ষ্টাফ রিপোর্টার:
নারায়নগঞ্জের বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে জনতার ব্যানারে এরা কারা! নৈপথ্য নায়ক শীর্ষ সন্ত্রাসী শরীফ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। কুতুবপুর – নয়ামাটি এলাকাবাসী চিহ্নিত সন্ত্রাসী,মাদক সম্রাট, চাঁদাবাজ,ভূমিদস্যু শরিফ ও তার ভাই মাদক সম্রাট বাদশাকে গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছে।
শরীফ ও বাদশা ছাত্রদেরকে ব্যবহার করে বিভিন্ন নেতাদের নামে কুৎসা রটিয়ে নিজেকে নিরাপরাধ প্রমাণ করার জন্য এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বলে অভিযোগ করেন কুতুবপুর- নয়ামাটি এলাকাবাসী।
তারা বলেন, যাদেরকে নিয়ে বিশেষ করে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অস্ত্র বাজ শাহ নিজাম, ফতুল্লা থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাইজুল ইসলাম ও যুবরাজ বলে খ্যাত আজমেরী ওসমানের সহযোগী আমিরকে নিয়ে বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের ও জাতীয় পার্টির সভা- সমাবেশে যোগদান করেছে শরীফ ও তার সাঙ্গ পাঙ্গরা। আওয়ামী সরকারের পতন হলে রাতারাতি ভোল পাল্টে সুচতুর শরীফ,তার ভাই বাদশা নারায়ণগঞ্জের আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী বিএনপির নামধারী নেতা জাকির খানের অনুসারী বনে যায়। এমন কি নারায়ণগঞ্জ আদালতে জাকির খানের জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় বিশাল হোন্ডা মহড়া দেয় শরীফ ও তার সহযোগীরা।
পাঠকদের অনুরোধে সংবাদটি আবার প্রকাশ করা হলোঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগষ্ট দেশ থেকে পালিয়ে যায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় ২১ দিনের ছাত্র-জনতার এ আন্দোলনকে দমাতে সরকার আইন-শৃংখলা বাহিনী ও তার অনুগত ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের সন্ত্রাসীদের অস্ত্র-শস্ত্রে লেলিয়ে দেয় আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার উপর। সরকারের পেটোয়া বাহিনীর নির্বিচারে গুলি ও দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে অনেক শিক্ষার্থী ও সাধারন মানুষ নিহত হয়েছে। তাদের ক্ষমতালোভী মনোভাব ঘরে থাকা মা ও শিশুও রক্ষা পায়নি। ছাত্র-জনতা সেই আন্দোলনের ফসল বাংলার জমিনে উঠে আসে ৫ আগষ্ট। নতুনভাবে বিজয় অর্জন করতে সক্ষম হয় প্রায় ১৫ বছর অস্ত্রতন্তের রাজনীতিতে জড়িত আওয়ামীলীগকে হঠাতে। যার ফলে পরবর্তীতে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয় নোভেল জয়ী ড.মুহাম্মদ ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রেখে। অন্তবর্তীকালীন সরকারে দুইজন সমন্ময়কারীও রয়েছেন।
কিন্তু ৫ আগষ্টের পুরো দেশেই চলে অনাকাঙ্খিত কিছু ঘটনা। যেখানে বিএনপির কতিপয় নেতাদের সাথে আওয়ামীলীগের ভাড়াটে ( আতাঁতকারী) যুক্ত হয়ে চালায় অগ্নিকান্ড,ভাংচুর ও লুটপাটের তান্ডবলীলা। তবে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জড়িতদেরকে অনেকটাই দেখা যাচ্ছেনা। কিন্তু তাদের রয়ে যাওয়া সম্পদগুলো দখলে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে নামধারী কতিপয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ। আর এ ক্ষেত্রে ছাত্র-জনতার ব্যানারে বিভিন্নস্থানে ছাত্র নয় এমন কিছু ছেলেদের দিয়ে মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ মিছিল করাচ্ছে একদল সুবিধাবাদী চক্র। যা দীর্ঘ ২১ দিনের আন্দোলনে নিহত শত শত শিক্ষার্থী ও সাধারন মানুষের রক্তকে অনেকটাই কলুষিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়ে উঠেছে।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের শিবু মার্কেট এলাকায় দীর্ঘ ১৫ বছর আওয়ামীলীগের ব্যানারে রাজনীতি করা শরীফ হোসেন তার ভোল পাল্টে রাতারাতি বিএনপির নেতা সেজে ছাত্র-জনতার ব্যানারে মাদক ব্যবসায়ী ও ভুমিদস্যুসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে নিয়ে একটি মানববন্ধন করেন। সেখানে ছাত্র পরিচয়ে যে ছেলেটিকে দিয়ে বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে সে আদৌ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিল কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাস্তার পাশে থাকা সাধারনগুলোর মাঝে। তবে সেখানে যে নয়ামাটি-লামপাড়া এলাকার একাধিক মাদক ব্যবসায়ী ও ভুমিদস্যু উপস্থিত ছিলেন তা বুঝতে বাকী ছিলনা অনেকের মাঝে। আবার দুপুর ১২টায় লিংক রোডের সাইন বোর্ড এলাকা থেকে আওয়ামীলীগ নেতা রাজ্জাক বেপারীর সাথে রাজনীতি করার অপরাধে সেখান থেকে আলাউদ্দিন নামে ব্যবসায়ীকে মারধর করে ফতুল্লা থানায় নিয়ে আসেন জেলা শ্রমিক দলের শিপলু ও সঞ্জয় নামে দুই নেতা। তবে এক্ষেত্রে তারা কয়েকজন ছাত্রকে ব্যবহার করেছেন তারা। প্রচন্ড মারধর করে আলাউদ্দিনকে ফতুল্লা মডেল থানায় নিয়ে আসলেও থানা পুলিশ হাসপাতালে কাগজপত্র ছাড়া আলাউদ্দিনকে থানায় রাখতে অপারগতা প্রকাশ করলে পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান তারা। এ সময় সাংবাদিকরা জানতে চাইলে শ্রমিকদল নেতা শিপলু একটি মুঠোফোনে রাজ্জাক বেপারীর সাথে আলাউদ্দিনের হাতে দেশীয় অস্ত্রের একটি ছবি দেখান। যদি আহত আলাউদ্দিনের দাবী,সাইনবোর্ড এলাকায় তারা একটি সমিতির কাজে থাকাবস্থায় সেখান থেকে শিপলুগংরা তাকে উঠিয়ে এনে মারধর করে থানায় নিয়ে আসেন। সর্বশেষ জানা যায়,প্রায় লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে বিকেলে নাকি ভুইগড় এলাকায় দেনদরবার শেষে আলাউদ্দিনকে মুক্ত করা হয়।
শিবু মার্কেট ও সাইনবোর্ড এলাকার মত প্রায় এলাকাতে বর্তমানে নামধারী বিএনপি নেতারা কথিত ছাত্রদেরকে ব্যবহার করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। তবে প্রতিটি এলাকায় বসবাসকারীদের মতে, এসকল বিষয়গুলোর প্রতি ছাত্র নেতাদের দৃষ্টি দেয়া একান্ত প্রয়োজন। কারন সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় প্রতিটি শিক্ষার্থীই কোন না কোন নেতৃত্বের মাধ্যমেই তাদের আন্দোলন কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। কিন্তু বর্তমানে ছাত্রদের নাম ব্যবহার করে কোথাকার কোন ছাত্রদেরকে নিয়ে পাড়া-মহল্লায় কথিত এ নেতারা অনৈতিকভাবে টাকা কামানোর মহোৎসবে মেতে উঠেছে তাও তাদেরকে চিহিৃত করা উচিত। নতুবা তাদের এ সফল আন্দোলনকে মুষ্টিমেয় কিছু সুবিধাবাদী অর্থলোভী নামধারী বিএনপি নেতাদের কারনে ভুলুণ্ঠিত হতে পারে। তবে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সুবিধাভোগী যে সকল অছাত্ররা এরুপ অপরাধে জড়িত হচ্ছে তাদের বিষয়ে সোচ্চার হওয়া অতীব প্রয়োজন। এ প্রতিটি থানার পুলিশ সদস্যরা যদি একটু সোচ্চার হয়ে তাদের ভুমিকা পালন করে তাহলে নামধারী ঐসকল বিএনপি নেতাদের পাশাপাশি তাদের সাথে যুক্ত হওয়া সে সকল অছাত্রদেরকেও খুজে বের করার কঠিন কোন কাজ নয়। অথ্যাৎ কোন সাধারন কিংবা আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন এ ধরনের মানুষগুলোকে যদি তারা ধরে এনে থানায় সোপর্দ করতে চায় তাহলে প্রতিটি থানা এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী ছাত্র নেতাদের সাথে যোগাযোগ করলেই বেড়িয়ে আসবে ছাত্র এবং অছাত্র বিষয়টি।
কুতুরপুর নয়ামাটি এলাকাবাসী জানান,শীর্ষ সন্ত্রাসী, চাদাঁবাজ,মাদক বিক্রেতা,ভূমিদস্যু সহ নানান অপকর্মের হোতা শরীফ ও তার ভাই যে সকল নেতাদের বিরুদ্ধে ফাঁসি দাবী করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করিয়েছে সেই শাহ নিজাম,ফাইজুল ইসলাম,আজমেরী ওসমানের ক্যাডার আমিরের সাথে মিলে গত ১৭ বছর যাবত ব্যবসা বানিজ্য সহ নানান অপকর্ম করে বেড়াতো। অথচ ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে রাতারাতি পল্টি মেরে বিএনপির শীর্ষ সন্ত্রাসী জাকির খানের অনুসারী বনে যায় মাদক,চাঁদাবাজি,ভূমিদস্যুতা সহ একাধিক মামলার আসামি শরীফ।এ ব্যাপারে শরীফ বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সচেতন এলাকাবাসী।