ষ্টাফ রিপোর্টার:
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরই যেন মুহুর্তের মধ্যে খোলস পাল্টে যুবলীগ নেতা থেকে বিএনপির ভাবমুর্তি নষ্ট করতে কাশিপুরসহ আশপাশ এলাকায় লুটপাট,ভাংচুর ও জোড়পুর্বক টাকাসহ বিভিন্ন মুল্যবান জিনিস হাতিয়ে নেয়ার মহোৎসবে মেতে উঠেছে বাঁশমুলি এলাকার রিয়াজ প্রধানের ছেলে আফজাল হত্যাসহ প্রায় আড়াই ডজন মামলার আসামী রাজু প্রধান। চলতি মাসের ৪ তারিখেও যুবলীগের ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উপরে অস্ত্র নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে তাদেরকে ব্যাপক মারধর করে এ রাজু প্রধান। অথচ ৫ তারিখ বিকেল ৩টায় স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের কথা শোনামাত্রই পাল্টে নেয় তার রুপ।
ফতুল্লার কয়েকটি এলাকায় ঘুরে দেখা যায় দুবৃর্ত্তদের তান্ডবলীলার ধ্বংসযঞ্জ। কাশিপুরের বাঁশমুলি এলাকায় প্রায় হত্যাসহ প্রায় আড়াই ডজন মামলার আসামী যুবলীগ নেতা রাজু প্রধান বাহিনী হামলা চালায় আলহাজ আহমেদ হোসেন রাজু বাসভবনে। এ সময় আহমেদ হোসেন রাজুর বাসায় হামলা চালিয়ে ঘরে থানা প্রতিটি জিনিসপত্র ভেঙ্গে চুরমার করে দেয় ও ঘরে থাকা মুল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। আহমেদ হোসেন রাজু বাড়িতে হামলায় চালিয়ে রাজু প্রধান,তার ভাই সাজু প্রধান,রাশেদ,রাসেলসহ তার প্রায় দুই শতাধিক সহযোগিরা প্রতিটি জানালার কাঁচগুলো ভেঙ্গে ফেলে এবং বাড়ির প্রধান ফটকটি ( এসএস দ্বারা তৈরী ) সেটি খুলে নিয়ে যায়। এ সময় ঘরে আলমারী রক্ষিত প্রায় ২০ ভরি স্বর্নালংকার ও নগদ সাড়ে তিন লক্ষ টাকাও নিয়ে যায়।
যাবার সময় যুবলীগ নেতা রাজু প্রধান আহমেদ হোসেন রাজুর পরিবারের সদস্যদের হুমকী নিয়ে যায় যে তাদের বাড়ি নাকি দখল করে নেবে। আহমেদ হোসেন রাজুর বড় ভাই এবাদ হোসেনের ছেলে যুবলীগ নেতা আফজাল হোসেন হত্যা মামলার প্রধান আসামী হচ্ছে রিয়াজ প্রধানের ছেলে রাজু প্রধান। তার বিরুদ্ধে কয়েকটি হত্যা মামলাসহ প্রায় আড়াই ডজন মামলা রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। তার বিশাল বাহিনীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বাঁশমুলিসহ আশপাশের বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, বিএনপির ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করতেই যুবলীগ নেতা রাজু প্রধানগং আহমেদ হোসেন রাজুর বাড়ি ছাড়াও কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে গত ৩ দিনের প্রায় কোটি টাকার মুল্যবান জিনিসপত্র লুটে নিয়েছে রাজু প্রধান ও তার বাহিনীর সদস্যরা। তারা আরও জানান,দুর্ধর্ষ এ সন্ত্রাসী রাজু প্রধানকে প্রায় ১৫ বছর যাবত আশ্যয় দিয়েছেন কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান এম.সাইফউল্লাহ বাদল এবং তার ছেলে সাজন। সাবেক সাংসদ শামীম ওসমানের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে সাজনের ব্যানারেই এ দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী রাজু প্রধান তার বাহিনীকে নিয়ে সেখানে যেতো। তাদের দাবী,কাশিপুর ও আশপাশ এলাকাতে বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলতে এবং বিএনপির ভাবমুর্তি নষ্ট করতে উঠেপড়ে লেগেছে কাশিপুরে যুবলীগের আতংক হত্যাসহ আড়াই ডজন মামলার আসামী রাজু প্রধানগং।
একই দিন মাসদাইর ফারিহা মোড় এলাকায় রমিজউদ্দিন রমু’র বাস কাউন্টারে হামলা চালিয়ে উত্তরবঙ্গগামী একাধিক গাড়ি ভাংচুর করেছে ফেরদৌস,জাহিদ,শুভ এবং আলাউদ্দিন ওরফে ইদা মাহাজনের সাগরসহ সঙ্গীয়রা। এ সময় বাস কাউন্টারের পাশে থাকা একটি চায়ের দোকানে লুটপাট চালায় তারা। হামলা চালিয়ে কাউন্টারের চারটি সিসি ক্যামেরা নিয়ে যায় এবং চায়ের দোকানের সমস্ত মালামাল লুটে নিয়ে পুরোটাই শূন্য করে ফেলে। এ সময় হামলাকারীদেরকে রমিজউদ্দিন রমু’র বড় মেয়ে বাধা প্রদান করলে তার গলায় থাকা পৌনে ২ ভরি ওজনের একটি স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নেয়।
তাছাড়া ফতুল্লা থানার আশপাশের কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে দোকানের তালা ভেঙ্গে লুটপাট ও মুল্যবান মালামাল,বাড়িতে প্রবেশ করে মুল্যবান মালামাল নেয়ার পাশাপাশি ঘর থেকে টাকা-স্বর্নালংকারসহ মুল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। এছাড়াও কয়েকটি ইন্ড্রাষ্টিতেও হামলা চালিয়ে ভাংচুর,লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটিয়েছে দুবৃর্ত্তরা।
কাশিপুরে সন্ত্রাসী রাজু প্রধানগং ও ফতুল্লার কয়েকটি স্থানে ভাংচুর-লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য নারায়ণগঞ্জে দ্বায়িত্বে থানা সেনা বাহিনীর সদস্যদের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগিরা।