নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের রূপসীতে অবস্থিত গাজী টায়ার কারখানায় আগুনে পুড়ে যাওয়া ছয়তলা ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ওপরের অংশে উদ্ধারকাজ চালানো খুবই বিপজ্জনক বলে জানিয়েছেন বুয়েটের প্রতিনিধি।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে পুড়ে যাওয়া গাজী টায়ার কারখানা পরিদর্শন শেষে বুয়েটের প্রফেসর রাকিব আহসান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এ সময় তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীবকে সঙ্গে নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের লেদার মেশিন দিয়ে ছাদের ওপর ও বিভিন্ন তলা ঘুরে দেখেন। তবে ওপরের অংশে উদ্ধার অভিযান না হলেও ভবনের বেজমেন্টে কিছু অংশে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান চালাবে বলে জানান।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে বুয়েটের প্রতিনিধি প্রকৌশলী রাকিব আহসান গাজী টায়ারস কারখানা পরিদর্শনে আসেন।
তিনি বলেন, গতকাল রাতে জেলা প্রশাসক বুয়েটকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি সকালে এসে কারখানাটির বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেছি। আমরা খালি চোখে কোনো লাশ দেখতে পাইনি। গতকাল ড্রোন দিয়ে তোলা কিছু ভিডিও ও ছবি দেখলাম। টানা প্রায় তিন দিন ধরে আগুন জ্বলেছে ভবনটিতে। ফলে ভেরতের অনেক অংশ ধসে পড়েছে।
প্রকৌশলী রাকিব আহসান আরও বলেন, ভবনটি ছয়তলা। চার ও পাঁচতলার ছাদ ভেঙে তিনতলার বেজমেন্টে এসে পড়েছে। বিভিন্ন অংশের রড বের হয়ে গেছে। ভবনের আগুন ওপরের দিকে বেশি সময় ধরে জ্বলেছে। ফলে ওপরের দিকে ক্ষয়ক্ষতিও বেশি হয়েছে। ভবনের ভেরতে প্রচুর পরিমাণ কেমিক্যাল ছিল। তৃতীয় তলাসহ বিভিন্ন অংশ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভবনটিতে উদ্ধারকাজ চালানো খুবই বিপৎজনক।
প্রকৌশলী রাকিব আরও বলেন, র্যাংস ভবন যখন ভেঙেছিল, আমরা সেখানেও গিয়েছিলাম। গাজী টায়ার কারখানার অবস্থা তার চেয়েও খারাপ। তবে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ভবনটির নিচতলার বেজমেন্টে উদ্ধার অভিযান চালাবে। ভবনটি ভেঙে ফেলা হলেও খুবই পরিকল্পনা মাফিক ভাঙতে হবে।
এ সময় বৃহত্তর ঢাকার ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক আনোয়ারুল হক বলেন, আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা তদন্ত কমিটির সঙ্গে বসেছিলাম। আমরা ড্রোন ও লেদার দিয়ে ভবনের বিভিন্ন অংশ চেক করেছি খালি চোখে যতটুকু দেখা যায়। আমরা কোন ভিকটিম দেখতে পাইনি। ভবনের বিভিন্ন কলামের রড বের হয়ে গেছে ও ফুলে গেছে। চার ও পাঁচতলার তলার ওপর পড়েছে। এ ভবনে উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব না। তবে আমরা ভবনের নিচে বেজমেন্টে রেসকিউ অপারেশন আজকে চালাবো।
উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত স্বজনদের দাবি অনুযায়ী ১৭৬ জন নিখোঁজ এর তালিকা পাওয়া গেছে। পরে শিক্ষার্থী ও পুলিশের সমন্বয়ে তালিকা হলে সেখানে নিখোঁজের সংখ্যা ১২৯ জন বলে জানা গেছে।