ষ্টাফ রির্পোটার:
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি শামীম ওসমানের অন্যতম সহযোগী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম- সম্পাদক শাহ্ নিজাম,ফতুল্লা থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাইজুল ইসলাম ও আজমীর ওসমানের সেকেন্ড ইন কমান্ড কাজী আমির এর সৈনিক ফতুল্লা থানার্ধীন কুতুবপুর ইউনিয়নের লামাপাড়া- নয়ামাটি- কুতুবপুর এলাকার ভয়ংকর সন্ত্রাসী শরীফ হোসেন। যার নামে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক, চাঁদাবাজি, অস্ত্র, জমিদখলের মামলা রয়েছে।
সেই শরীফ হোসেন এখন ভোল পাল্টে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা,স্বাধীনতার ঘোষক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও ৩ বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর নাম ব্যবহার করে কোকো স্মৃতি সংসদ ফতুল্লা থানা কমিটির আহবায়ক পরিচয় দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আদৌ এই নামে বিএনপির অনুমোদিত কোনো সংগঠন রয়েছে কিনা সন্দেহ রয়েছে।
আওয়ামীলীগ এর আমলে পিঠ বাঁচাতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ্ নিজাম,ফতুল্লা থানা যুবলীগ সাধারন সম্পাদক ও ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফাইজুল ইসলাম এবং আজমীর ওসমানের অন্যতম সহযোগী কাজী আমির এর সাথে মিল দিয়ে বিভিন্ন সময় সভা-সমাবেশে যোগদান করেন ও তাদের হয়ে নানা কর্মকান্ড পরিচালনা করতেন ভয়ংকর সন্ত্রাসী শরীফ হোসেন।
গত বছরের ২০ এপ্রিল অস্ত্র ও মাদক সহ তার নিজ বাড়ী থেকে তার ছোট ভাইকে আটক করেছিল ফতুল্লা থানা পুলিশ।
৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র ও জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেলেও শরীফ হোসেন আধিপত্য বিস্তারের একক নিয়ন্ত্রন তার অনুকূলে রাখার জন্য নারায়নগঞ্জের কুখ্যাত সন্ত্রাসী জাকির খানের একনিষ্ঠ কর্মী বনে যান।
এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান হতে মালামাল নামানো এবং চাঁদা আদায় করার কাজ সহজ করতে কোকো স্মৃতি সংসদের ফতুল্লা থানা কমিটির আহবায়ক পরিচয় দিয়ে বেড়াচ্ছেন ।
বর্তমানে শরীফ আধিপত্যকে ধরে রাখতে এলাকায় বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে অস্ত্রের মহড়া চালাচ্ছে। তার সাথে রয়েছে শীর্ষ সন্ত্রাসী ক্রসফায়ারে নিহত রকমতের একসময়ের সহযোগী বাদশা,নিজাম,জামাই মনির,মেহেদী,সৌরভ, রাজ উল্লেখ যোগ্য। শরীফ নিজেও রকমতের একজন সহচর ছিলো।
তবে গত ৫ আগষ্ট কোটা সংস্কারের আন্দোলনের তোপের মুখে পড়ে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যায়। সেই সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলার আওয়ামী লীগের সকল এমপি,শীর্ষ নেতারা আতœগোপনে চলে গেলেও শরীফ হোসেন বিএনপি নেতা পরিচয়ে গত কয়েকদিন পূর্বে এলাকায় প্রায় শতাধিক হোন্ডা নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দেয়।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র- জনতা আন্দোলনের গনহত্যায় জড়িত থাকায় শরীফের বিরুদ্ধে ৩ টি মামলা হয়।
২০০৩ সালে কুতুবপুর মীর হোসেনের বাড়ী থেকে পুলিশের লুট করা শটগান অস্ত্র সহ শরীফকে আটক করে ফতুল্লা থানা পুলিশ। এছাড়াও ২০১৫ সালের ২২ আগষ্ট কুতুবপুর নয়ামাটি এলাকার নাজমা বেগমকে মারপিট করে , জখম,প্রাণ নাশের হুমকী ও চুরির ডাকাতির অভিযোগ এনে শরীফ, বাদশাসহ আরো একাধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ্য করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ৬৬।
২০১৬ সালের ২রা আগষ্ট র্যাব-১১ এর অভিযানে বিপুল পরিমান মাদক ও বিক্রির নগদ অর্থ সহ আটক হয় তার ভাই বাদশা সহ চার জন সহযোগী ।
২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর র্যাব-১১ এর অভিযানে মাদক বিক্রির নগদ অর্থ ও মাদক সহ আটক হয় শরিফ হোসেন।এসময় তাদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মাদক মামলা রুজু করা হয়। ২০১৮ সালের ২১ জুলাই চুরির মামলায় শরীফ সহ আরো একাধিক অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তবে এরা একাধিক বার জেলা গোয়েন্দা, পুলিশ, র্যাব এর হাতে মাদক ও অস্ত্র সহ নানা অপরাধে আটক হয়।
নানান অপকর্মের হোতা শরীফ হোসেন আধিপত্য ধরে রাখতে এখন জিয়া ও বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর নামে কোকো স্মৃতি সংসদের ফতুল্লা থানা কমিটির আহবায়ক পরিচয় দিয়ে দলবল সহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মহড়া দিচ্ছে ওয়েস্টিজ মালামাল ও ঝুট নামানোর জন্য।
এ ব্যাপারে ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. আব্দুল বারী ভূইয়া মুঠোফোনে বলেন,কোকো স্মৃতি সংসদ নামে কোন সংগঠন নেই। শরীফ হোসেন আওয়ামী লীগের অনুচর।