ষ্টাফ রিপোর্টার:
ফতুল্লার ঐতিহ্যবাহী হরিহরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা লুৎফুন্নেছার দূর্নীতির অভিযোগ তদন্তের দাবী করেছেন স্থানীয়রা। একই সাথে লুৎফুন্নেছার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের পর একের পর এক দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অপরদিকে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেয়ায় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক অভিভাবক সদস্য আবু হানিয়ের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ করেছেন লুৎফুন্নেছা।
এদিকে স্থানীয়দের মাধ্যমে লুৎফুন্নেছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের একটি ফাইল হাতে এসেছে গণমাধ্যম কর্মীদের। সেই ফাইলের তথ্য অনুযায়ী ২০২৩ সালে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে যোগ্য প্রার্থীদের পিছনে ফেলে তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের অভিযোগটি রয়েছে। ২০২৩ সালে ৪১৩ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে কোচিং ফি’র নামে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে লুৎফুন্নেছার বিরুদ্ধে।
প্রধান শিক্ষিকা লুৎফুন্নেছার কন্যা ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার পরীক্ষার্থী হওয়ার পরেও এই তথ্য গোঁপন করে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পালন করেন তিনি যা সম্পূর্ন বেআইনী। সহ-প্রধান শিক্ষিকা নিয়োগে দুই শিফটের ব্যাপারে মন্ত্রনালয়ের অনুমতি না থাকার পরও প্রভাতি শাখায় বিশেষ সুবিধায় নিয়োগ দেয়া হয়। সেই নিয়োগ পরীক্ষায় ড্যামী প্রার্থী রাখারও অভিযোগ রয়েছে। প্রধান শিক্ষিকার দূর্নীতি নিয়ে ২০২৩ সালের ১১ আগস্ট নবম শ্রেণীর এক ছাত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি পেইজে স্ট্যাটাস দেন। পরবর্তিতে মামলার হুমকি দিয়ে স্ট্যাটাস ডিলেট করানো হয়। অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এমনকি কর্মচারীদের সাথে অশোভন আচরণের অভিযোগ রয়েছে। চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী সুরুজ মিয়াকে চড় মেরেছিলেন। তাছাড়া স্কুল ফান্ডের টাকা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে প্রধান শিক্ষিকা লুৎফুন্নেছার বিরুদ্ধে।
স্থানীয়দের মাধ্যমে পাওয়া ২৮ পেইজের ফাইলে লুৎফুন্নেছার বিরুদ্ধে অসংখ্যা অভিযোগ রয়েছে। যা এ প্রতিবেদকের কাছে সংগ্রহে রয়েছে এবং খুব শীঘ্রই তা লিখিত অভিযোগ আকারে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে জমা দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন সাবেক অভিভাবক সদস্য বলেন, প্রধান শিক্ষিকা লুৎফুন্নেছার স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির প্রশ্রয়েই তিনি গত এক বছর যাবত স্কুলে নিজের আধিপত্য বিস্তার করে গেছেন। স্কুলের তহবিলের টাকা তিনি ব্যক্তিগত ব্যবসায়ের কাজে ব্যবহার করছেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। স্কুলের নতুন ভবণের জায়গা ক্রয় নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ করেছেন। জমির দাম নির্ধরন করে সভাপতির নামে পাওয়ার নিয়ে পরবর্তিতে দাম বেশি দেখিয়ে স্কুলের নামে রেজিষ্ট্রশন করা হয়।
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা লুৎফুন্নেছার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সকল বিধি মেনেই আমার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। যোগ্যতার ভিত্তিতেই আমি চাকুরী পেয়েছি।
তবে লুৎফুন্নেছার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের গুঞ্জন সত্যতা জানতে বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন স্থানীয়রা।