নিজস্ব প্রতিবেদক:আমার একটা মাত্র নাতি।ঘুমের থাইক্কা আমার নাতিডারে ওরা তুইলা আনলো।আমার নাতি তো ছাত্র না।কোন রাজনীতিও করে না।জোগালি কইরা আমারে খাওয়ায়।ওরে ধইরা আনলো কে পুলিশ!এমনই বিলাপ করে কান্না করতে দেখা যায় আদালতপাড়ায় গ্রেফতার আসামী আরিফের দাদীকে।
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জ জেলায় বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটনায় পুলিশের করা নাশকতা মামলায় সোনারগাঁ ও বন্দর থানার বিভিন্ন গ্রেফতারকৃত আসামীদের স্বজনদের ২৮ জুলাই রবিবার দুপুরে দেখা যায় আদালতপাড়ায় আহাজারি।
সোনারগাঁ থানার নোয়াগা ইউনিয়নের জয়নাল মিয়ার ছেলে আরিফ(১৮)।পেশায় একজন রাজমিস্ত্রির সহকারী জোগালি।দাদী আর নাতি মিলেই আরিফের পরিবার।আরিফের আয়ের নির্ভর করে তাদের দুইজনের সংসার চলে।
আরিফের দাদী জনু বিবির ভাষ্যমতে,আরিফ কোন রাজনীতি দলের সাথে সম্পৃক্ত না। সে কোন শিক্ষার্থীও না।দিন আনে দিন খায়।গত মঙ্গলবার ২৩ জুলাই রাতে ঘুমন্ত আরিফকে বাসা থেকে তুলে আনে পুলিশ।আজ কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।একয়দিন সে তার নাতিকে একবারও দেখেনি।আন্দোলনের দিনেও আরিফ রাজমিস্ত্রির সাথে কাজ করেছে।সারাদিন কাজ করে শরীরটা ভালো না লাগায় ঘুমিয়ে পড়ে বাসায় এসে। ঘুমন্ত আরিফকে পুলিশ গিয়ে তুলে নিয়ে আসে।
আমি এখন খামু কি।আমার নাতি ছাড়া তো আর আমারে খাওয়ানোর কেউ নাই। আমার এতিম নাতিটারে কেন তোরা তুইলা আনলি রে।আমার নাতি তো তোগো কিছু করে নাই। কারো কোন ক্ষতিও করে নাই-এভাবেই বিলাপ করে আরিফের দাদী বলতে থাকেন।
এসময় নাশকতা মামলায় গ্রেফতার আরেক আসামীর মা আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে বলতে দেখা যায়।আল্লাহ তোগো বিচার করবো।তোগো বিচারের দিন আইসা পড়ছে।তোরা বিনা অপরাধে মানুষদের গ্রেফতার করতাসস।আমার পোলায় তো তোদের কিছু করে নাই।আল্লাহ তোগো বিচার করবো।খুনি হাসিনা আল্লাহ তোর বিচার করবো।এভাবে নিরাপরাধ মানুষদের এনে হয়রানি করতাস।আর কতদিন জুলুম করবি।জুলুমের শেষ সময় চলে আসছে।আল্লাহ ছাড় দেয় কিন্তু ছেড়ে দেয় না।
এভাবে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানা থেকে নাশকতা মামলায় গ্রেফতার করা আসামীদের আদালতপাড়ায় স্বজনদের বিলাপ দেখা যায়।আদালতপাড়ায় স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হতে দেখা যায়।