ষ্টাফ রিপোর্টার:
গিয়াসউদ্দিন প্রধান ও জমিসউদ্দিন প্রধান ওরফে জসু এরা দুই সহোদর। একজন হলেন সাবেক মৎস্যজীবি দল নেতা আর অপরজন হচ্ছেন এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির ৮নং ওয়ার্ড সভাপতি। এরা দুইজনই হলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের আপন চাচা। বিগত ২০২১ সাল থেকে ভাতিজার প্রেসক্রিপসনে বিএনপির রাজনীতির ময়দানে না দেখা গেলেও ৫ আগষ্টের পর থেকে গর্তে লুকিয়ে থাকা এ দুই গুনধর এখন বিএনপি একনিষ্ট কর্মী কিংবা নেতা দাবী করে জুট সেক্টরের ময়দান দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছেন বলে দাবী স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দের।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায় যে, বিগত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আমলে নিজেদেরকে গুটিয়ে রাখেন মামলা-হামলার ভয়ে। জসিম ওরফে জসু বড় ছেলে ভাতিজা রিয়াদের সাথে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত হয়ে ব্যাপক জুলুম-নির্যাতন করলেও আওয়ামী ক্ষমতার প্রভাবের কারনে কেউ কিছু বলতে সাহস পায়নি। শুধু তাই মাদকের নিয়ন্ত্রন নিয়ে মাসদাইরে দানিয়েল হত্যাকান্ডের ২য় আসামীও ছিলো জসুর বড় ছেলে। সেই মামলায় দীর্ঘদিন জেল খেটে বর্তমানে জামিনে রয়েছে। স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দের মতে, বিগত ২০২১ সাল থেকে বিএনপির কোন আন্দোলন সংগ্রামে গিয়াস-জসু এ দুই সহোদরকে কেউ কোথাও দেখেনি। ভাতিজা রিয়াদের প্রেসক্রিপসনে বাড়িতে অবস্থান করতো তারা। ৫ আগষ্ট হাসিনা সরকারের পলায়নের ৩ দিন আগে অথ্যাৎ ২ আগষ্ট পর্যন্তও জেলার বিভিন্ন থানায় বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা-গ্রেফতার হলেও গর্তে লুকিয়ে থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে আরাম-আয়েশে দিনযাপন করেন গিয়াস-জসু। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে বিএনপি করার অপরাধে যখন ত্যাগী নেতাকর্মীরা মামলা-হামলায় জর্জরিত হয়ে সব ছেড়ে পালিয়ে বেড়ায় তখন মামলা-হামলাহীন গিয়াস-জসুর জীবনডাপন ছিলো আরাম-আয়েশের। কিন্তু ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকে ভাতিজা রিয়াদের শেল্টারে লুকিয়ে থাকা গর্ত থেকে বেড়িয়ে এখন বিসিক এলাকার জুট থেকে কামাচ্ছেন কাড়ি কাড়ি টাকা। এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিঅ্যাড.এস এম মাহমুদুল হাসান আলমগীর ও জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি’র সাথে থেকেই এ দুই সহোদরের চোখ এখন বিসিকের জুট সেক্টর। আর ৫ আগষ্টের পর উক্ত নেতাদের সান্নিধ্যে তারা দুইভাই এখন কামাচ্ছেন প্রচুর টাকা ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বিএনপি নেতা জানান, ৫ আগষ্টের পর ভাতিজা রিয়াদকে বোরকা পড়ে পালিয়ে এলাকা ত্যাগ করতে সহযোগিতা করেছেন তার চাচাসহ সাঙ্গপাঙ্গরা। বিগত আওয়ামী শাসনামলে রিয়াদের আয়ত্বে বিসিকের যে কয়টি গার্মেন্টস থেকে মালামাল নামাতো সেগুলোও নাকি এখন রিয়াদের দুই চাচাসহ সাঙ্গপাঙ্গরা নামাচ্ছেন এবং লাভের একটি অংশ রিয়াদকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তারা আরও জানান, কোন দিন কোন গার্মেন্টস থেকে জুট নামানো হবে তা নিয়ে এলাকাতে উক্ত ইউনিয়ন বিএনপি নেতার বাড়ির নিচে তার অফিসে মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেক ত্যাগী বিএনপি নেতা জানান, গিয়াসউদ্দিন ও জসু তারা হচ্ছেন সুবিধাবাদী লোক। বিগত সরকারের আমলে তাদেও নামে কয়টি রাজনৈতিক মামলা হয়েছে তা জানুন। একটিও মামলা হয়নি তাদের বিরুদ্ধে। কারন তারা সে সময়ে ভাতিজা রিয়াদের শেল্টারে নিরাপদে ছিলো। মামলা-হামলা খেয়ে পরিবার-পরিজন ছেড়ে মাসের পর মাস এলাকা ছাড়া ছিলাম বিএনপি করার অপরাধে। অথচ আজ আমরা সবকিছু থেকে বঞ্চিত। অথচ সর্ম্পকের সুত্রে আজ গিয়াস-জসুরা গার্মেন্টস সেক্টর থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তারা আরও বলেন, এ সকল সুবিধাবাদীদের কাছেই জিম্মি হয়ে পড়ছে বিএনপির রাজনীতি। কারন মাসদাইরের রাজনীতিটা হয় পরিবার তন্ত্রের রাজনীতি। এখানে গনতন্ত্রের বিন্দুমাত্র চর্চা নেই। জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি’র নিকটাত্মীয় হচ্ছে এ প্রধান পরিবার। যেকারনে রনি এবং উক্ত ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির আশ্রয়ে থেকেই গর্তে লুকিয়ে থাকা গিয়াস-জসুরা এখন যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে আর আমরা ত্যাগীরা শুধু ত্যাগ স্বীকার করে যাবো। বিনিময়ে পাবো মামলা-হামলা আর স্বজন ছেড়ে পথে-ঘাটে ঘুড়ে বেড়ানোর যন্ত্রনা।
গিয়াস-জসুদের মত সুবিধাভোগী নামধারী নেতাদের বিরুদ্ধে দলের হাইকমান্ডের সুদৃষ্টি কামনা করেন বিগত ১৭ বছরে দলের জন্য মামলা-হামলার শিকার নেতৃবৃন্দরা।