করোনা যোদ্ধা টনি ডোম এর কর্মসংস্থান ও আবাসন ফিরে দেয়ার জন্য
জাগো নারায়ণগঞ্জ:
নারায়নগঞ্জ সিটি করপোরেশন মাসদাইর শ্মশান ঘাট নিবাসী কোভিড-১৯ এ করোনা যোদ্ধা টনি ডোম এর কর্মসংস্থান ও আবাসন ফিরে পাওয়ার জন্য নারায়নগঞ্জ জেলা সাতগ্রাম ডোম সমাজ পঞ্চায়েত কমিটি ও যুবক উন্নয়ন কমিটির পক্ষ থেকে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার ( ২৬ এপ্রিল ) বাদ মাগরীব ফতুল্লা শাহ ফতেউল্লাহ কনভেনশন হলে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ এর মহাসচিব নির্মল চন্দ্র দাস,বিশেষ অতিথি হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুজা উদযাপন কমিটির সাধারন সম্পাদক শিখন সরকার শিখন এর উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও গুরুত্বপুর্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনি উপস্থিত থাকতে পারেনি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডোম সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ, কেন্দীয় কমিটি ঢাকা, বাংলাদেশ ডোম সমাজ, উন্নয়ন কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ, নারায়নগঞ্জ জেলা কমিটি নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ওয়াকার্স ইউনিয়ন কমিটি ভোম সমাজ পঞ্চায়েত কমিটি, টানবাজার সিটি কলোনী নাঃগঞ্জ, নাঃগঞ্জ জেলা সাত গ্রাম ডোম সমাজ পঞ্চায়েত কমিটি,হাজারীবাগ সিটি কলোনী ডোম সমাজ পঞ্চায়েত কমিটি ঢাকা মহানগর হরিজন ঐক্য পরিষদ হরিজন সমাজ সেবা সংঘ, টানবাজার সিটি কলোনী নাঃগঞ্জ পোস্তগোলা ডোম সমাজ পঞ্চায়েত কমিটি, ঢাকা লাল বেগী পঞ্চায়েত কমিটি নারায়নগঞ্জ টানবাজার ডোম সমাজ পঞ্চায়েত কমিটি,টঙ্গী ডোম সমাজ পঞ্চায়েত কমিটি, গাজীপুর, ঢাকা মহাখালী ডোম সমাজ পঞ্চায়েত কমিটি, ঢাকা এগারো গ্রাম ডোম সমাজ পঞ্চায়েত কমিটি, চিটাগাং রোড, নাঃগঞ্জ লালবাগ ডোম সমাজ পঞ্চায়েত কমিটি, শাশানঘাট, ঢাকা গোপিবাগ ডোম সমাজ পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকগন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, জেলা সাতগ্রাম ডোম সমাজ প্রধান নন্দলাল ডোম,সিনিয়র সরদার শংকর ডোম,সরদার বিশু ডোম এবং সরদার নয়ন ডোম।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, প্রায় এক বছর যাবত কি অপরাধে মাসদাইর শ্মশান ঘাট নিবাসী কোভিড-১৯ এ করোনা যোদ্ধা টনি ডোম বাহিরে রাখা হয়েছে এবং চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে তা আমরা কেউ জানিনা। তবে এতটুকু বুঝতে পেরেছি যে পৌর শ্মশ্মানটি এখন অপরাধী ও দূর্নীতিবাজদের দখল রয়েছে। যার প্রতিবাদ করাতেই আজ টনি ডোমকে শ্মশ্মান থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। তারা বলেন,শ্মশানে একটি লাশ দাহ শেষে একডেগ খিচুরীর জন্য ৬ হাজার টাকা দিতে হয়,একটি লঅশ দাহ শেষে ১২ থেকে ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে সেখানে দ্বায়িত্বপ্রাপ্তদের। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে একটি লাশ দাহ করতে কি পরিমানে লাকড়ি ও একডেগ খিচুরী রান্না করতে কি পরিমানে চাউল-ডাল লাগে তা আমাদেরকে বুষিয়ে বলবেন। এখানে সবচেয়ে বেশী দূর্নীতি করছে কাউন্সিলর অসিত বরন বিশ^াস ও শান্তি ঘোষাল। তাদের দুইজনের ইঙ্গিতেই সব কিছু হচ্ছে শ্মশানের ভেতরে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ঈশ^র লাল ডোম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন যে কোন ডোম কিংবা হরিজন সম্প্রদায়কে বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ করা যাবেনা অথচ সিটি মেয়র ডা: আইভী প্রধানমন্ত্রীর কথাকে অমান্য করে শুধুমাত্র কান কথায় নির্ভর করে টনিকে চাকুরীচ্যুত করে এবং বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ করে। টনির অপরাধ সে শ্মশানের ভেতরে ঘটে যাওয়া অপরাধগুলোর প্রতিবাদ করতো। টনির বাবা ও দাদাও কিন্তু এ শ্মশানে থেকেই জীবনাবাসন করেছেন। অথচ কি নির্মমভাবে টনিকে এখান থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন,টনিকে উচ্ছেদ করে ওর পুরো পরিবারকে রাস্তায় নামিয়েছেন ঐ দুষ্টচক্রটি। টনি এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টের মাঝেই দিনানিপাত করছে। তিনি আরও বলেন,সিটি মেয়রের সাথে টনি যোগাযোগ করতে গেলেও তার সাথে যোগাযোগ করতে দেয়নি সেই দুষ্টচক্রটি। আমি মেয়র মহোদয়কে বলছি,আপনার শ্মশানের ভেতরে যে সকল অপকর্মগুলো সংগঠিত হচ্ছে তার অনেক ডকুমেন্ট কিন্তু টনির কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। আপনি ওকে একটি বারের জন্য আপনার সাথে দেখা করার সুযোগ এবং সেই ডকুমেন্টগুলো দেখে বলুন কে অপরাধী টনি নাকি যারা দ্বায়িত্বে রয়েছে তারা। অঅমরা শাশা করবো বিচক্ষন মেয়র মহোদয়কে টনি ডোমকে পুনরায় তার কর্মস্থল ও বাসস্থানে প্রবেশের সুযোগ তৈরী করে দিবেন। আর যদি তা না করেন তাহলে আমরা মানববন্ধনসহ মানবতার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে যোগাযোগ করবো।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ এর মহাসচিব নির্মল চন্দ্র দাস বলেন,টনি ডোমের নাম শুনলেই নাকি কাউন্সিলর অসিত বরন বিশ^াস সাহেব লাফিয়ে উঠে বলেন,টনি থাকলে আমি সভাপতিত্ব ছেড়ে দিবো। আমার প্রশ্ন হচ্ছে কেনইবা আপনি টনির নাম শুনলে লাফিয়ে উঠেন আর কেনইবা আপনি সভাপতির পদ ছেড়ে দিবেন। তাহলে কি বুঝবো সকল সমস্যার জন্য কি আপনিই দায়ী ? আপনার দ্বায়িত্বে যদি সকল অপকর্ম হয়ে থাকে তাহলে তো আপনার ভেতরে সমস্যা থাকবেই। টনি যদি কোন অপরাধ কওে থাকে তাহলে ওকে আপনারা সতর্ক করবেন কিন্তু তা না করে একেবারে চাকুরীচ্যুত ও বাসস্থনাহীন করে দিবেন এটা কেমন কথা। যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন যে কোন ডোম কিংবা হরিজন সম্প্রদায়কে বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ করা যাবেনা অথচ আপনারা আপনাদের অপকর্ম ঢাকতে গিয়ে সিটি মেয়র ডা: আইভীকে ভুলভাল বুষিয়ে টনিকে বের করে দিলেন। তাহলে কি বুঝবো যে আপনি ও আপনার সাঙ্গপাঙ্গরা মেয়র মহোদয়কে দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথাকে অমান্য করে শুধুমাত্র কান কথায় নির্ভর করে টনিকে চাকুরীচ্যুত করে এবং বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ করেছেন। যদি তাই করে থাকেন তাহলে ভুল করেছেন। আপনাদের ভুলগুলো সংশোধন করুন এবং টনি ডোমকে তার চাকুরীতে পুর্নবহাল করুন ও বাসস্থানে ফিরিয়ে নিন। যদি তা না করেন তাহলে শ্মশানের ভেতরে যে সকল অপরাধের ফিরিস্তি টনির কাছে রক্ষিত রয়েছে তা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন,মানববন্ধন করাসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ম্যাডামের কাছে সবকিছু উপস্থাপন করা হবে।
আলোচনা সভাটি পরিচালনায় ছিলেন নারায়নগঞ্জ জেলা সাতগ্রাম ডোম সমাজ যুব উন্নয়ন কমিটির সদস্যবৃন্দ।