ষ্টাফ রিপোর্টার:
আবির রহমান আক্তার ওরফে কিলার আক্তার যিনি ফতুল্লার পাগলা এলাকার একটি সুপরিচিত ও আতংকের একটি নাম। এ সময়ে তিনি কিলিং মিশনে সরাসরি অংশ নিলেও বর্তমানে তার কিলিং মিশনটির ধরন পাল্টিয়েছেন। অথ্যাৎ বিগত সময়ে অস্ত্রের মাধ্যমে মানুষকে হত্যা করতেন আর এখন মাদক সেবন করিয়ে ধীরে ধীরে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করছেন। মাদক অধ্যুষিত ফতুল্লার পাগলা কুতুবপুরের প্রতিটি অলিগলিতে চালাচ্ছেন মাদক ব্যবসা। আর তার সাথে রয়েছেন জাউল্লাপাড়া এলাকার হাবিব শেঠের ভাতিজা অপর মাদক সম্রাট ইমরান রহমান মিঠুন। এ দুইয়ের নিয়ন্ত্রনেই রয়েছে পুরো কুতুবপুরের মাদক সাম্রাজ্য।
স্থানীয়দের সুত্রে জানা যায়, দেলপাড়া পুর্বপাড়া এলাকার মৃত.আবদুল খালেক সরদারের ছেলে আবির রহমান আক্তার ওরফে কিলার আক্তার। চাকদাহ রোলিং মিলের দারোয়ানকে ১শত টাকার জন্য হত্যার মাধ্যমেই কিলার আক্তারের এ পথে আসা। তবে সবচেয়ে আলোচিত হয় কুতুবপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক মীর হোসেন মিরুকে গুলি করার মাধ্যমে।
তাদের দাবী ৫ আগষ্টের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাথে সাথেই কিলার আক্তার ও তার বাহিনীর সদস্যরা পুরো কুতুবপুর জুড়েই চালাচ্ছে মাদকের সাম্রাজ্যে। তারা জানান,আওয়ামীলীগের আমলে দূর্ধর্ষ এ সন্ত্রাসী ও কিলার আক্তার কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এসআই মিজানের সাথে সখ্যতা গড়ে পাগলা,আলীগঞ্জ,নুরবাগ,রসুলপুর,কুতুবপুর,জুরাইন,শ্যামপুর ও কাজীরগাও এলাকায় মিঠুনের সাথে মাদকের আধিপত্য বিস্তার গড়ে তুলে শত কোটি টাকার মালিক বনে যায়।
কিলার আক্তার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর কারনে উল্লেখিত এলাকায় আইন শৃঙ্খলা ব্যাপক অবনতি ঘটছে। সচেতন মহল এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে কিলার আক্তার বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা এসআই মিজানকে ব্যবহার করে প্রতিবাদকারিদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক উল্টা মিথ্যা মাদক ও অস্ত্র মামলা দিয়ে তাদেরকর আদালতে প্রেরণ করত। সন্ত্রাসী কিলার আক্তার ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগ সরকারের শাসন আমলে কথা বলার সাহস হারিয়ে ফেলে উল্লেখিত এলাকার জনসাধারন। কিলার আক্তার শ্রমিক নেতা কাউছার আহাম্মেদ পলাশের শেল্টার হিসেবে কাজ করত।
তথ্য অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, দেলপাড়া পূর্বপাড়া এলাকার মৃত খালেক সরদারের ছেলে কিলার আক্তার আওয়ামীলীগ সরকারের শাসন আমলে জবর দখল, এক চাটিয়ে মাদক ব্যবসাসহ অপরাধ মূলক কর্মকান্ড করে ডেমরা ও কেরানীগঞ্জে বিপুল সম্পত্তির মালিক বনে গেছে। আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর থেকে কিলার আক্তার সিঙ্গাপুর আত্মগোপন করে। তার অনুপস্থিতিতে উল্লেখিত স্পটে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে হাবিব শেঠের ভাতিজা ইমরান রহমান মিঠুন,তোতা মিয়ার ছেলে লিমন ওরফে লেংরা লিখন ও খালেক মিয়ার ছেলে কাইল্লা বাবু, আফজাল ও লিটন গংরা।
স্থানীয়দের মতে,জাউল্লাপাড়া এলাকায় কিলার আক্তারের অন্যতম সহযোগি মিঠুনের মাদক স্পটে স্থানীয় কেউ তো দুরের কথা প্রশাসনের কর্তারাও নাকি প্রবেশ করতে ভয় পায়। কারন মিঠুনের অধীনে প্রায় আড়াই থেকে তিন শতাধিক কিশোরগ্যাং সদস্যরা এ চারিপাশে অবস্থান করেন ২৪ ঘন্টা। মিঠুনের মাদক স্পটে তার সহযোগি হিসেবে রয়েছে কাউসার,সানজিল,মনসুরের ছেলে রাকিব,কেবলা,আলামিন এবং বাইদ্যার ছেলে জাকির ড্রাইভার। কথিত রয়েছে যে,ড্রাইভার জাকির তার কাছে থাকা গাড়ি দিয়েই পাগলা ও জুরাইনের বিভিন্ন মাদক স্পটে মাদক সাপ্লাই করে থাকেন। তারা আরও বলেন,এসআই শুকান্ত দত্ত ও এসআই মিজানগংরা কয়েক বছর পুর্বে কোটি টাকার মাদকসহ কিলার আক্তারকে গ্রেফতারও করেছিলেন। এক কথায় কিলার আক্তার ও মিঠুনের নেতৃত্বে পুরো কুতুবপুর ইউনিয়নটিকে এখন মাদকের আখড়া হিসেবে রুপান্তরিত করে তুলেছেন। আর এ জন্য তাদেরকে সহযোগিতা করছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির একজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও তার ভাইয়েরা। গুঞ্জন রয়েছেন সপ্তাহে দুইদিন কিলার আক্তার রাত ১১টার পরে নাকি উক্ত নেতার বাড়িতে স্বশরীরে গিয়ে মোটা অংকের টাকাও দিয়ে আসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক স্থানীয় বাসিন্দাগন জানান, কিলার আক্তার ও মিঠুনের মাদক সাম্রাজ্যে কে কোন এলাকাতে মাদক বিক্রি করবে তাও নির্ধারন করে দেয়া রয়েছে। তার মধ্যে রসুলপুর ও আদর্শনগরের আশপাশ এলাকার দ্বায়িত্বে রয়েছেন তোতা মিয়ার ছেলে লিমন ওরফে লেংরা লিখন। আলোচিত মাদক বিক্রেতা পিংকির বাড়ি ও আশপাশে দ্বায়িত্বে রয়েছে উক্ত বিএনপি নেতার ভাতিজা রাজু। তারা আরও বলেন,কিলার আক্তার যুবলীগ ক্যাডার হিসেবে পাগলা ও আলীগঞ্জে ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের চোখে ভাল থাকতে নিজেকে নিশ্চিন্তপুর ঐক্য তরুন সংঘ নামক একটি সংগঠনের উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করেছেন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে। তবে একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী,কিলার ও মাদক সম্রাটকে কিভাবে একটি সামাজিক সংগঠনের উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে তা নিয়েও স্থানীয়দের মাঝে রয়েছে আলোচনা-সমালোচনা ও চাপাক্ষোভ।
সন্ত্রাসী কিলার আক্তারের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় হত্যা, অস্ত্র ও মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জালকুড়ি এলাকায় অয়ন ওসমানের সাথে নিরীহ ছাত্রদের উপর গুলি বর্ষণ করতে দেখা গেছে।
সন্ত্রাসী কিলার আক্তার ও তার সহযোগি মিঠুনের মাদক স্পট বন্ধসহ অনতি বিলম্বে কিলার আক্তারসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতারের জন্য সেনাবাহিনী জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ফতুল্লা সর্বস্তরে জনগণ।
বি:দ্র: কিলার আক্তার ও তার সহযোগিদের অপরাধের আরো তথ্য জানতে চোখ রাখুন জাগো নারায়ণগঞ্জ২৪.কমে। জানতে পারবেন আগামী পর্বে।