ষ্টাফ রিপোর্টার:
গত বছরের ৫ আগষ্ট পর্যন্ত তিনি ছিলেন মুজিববাদী সংগঠন আওয়ামীলীগের। কিন্তু ৫ আগষ্টে পটপরিবর্তনের পরই তিনি এখন জাতীয়তাবাদী আদর্শে নিমজ্জিত হয়েছেন। তিনি হলেন সস্তাপুর এলাকার মোহাব্বত হাজীর ছেলে এবং ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ম সম্পাদক এসকে শাহীনের বড়ভাই হারুন অর রশিদ। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পালালেও পালাতে হয়নি হারুনদেও মত দোসরদেরকে। কারন এ আওয়ামী দোসররা এখন অনেকটাই নিরাপদে রয়েছেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতৃবৃন্দ শুধুমাত্র আত্মীয়তার সুত্রে। আর এ সুত্র যেন আওয়ামী ডেভিলকে নিরাপদেই রাখেনি এখন বিএনপির নেতা বানিয়ে ফেলেছেন আর পাশাপাশি অন্তবর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। পুরো জেলা জুড়েই আওয়ামী দোসরদেরকে নিরাপদে নিজ বাড়িতেই বসবাসের সুযোগ কওে দিয়েছেন অর্থলোভী কিছু নামধারী বিএনপির নেতৃবৃন্দরা। তবে ফতুল্লা থানাধীন প্রতিটি পাড়া-মহল্লাতেই ঘাপটি মেরে অবস্থান করছেন এ ডেভিলরা।
তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক এসকে শাহীনের বড়ভাই শামীম ওসমানের সিপাহসালার অন্যতম সৈনিক ভুমিদস্যুতার শিরোমনি মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজামের ক্যাডার মো.হারুন অর রশিদ এখন ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা হিসেবে আর্বিভুত হয়েছেন। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন এবং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি-সেক্রেটারীর ছবি সম্বলিত পোষ্টারে ছেয়ে ফেলেছেন পুরো শিবুমার্কেট ও লামাপাড়ার আশপাশ এলাকা। আওয়ামী মুজিব কোর্ট যতœসহকারে আলমারীতে রেখে এখন সাদা পাঞ্জাবী পরিধান করেই বিএনপিতে যোগদান করেছেন এবং নিজের ছোটভাই এসকে শাহীনের সাথেই সামনে থেকে মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আর এ দৃশ্য যেন জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ করছেন এসকে শাহীনদের মত অযোগ্য বিএনপির নেতা পরিচয়দানকারীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সস্তাপুরসহ আশপাশ এলাকার অনেকেই জানান, মো.মোহাব্বত হাজীর ছেলে হারুন ছিলেন পতিত সরকারের অন্যতম দোসর শামীম ওসমান ও শাহ নিজামের অন্যতম ক্যাডার। থানা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মো.ফাইজুল ইসলামের বাহিনীর সাথেই ছিল তার সখ্যতা। আর এ সখ্যতায় বিভিন্ন অপকর্ম করে বনে গেছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। ছোটভাই স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা এসকে শাহীনের ছায়াতলে থেকে নিজের কৃত অপরাধগুলো যেন ক্ষমার তালিকায় চলে গেছে। যা আইন সবার জন্য সমান হলেও তা যেন নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন এসকে শাহীন। শুধু তাই নয় ভাই হারুন অর রশিদকে গিয়াসউদ্দিন বলয়েও প্রবেশ করিয়ে পুরোটাই নিরাপদে রেখেছেন আওয়ামী এ ডেভিলকে। আর এসকে শাহীন রয়েছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সদ্য বহিস্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মো.চৌধুরী বলয়ে।
অথচ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা রয়েছে যে কোন আওয়ামী দোসর যেন বিএনপিতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে। কিন্তু দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে আওয়ামী ডেভিল হারুন অর রশিদ মোটা অংকের টাকা বিনিময়ে নাকি বিএনপিতে অনুপ্রবেশ করেছেন এমনটাই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে পুরো এলাকা জুড়ে।
তারা আরও বলেন,গত মাসখানেক পুর্বে মিছিল করার অভিযোগে ফতুল্লায় কয়েকজন যুবলীগ নেতা পুলিশ আটক করেছে অথচ হারুনের বাড়ির সামনে থেকে আওয়ামী দোসরদেরকে পুলিশ আটক করলেও আটক হয়নি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার উপর হামলাকারী এ হারুন। যিনি পুরোটাই নিরাপদে রয়েছেন শুধুমাত্র ছোটভাই বিএনপির নেতা হবার সুবাদে এবং ভাইকে নব্য বিএনপি বানিয়ে। তারা আরও বলেন,জুলাই-আগষ্টে শিবু মার্কেটসহ আশপাশ এলাকায় শাহনিজাম ও ফাইজুলের নির্দেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর নির্বিচারে হামলা চালায় হারুনের নেতৃত্বে কয়েক শতাধিক আওয়ামী দোসর। জালকুড়ি এলাকায় শামীম ওসমানের মালিকানাধীন শীতল গাড়িতে অগ্নিসংযোগের পর সাংসদ শামীম ওসমান ও তার ছেলে অয়ন ওসমানের সাথে স্বশস্ত্র অবস্থায় নির্বিচানে গুলি ও হামলা চালায় হারুনের নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্যরা। সেই সময় প্রচুর দেশীয় অস্ত্রের সমাহার ছিলো এ হারুনের কাছে বললেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা। তাদের দাবী,জুলাই-আগষ্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যে অস্ত্রগুলো ব্যবহার করেছিলো হারুন ও তার বাহিনীর সদস্যরা তা বর্তমানে নাকি তার ভাইয়ের হেফাজতে রয়েছে।
তারা আরও বলেন, হারুনের মত একজন স্বৈরাচারের দোসর কিভাবে বিএনপিতে অনুপ্রবেশ করে যদি এখনও উন্মুক্ত পরিবেশে প্রকাশ্যে চলাচল করতে পারে এবং পুর্বের ন্যায় কার্যক্রম চালাতে পারে তাহলে তো অন্তবর্তী সরকারের প্রতিটি কার্যক্রমই বাধাগ্রস্ত হবে। কারন হারুনের মত আওয়ামী দোসররা এখনও শামীম ওসমান ও শাহ নিজামের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ করে গোপন মিটিংয়ের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নব্য বিএনপির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে।
তাই অনতিবিলম্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার উপর হামলাকারী শামীম ওসমান ও শাহ নিজামের অন্যতম সহযোগি নব্য বিএনপি হারুন অর রশিদ রশিদ কিভাবে বিএনপিতে অনুপ্রবেশ করে তা উদঘাটনের জন্য জেলা বিএনপির দ্বায়িত্বে থাকা নেতৃবৃন্দেও দৃষ্টি আকর্ষন করেন এবং আওয়ামী দোসর ও নব্য বিএনপির এ নেতাকে দ্রুত আইনের আওতায় নেয়ার জন্য জেলা পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন সস্তাপুর ও শিবুমার্কেটসহ আশপাশ এলাকার সচেতন সাধারন মানুষ।
এ বিষয়ে ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাসান মাহমুদ পলাশের ব্যবহৃত মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিটিতে তার ( হারুন অর রশিদ ) নাম রয়েছে কিনা। আমার এবং দলের নাম ভাঙ্গিয়ে অনেকেই বিএনপি নেতা পরিচয় দিতে পারে।