ষ্টাফ রিপোর্টার:
নারায়নগঞ্জের সদর উপজেলাধীন বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার নুপুর আক্তার ও তার স্বামী ফারুকের বিরুদ্ধে দূর্নীতি,অনিয়ম,অর্থ আত্মসাৎ ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে।
বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলীর সাথে অল্প দিনে সখ্যতা গড়ে তুলে নুপুর ও তার স্বামী ফারুক। শওকত আলীর আশীর্বাদে অল্পদিনেই দূর্নীতি,অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে নুপুর-ফারুক দম্পতি।
স্থানীয় সূত্রে জানায় যায়, অসংখ্য দূর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িত মহিলা মেম্বার নুপুরের স্বামী ফারুক নির্বাচনের আগেও চায়ের দোকান চালাতো। নির্বাচনে জয়ী হবার পরেই আওয়ামীলীগের নেতা বনে যান এই ফারুক। আবার আওয়ামীলীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার সাথে সাথে বিএনপি নেতা বনে গেছেন এই ফারুক। মহিলা মেম্বার নুপুরের পাওয়া সরকারি বাজেটের সকল কাজই করতো এই ফারুক।
নুপুর ও ফারুকের বিরুদ্ধে মধ্যনগর কবরস্থানের সামনের রাস্তার ইট তুলে গোপন স্থানে লুকিয়ে রেখে তা বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। এবং সেই লুকিয়ে রাখা ইটের স্তুপের ভিডিও এসেছে প্রতিবেদকের কাছে। এছাড়াও বিভিন্ন রাস্তার ইট তুলে গোপনে বিক্রি করে দেয়া সহ সরকারি বাজেট আত্মসাৎ করে পুরনো ইট ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে রাস্তারঘাট নির্মানের অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানায়, এই নুপুর মেম্বার মধ্যনগরের আপ্তাবউদ্দিন চৌকিদারের ছেলে আব্দুল হামিদের নামে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার টিন এনে তা নিজ বাড়িতে গোয়ালঘর নির্মানে ব্যবহার করেছে নুপুর। এছাড়াও প্রেগন্যান্সি ভাতা,বয়ষ্ক ভাতা,বিধবা ভাতা ইত্যাদি দেওয়ার নাম করে মানুষের কাছ থেকে আইডি কার্ড,ছবি ইত্যাদি সংগ্রহ করে নিজেই সেই অর্থ আত্মসাৎ করে দেওয়ার অভিযোগ ও রয়েছে এই নুপুরের বিরুদ্ধে। তাছাড়া জন্ম নিবন্ধন,জাতীয় পরিচয়পত্র,ওয়ারীশ সার্টিফিকেটের জন্য সত্যায়িত করতে গেলেও টাকা দিতে হয় এই নুপুর মেম্বারকে। সর্বশেষ রশিদ মেম্বারিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানানোর ক্ষেত্রে সহযোগিতার লোভ দেখিয়ে রশিদের কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার ও অভিযোগ রয়েছে ফারুক ও নুপুরের বিরুদ্ধে।
গোপন সূত্রে আরো জানা যায়, টিসিবির কার্ড বিতরনে অতিরিক্ত ৫০ টাকা করে গ্রহন করতো ফারুক। এমনকি নুপুরের স্বামী,শশুর,শাশুড়ী সহ অধিকাংশ আত্মীয়ের নামে টিসিবির কার্ড করে টিসিবির পন্য নিজেরা আত্মসাৎ করে।
আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে বিএনপির কিছু নেতার সাথে লিয়াজু করে এখনো অনিয়ম ও দূর্নীতি করে বেড়াচ্ছে নুপুর ও তার স্বামী ফারুক। সর্বশেষ ১৮ অক্টোবর তারিখে বক্তাবলীতে নারায়নগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গিয়াসউদ্দিনের জনসভায় বিএনপির মিছিলেও দেখা গেছে এই ফারুককে। এদিকে প্রশাসনের সহায়তায় সঠিক তদন্ত করে মহিলা মেম্বার নুপুর ও তার স্বামী ফারুকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নারায়নগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নারায়নগঞ্জের জেলা প্রশাসকের প্রতি আহবান করেছে এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে ইউপি মেম্বার নুপুর আক্তারের ব্যবহৃত মুঠোফোনে (০১৯৬৯৭৭৮৯@@) জানতে চাইলে তিনি অত্র প্রতিবেদককে জানান,শুধু কি আমার বিরুদ্ধেই এ অভিযোগ এসেছে নাকি অন্য মেম্বারদের বিরুদ্ধেও। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট দাবী করে তিনি বলেন,সবকিছু বানোয়াট তথ্য। কবরস্থানের রাস্তার বিষয়ে ইউএনও স্যার বলেছেন যে,ইট তুলে শুধুমাত্র ঢালাই দিতে তাই উক্ত ইটগুলো তুলে ফেলা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে শত্রুতা করেই হয়তবা এ সকল মিথ্যা তথ্য দেয়া হয়েছে।