প্রতিটি পন্যের বাড়তি মুল্য
ষ্টাফ রিপোর্টার:
ঈদ ঘনিয়ে আসছে সামনে। ইতিমধ্যেই ১৭ রমজানও শেষ তবু নারায়ণগঞ্জের শপিংমলগুলো ক্রেতা শূন্য। ঈদ পোশাকের দাম বেশির কারনেই নাকি অধিকাংশ শিপিংমলগুলো এমনটাই জানিয়েছে পোশাক ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন শিপিংমলগুলো ঘুরে দেখা যায় এ চিত্র।
আসন্ন ঈদ নিয়ে শপিংমলগুলোতে বেচাকেনার বিভিন্ন বিষয়গুলো নিয়ে পোশাক ব্যবসায়ী ও দোকানীদের সাথে কথা হয়। তারা জানাই মূলত বর্তমান দেশের পরিস্থিতি নাজুক হওয়ায় এবং পোশাকের দাম বেশি হওয়ায় বিগত বছরের তুলনায় এবছর শিপিংমলগুলোতে একেবারেই ক্রেতা শূন্য।
ঈদ আসলেই নারায়ণগঞ্জ শহরের সবচেয়ে বেশি ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় দেখা যায় চাষাড়ার সমবায় মার্কেট। তবে অনেকটাই ফাঁকা ও ক্রেতা শূন্য এই মার্কেট। এবিষয়ে সমবায় মার্কেট এর পোশাক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রাজিবের সাথে কথা হলে তিনি জানান,আপনেরা জানেন ঈদ ছাড়াই সব সময় ক্রেতাদের ভীড় লেগে থাকে এই মার্কেটে।তবে এবছর ঈদ উপলক্ষে বিগত বছরের তুলনায় একেবারে ক্রেতাদের কেনাকাটা তুলনামূলকভাবে কম। এর প্রধান কারনই প্রত্যেকটা পোশাকের দাম অধিক। বাচ্চাদের এক একটা পোশাকের দামই ৩ হাজার টাকা। এসব কারনে এবার এখন পর্যন্ত বেচাকেনা একেবারেই কম অন্যান্য বছরের ঈদের তুলনায়।
একই পরিস্থিতি দেখা যায় পানোরামা প্লাজা, সায়াম প্লাজা ও জামান টাওয়ারেও। ঈদের বেচাকেনার পরিস্থিতি জানতে জামান টাওয়ারের এক পোশাক দোকানী রুবেল হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানা, এবছর মোটামুটি বেচাকেনা হচ্ছে।একেবারেই কম বলা যায়। ১০ রোজা পর্যন্ত তো কোন বেচাকেনাই ছিলো না। ১০ রোজার পর থেকে তাও একটু বেচাকেনা হচ্ছে আগে এত ক্রেতা সংকটে আমাদের পড়তে হয়নি।
হক প্লাজার পোশাক ব্যবসায়ী মিটুর সাথে কথা হলে তিনি জানান, দাম বেশি আর দেশের পরিস্থিতি ভালো না তাই ক্রেতারা আসতাছে না মার্কেটগুলোতে।
আল জয়নাল ট্রেড সেন্টারে গিয়ে দেখা যায় একেবারেই ক্রেতা শূন্য। কিছু কিছু দোকানে সামান্য কিছু ক্রেতাদের উপস্থিতি থাকলেও অন্যান্য দোকানগুলোতে একেবারেই ফাঁকা।
মার্ক টাওয়ারে পোশাকের দোকানগুলো যথারীতি পোশাক ব্যবসায়ীরা খুলে বসে থাকলেও নেই কোন ক্রেতাদের ভীড়। দুই একটা দোকানে কিছুটা ক্রেতাদের লক্ষণীয় হলেও অধিকাংশ দোকানই ক্রেতা শূন্য। অথচ ঈদ ছাড়াই এই মার্কেট এ ক্রেতাদের কেনাকাটার ভীড় সব দোকানগুলোতে লেগেই থাকে। তবে এবছর অর্ধেক রোজা চলে গেলেও এখন পর্যন্ত দোকানগুলোতে ক্রেতা শূন্য। অনেকটা মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে দোকানগুলোর মালিক ও কর্মচারীরা।
এ বিষয়ে মার্ক টাওয়ারে পোশাক ব্যবসায়ী টিটু ঘোষ জানায় ,৩০% ও কাস্টমার আসতেছে। তবে আপনেরা জানেনই এই মার্কেট বহুল পরিচিত একটি মার্কেট। এখানে ঈদ ছাড়াই ভীড় লেগে থাকে অথচ দেখেন ঈদ চলে আসছে কিন্তু ক্রেতা নেই। আর বলেন ক্রেতা আসবেই বা কিভাবে যে পরিমানে দেশে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। মানুষ আছে ইকোনোমিক ক্রাইসিসে। আর তাছাড়া গতবছরের তুলনায় এবছর একটু পোশাকের দামটা বেশি। তাই মানুষ এখন পর্যন্ত মার্কেটগুলো কম আসছে।
নারায়ণগঞ্জে শহরের একেবারে চাষাড়া মোড়ে অবস্থিত শান্তনা মার্কেট। সেখানেও রয়েছে ক্রেতা শূন্য। এখানে পোশাক ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ক্রেতারা এসে পোশাক দেখে দাম জিজ্ঞাসা করেই চলে। কারন প্রতিটি পোশাকের দাম গতবারের তুলনায় একটু বেশি।
কালিবাজার ফ্রেন্ডস মার্কেট কিছুটা ক্রেতাদের ভীড় দেখা গেলেও বিগত বছরের তুলনায় একেবারে ক্রেতা কম বলছেন পোশাক ব্যবসায়ীরা। এবিষয়ে এক পোশাক ব্যবসায়ী অসিম জানান, জীবনে এত বছর ধরে পোশাকের ব্যবসা করি তবে এইবারের মত অর্ধেক রোজা শেষ হয়ে যাচ্ছে এত কম ক্রেতা দেখি নাই। সব সময় প্রথম রোজা থেকেই এই মার্কেটে ক্রেতাদের ভীড় লেগেই থাকে। তবে এবার একেবারেই কম।
একই অবস্থা মিড টাউন শপিং কমপ্লেক্স, আলমাস পয়েন্ট, জিরো পয়েন্ট, আড়ং, টোকিও প্লাজা, লুৎফা টাওয়ার, সোলসটা, আব্দুল হামিদ সুপার মার্কেট, টপ মার্ট, আজাহার সুপার মার্কেট, ডিআইটি মার্কেট, লা রিভ সহ প্রতিটি শিপিংমলগুলোতে।