প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
চলমান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে হামলাকারী হকার নেতা আসাদুল ইসলাম @ আসাদ (নারায়ণগঞ্জ মহানগরের হকার সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর হকার লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক) গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১। বুধবার ( ২৩ অক্টোবর ) রাতে রুপগঞ্জের গাউছিয়া এলাকা হতে আসাদকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসাদুল ইসলাম @ আসাদ সোনারগাঁয়ের বুরুমদী এলাকার মৃত সামসুদ্দিন এর ছেলে।
র্যাবের এএসপি সনদ বড়–য়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, চাষাড়া এলাকায় তার সহযোগী হকাদেরকে নিয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলনরত ছাত্র জনতার উপর হামলা করার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র, পিস্তল, রামদা, চাপাতি, হকিস্টিক,চাইনিজ কুড়ালসহ ঝাপিয়ে পড়ে। ছাত্র ও জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বিফল করার জন্য আসামীগণ একত্রিত হয়ে তাহাদের হাতে থাকা অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে ছাত্র জনতার ন্যায় দাবি থেকে বিতাড়িত করার জন্য আক্রমন করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী হকার নেতা আসাদকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে নিজেকে নারায়ণগঞ্জ মহানগরের হকার সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর হকার লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ পেলেও কয়েক বছর আগেও সে সড়কের ফুটপাতে হকারি করতো। এক সময় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সাথে সখ্যতা তৈরি করে সে হকারদের নেতা হয়ে যায়। ২০১৮ সালে সিটি করর্পোরেশন ও প্রশাসনের ফুটপাত হকারমুক্ত করার যৌথ উদ্যোগের বিরোধীতা করে আন্দোলন করা নেতাদের অগ্রভাগে ছিল সে। একই বছরের ১৬ জানুয়ারি হকার মুক্ত সড়ক ইস্যুকে কেন্দ্র করে হকারদের নিয়ে হামলা করে জনগণ, সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য’সহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত করে। এরপর ২০২১ সালের ৯ মার্চ ফুটপাতে বসার দাবিতে বিক্ষোভ করে হকাররা। ওই সময় হকারদের নেতৃত্ব দেয় আসাদ। ওইদিন বিকেলে সড়কে আগুন দিয়ে যানবাহনে ভাঙচুর চালায় হকাররা। বাধা দিলে পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ বাধে। ওই ঘটনায় পুলিশের উপর হামলা, অস্ত্র লুটের চেষ্টা, যানবাহন ভাঙচুর ও সড়কে আগুন দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেফতার হয় আসাদ। একই বছরের ১৪ অক্টোবর ফুটপাতে দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে তর্কের জেরে খুন হন ১৮ বছর বয়সী তরুণ জোবায়ের হোসেন। ওই তরুণও ফুটপাতে হকারি করতো। তাকে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। ওই হত্যা মামলারও আসামি এই আসাদ। পরে নিহত জুবায়েরের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। নিহত জুবায়েরের মা মুক্তা বেগম এই ঘটনায় থানায় আরও একটি অভিযোগ দায়ের করেন। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, নিজেকে হকার নেতা বলে পরিচয় দেওয়া আসাদুল ইসলাম ওরফে আসাদ নারায়ণগঞ্জ এর চাষাড়া এলাকায় মূলত চাঁদাবাজি করে বেড়ায়। ঐ এলাকার সড়কের ফুটপাতে বসতে হলে আসাদকে দৈনিক চাঁদা দিতে হয়। এই চাঁদার একটি অংশ সখ্যতা বজায় রাখা রাজনৈতিক নেতাদের কাছে পৌঁছে দিত আসাদ।
গ্রেফতারকৃত আসাদকে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।