৭ বছর পর মূখ খুললেন পরিবার
ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
দীর্ঘ ৭ বছর পর বন্দরের সাবদীতে চাঞ্চ্যলকর হাফেজ আনিছ হত্যা প্রসঙ্গে নতুন তথ্য দিয়েছেন নিহতের পরিবার। তৎকালীন সময়ে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতা থাকায় হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালীদের নাম মামলায় উল্লেখ করতে পারেনি বলেও মন্তব্য করেছেন। এছাড়াও নিহত হাফেজ আনিছ এর পরিবারটি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল যার কারণে মামলা করেও প্রশাসনের সহযোগীতা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন পরিবারটি।
পরিবার জানায়, পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে সাবদী বাজারের কালি মন্দিরে ভেতরে হাফেজ আনিছকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই সময়ে সাবদীতে পাহাড়ায় ছিলেন তৎকালীন কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের তিনজন মেম্বার। তারা হলেন জামান, মোসলেউদ্দিন, মনির হোসেন মেম্বার ও সাবদী এলাকার খোকনও উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, খোকন কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মোঃ দেলোয়ার হোসেন প্রধানের সহকারি। এছাড়াও হত্যার ঠিক আগ মুহুর্তেও হাফেজ আনিছ এর সাথে ফোনে ১২ মিনিট কথোপকথন হয় দেলোয়ার প্রধানের সাথে। এর কিছুক্ষণ পরই মন্দিরের ভেতরে কুপিয়ে হত্যা করা হয় হাফেজ আনিছকে।
জানা গেছে, আনিছ হত্যার সময় কলাবাগ এলাকার হারুণ মিয়ার ছেলে স্বজল, জাতীয় পার্টির নেতা শাহ আলম, পারভেজ, পালকিওয়ালার ছেলে রুবেল। ওই সময় অস্ত্র, চাপাতি ও লোহার পাইপ নিয়ে মন্দিরের ভিতর প্রবেশ করে সজল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীরা। মন্দিরের ভেতরে গিয়ে হাফেজ আনিসকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে পালিয়ে যায়। সাবদি বাজারে আনিছকে খুন করার সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অনেক প্রভাবশালী লোকজন উপস্থিত থাকলেও তারা অদৃশ্য শক্তির ইশারায় মূখ বন্ধ ছিল। তৎকালীন সময়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, যুবলীগ নেতা খান মাসুদের সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্যতম হাতিয়ার আকিব হাসান রাজুর নাম উঠে আসলেও মামলা থেকে বাদ পড়েন স্থানীয় চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান এমন তথ্য জানিয়েছেন পরিবারটি।
এদিকে, সরকার পতনের পর নিহত হাফেজ আনিছ এর পরিবার মূখ খুলতে শুরু করেছে। তৎকালীন সময়ে যাদের ইশারায় মূখ বন্ধ ছিল তাদের নাম প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। জনপ্রতিনিধি ছাড়াও যুবলীগ নেতা কাজী জহির, বাসুর নামে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এজাহারনামীয় আসামি রুবেল। ড্রেজার ব্যবসার জের ধরেই আনিছকে হত্যা করা হয়েছিল পুলিশের কাছেও স্বীকার করেছে। মূলত: পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিগত বছরের ২৫মে ২০১৭ তারিখ বৃহস্পতিবার সাবদী কলাবাগ এলাকার দিদার হোসেনের ছেলে পারভেজ, তার ভাই ফয়সাল, শামীম একই এলাকার হাজী আবদুল আউয়ালের ছেলে কথিত জাপা নেতা শাহ আলম, হারুন মিয়ার ছেলে সজল, সাবদী এলাকার পালকিওয়ালার ছেলে রুবেল বেলা আড়াইটার সময় পার্শবর্তী মন্দিরের ভেতরে গিয়ে হাফেজ আনিছকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে পালিয়ে যায়।