটুর ভাতিজা রাজুও হচ্ছেন কিলার আক্তার ও মিঠুন গ্রুপের অন্যতম সদস্য। রাজুকেও দেখা যাচ্ছে কেক সামনে রেখে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে কিলার আক্তারের সাথে। টিটুর ভাতিজা রাজু কুতুবপুরের আলোচিত মাদক সম্রাজ্ঞী পিংকির বাড়িতেই গড়ে তুলেছেন বিশাল মাদক ও দেহ ব্যবসার সিন্ডিকেট এমনটাই বললেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকরা। থানা বিএনপির সভাপতির ভাতিজা বলে কেউ কিছু বলতে সাহস পায়না। পাগলা বৈরাগীবাড়ি এলাকায় কিলার আক্তার আরেক মাদকের হিরো হলেন মিলন ওরফে চোরা মিলন। যার নিয়ন্ত্রনে নন্দলালপুর,বৈরাগীবাড়িসহ আশপাশের এলাকা।
মুঠোফোনে তারা আরও বলেন, শুধু কুতুবপুরেই নয় কিলার আক্তার ও মিঠুনের মাদক সাম্রাজ্য শ্যামপুর,কদমতলী,ঢাকা ম্যাচসহ আশপাশের গন্ডিতেও রয়েছে। মাজহারসহ কয়েকজন অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাকে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে মাদক বিক্রির টাকায় এখন শতকোটি টাকার মালিক এ কিলার আক্তার। সামান্য কিংবা মাদকের বড় চালান যেটা নিয়ে আটক হোক না কেন ২ দিনের মধ্যেই সে জামিনে বেড়িয়ে আসেন তিনি। তার জলন্ত প্রমান হলো আড়াই মন গাজাঁসহ আটকের পর মাত্র ২ দিনের ব্যবধানে জামিনে বেড়িয়ে আসেন মাদক সাম্রাজ্যেও এ ভয়াবহ ডিলার আবির রহমান আক্তার ওরফে কিলার আক্তার। যা শুধুমাত্র অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়েই প্রশাসনের সকলকে ম্যানেজ করেই সম্ভব বলে জানান তারা।
তাদের দাবী,কিলার আক্তার ও মিঠুনের মাদক সাম্রাজ্যের অন্যতম সদস্য লেংরা লিখন এবং রাজুসহ সকল অপরাধীকে দ্রুত গ্রেফতারের জন্য সেনাবাহিনীর কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
গতকাল প্রকাশিত সংবাদটি পাঠকের সুবিধার্থে হুবুহু দেয়া হলো:
কিলার আক্তার-মিঠুনের নিয়ন্ত্রনে কুতুবপুরের মাদক সাম্রাজ্য!
আবির রহমান আক্তার ওরফে কিলার আক্তার যিনি ফতুল্লার পাগলা এলাকার একটি সুপরিচিত ও আতংকের একটি নাম। এ সময়ে তিনি কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নিলেও বর্তমানে তার কিলিং মিশনটির ধরন পাল্টিয়েছেন। অথ্যাৎ বিগত সময়ে অস্ত্রের মাধ্যমে মানুষকে হত্যা করতেন আর এখন মাদক সেবন করিয়ে ধীরে ধীরে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করছেন। মাদক অধ্যুষিত ফতুল্লার পাগলা কুতুবপুরের প্রতিটি অলিগলিতে চালাচ্ছেন মাদক ব্যবসা। আর তার সাথে রয়েছেন জাউল্লাপাড়া এলাকার হাবিব শেঠের ভাতিজা অপর মাদক সম্রাট ইমরান রহমান মিঠুন। এ দুইয়ের নিয়ন্ত্রনেই রয়েছে পুরো কুতুবপুরের মাদক সাম্রাজ্য।
স্থানীয়দের সুত্রে জানা যায়, দেলপাড়া পুর্বপাড়া এলাকার মৃত.আবদুল খালেক সরদারের ছেলে আবির রহমান আক্তার ওরফে কিলার আক্তার। চাকদাহ রোলিং মিলের দারোয়ানকে ১শত টাকার জন্য হত্যার মাধ্যমেই কিলার আক্তারের এ পথে আসা। তবে সবচেয়ে আলোচিত হয় কুতুবপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক মীর হোসেন মিরুকে গুলি করার মাধ্যমে।
তাদের দাবী ৫ আগষ্টের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাথে সাথেই কিলার আক্তার ও তার বাহিনীর সদস্যরা পুরো কুতুবপুর জুড়েই চালাচ্ছে মাদকের সাম্রাজ্যে। তারা জানান,আওয়ামীলীগের আমলে দূর্ধর্ষ এ সন্ত্রাসী ও কিলার আক্তার কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এসআই মিজানের সাথে সখ্যতা গড়ে পাগলা,আলীগঞ্জ,নুরবাগ,রসুলপুর,কুতুবপুর,জুরাইন,শ্যামপুর ও কাজীরগাও এলাকায় মিঠুনের সাথে মাদকের আধিপত্য বিস্তার গড়ে তুলে শত কোটি টাকার মালিক বনে যায়।
কিলার আক্তার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর কারনে উল্লেখিত এলাকায় আইন শৃঙ্খলা ব্যাপক অবনতি ঘটছে। সচেতন মহল এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে কিলার আক্তার বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা এসআই মিজানকে ব্যবহার করে প্রতিবাদকারিদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক উল্টা মিথ্যা মাদক ও অস্ত্র মামলা দিয়ে তাদেরকর আদালতে প্রেরণ করত। সন্ত্রাসী কিলার আক্তার ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগ সরকারের শাসন আমলে কথা বলার সাহস হারিয়ে ফেলে উল্লেখিত এলাকার জনসাধারন। কিলার আক্তার শ্রমিক নেতা কাউছার আহাম্মেদ পলাশের শেল্টার হিসেবে কাজ করত।
তথ্য অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, দেলপাড়া পূর্বপাড়া এলাকার মৃত খালেক সরদারের ছেলে কিলার আক্তার আওয়ামীলীগ সরকারের শাসন আমলে জবর দখল, এক চাটিয়ে মাদক ব্যবসাসহ অপরাধ মূলক কর্মকান্ড করে ডেমরা ও কেরানীগঞ্জে বিপুল সম্পত্তির মালিক বনে গেছে। আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর থেকে কিলার আক্তার সিঙ্গাপুর আত্মগোপন করে। তার অনুপস্থিতিতে উল্লেখিত স্পটে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে হাবিব শেঠের ভাতিজা ইমরান রহমান মিঠুন,তোতা মিয়ার ছেলে লিমন ওরফে লেংরা লিখন ও খালেক মিয়ার ছেলে কাইল্লা বাবু, আফজাল ও লিটন গংরা।
স্থানীয়দের মতে,জাউল্লাপাড়া এলাকায় কিলার আক্তারের অন্যতম সহযোগি মিঠুনের মাদক স্পটে স্থানীয় কেউ তো দুরের কথা প্রশাসনের কর্তারাও নাকি প্রবেশ করতে ভয় পায়। কারন মিঠুনের অধীনে প্রায় আড়াই থেকে তিন শতাধিক কিশোরগ্যাং সদস্যরা এ চারিপাশে অবস্থান করেন ২৪ ঘন্টা। মিঠুনের মাদক স্পটে তার সহযোগি হিসেবে রয়েছে কাউসার,সানজিল,মনসুরের ছেলে রাকিব,কেবলা,আলামিন এবং বাইদ্যার ছেলে জাকির ড্রাইভার। কথিত রয়েছে যে,ড্রাইভার জাকির তার কাছে থাকা গাড়ি দিয়েই পাগলা ও জুরাইনের বিভিন্ন মাদক স্পটে মাদক সাপ্লাই করে থাকেন। তারা আরও বলেন,এসআই শুকান্ত দত্ত ও এসআই মিজানগংরা কয়েক বছর পুর্বে কোটি টাকার মাদকসহ কিলার আক্তারকে গ্রেফতারও করেছিলেন। এক কথায় কিলার আক্তার ও মিঠুনের নেতৃত্বে পুরো কুতুবপুর ইউনিয়নটিকে এখন মাদকের আখড়া হিসেবে রুপান্তরিত করে তুলেছেন। আর এ জন্য তাদেরকে সহযোগিতা করছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির একজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও তার ভাইয়েরা। গুঞ্জন রয়েছেন সপ্তাহে দুইদিন কিলার আক্তার রাত ১১টার পরে নাকি উক্ত নেতার বাড়িতে স্বশরীরে গিয়ে মোটা অংকের টাকাও দিয়ে আসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক স্থানীয় বাসিন্দাগন জানান, কিলার আক্তার ও মিঠুনের মাদক সাম্রাজ্যে কে কোন এলাকাতে মাদক বিক্রি করবে তাও নির্ধারন করে দেয়া রয়েছে। তার মধ্যে রসুলপুর ও আদর্শনগরের আশপাশ এলাকার দ্বায়িত্বে রয়েছেন তোতা মিয়ার ছেলে লিমন ওরফে লেংরা লিখন। আলোচিত মাদক বিক্রেতা পিংকির বাড়ি ও আশপাশে দ্বায়িত্বে রয়েছে উক্ত বিএনপি নেতার ভাতিজা রাজু। তারা আরও বলেন,কিলার আক্তার যুবলীগ ক্যাডার হিসেবে পাগলা ও আলীগঞ্জে ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের চোখে ভাল থাকতে নিজেকে নিশ্চিন্তপুর ঐক্য তরুন সংঘ নামক একটি সংগঠনের উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করেছেন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে। তবে একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী,কিলার ও মাদক সম্রাটকে কিভাবে একটি সামাজিক সংগঠনের উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে তা নিয়েও স্থানীয়দের মাঝে রয়েছে আলোচনা-সমালোচনা ও চাপাক্ষোভ।
সন্ত্রাসী কিলার আক্তারের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় হত্যা, অস্ত্র ও মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জালকুড়ি এলাকায় অয়ন ওসমানের সাথে নিরীহ ছাত্রদের উপর গুলি বর্ষণ করতে দেখা গেছে।
সন্ত্রাসী কিলার আক্তার ও তার সহযোগি মিঠুনের মাদক স্পট বন্ধসহ অনতি বিলম্বে কিলার আক্তারসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতারের জন্য সেনাবাহিনী জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ফতুল্লা সর্বস্তরে জনগণ।
কিলার আক্তার কুতুবপুরের কোন কোন নেতাকে কিভাবে উপহার ও ম্যানেজ করে মাদক ব্যবসা চালাচ্ছেন তা জানতে আগামী পবেরও জন্য চোখ রাখুন জাগো নারায়ণগঞ্জ২৪.কমে।