ষ্টাফ রিপোর্টার:
গত ৪ আগষ্ট এক দফা দাবীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা কেন্দ্রীয় কর্মসূচী ‘অনির্দিষ্টকালের অসহযোগ আন্দোলন’ এ নারায়ণগঞ্জে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে গুলি না চালানোর পুলিশের সমঝোতার পরই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর নির্বিচারে গুলি চালানোর আজ এক মাস। সেদিন অর্ধশতাধিকের উপর শিক্ষার্থী ও একাধিক গণমাধ্যমকর্মী আহত হবার ঘটনা ঘটেছিলো।
সেদিন ঠিক বেলা সাড়ে ১২ টায় নারায়ণগঞ্জ হেরিটেজ স্কুলের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও জনতা অবস্থানকালে পুলিশ আন্দোলনকারীদের হাতজোড় করে মাফ চেয়ে গুলি না করার প্রতিজ্ঞা করে। অন্যদিকে আন্দোলনকারীরাও পুলিশের উপর ঢিল ও ইট নিক্ষেপ না করার প্রতিজ্ঞা করে। দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান করার কথা জানিয়ে সড়কে বসে পড়ে। সেই ৪ আগষ্ট আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সড়কে বসার সাথে সাথেই পুলিশ গুলি ছুড়ে। এতে বসারত অবস্থায় প্রায় অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ ও একাধিক গনমাধ্যামকর্মী আহত ও গুলিবিদ্ধ হয়।
এর আগে নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জানাতে চাষাড়ামুখী ছাত্র ও জনতা একটি মিছিল নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। জেলা পরিষদ অগ্নিসংযোগ করার পর বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হামলা চালায়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান ফটক ভাংচুর করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে প্রবেশের চেষ্টা করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রশাসকের কার্যালয়ে অবন্থানরত পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও টিয়ারশ্যাল নিক্ষেপ করলে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ করে জেলা পুলিশের কার্যালয় হামলার চেষ্টা চালায়। এসময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের কাছে আত্মসমর্পণ করলে আন্দোলনকারীরা সড়কের দিকে অগ্রসর হয়।
আন্দোলনকারীরা চানমারী অবস্থান নেন এবং চাষাড়ার আন্দোলনকারী কিছু শিক্ষার্থী তাদের সাথে যুক্ত হয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে। তারপরই পুলিশের সাথে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে একটি সমঝোতা হয় গুলি না ছোড়ার। বিনিময়ে শিক্ষার্থীরাও ইট পাটকেল ছুড়বে না। পরে পুলিশ রাবার বুলেট,টিয়ারশ্যাল,টিয়ারগ্যাস চালাই। এতে প্রায় অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী ও একাধিক গণমাধ্যমকর্মী গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়।
সেদিন গণমাধ্যম কর্মীদেরও হতে হয়েছিলো হেনস্তা। অকথ্য ভাষায় করা হয় গনমাধ্যমকর্মীদের গালিগালাজ ছবি তুলতে গেলে। একই সাথে সেখান থেকে চলে যেতেও বাধ্য করা হয় । ডেইলি স্টার,প্রথম আলো সহ একাধিক পত্রিকার সাংবাদিক সেদিন সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়।