ষ্টাফ রিপোর্টার:
নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরী স্কুলের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের পক্ষ দিতে এসে বিপাকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব শাহেদ আহমেদ ওরফে বোমারু শাহেদ।
১৮ আগষ্ট রবিবার নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরী স্কুলের বহিষ্কৃত কিছু শিক্ষিকার উস্কানিতে বিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে আসে একদল প্রাক্তন বহিরাগত শিক্ষার্থীরা।তাদের সমর্থন দিতে এসে বিপাকে পড়েন শাহেদ।
জানা যায়, বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষিকা গত বুধবার মিলি আফরোজ ও জয়ার মধ্যে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে ইস্যু করে এবং বহিষ্কৃত শিক্ষিকা শারমিন আক্তার, এভিলিন আক্তার রুনা ও ইসমত আরা মিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাককে অপসারণ করার পায়তারা করেন। এজন্য গত ১৬ ও ১৭ আগষ্ট দুইদিন ধরে চাষাড়া কলেজরোডস্থ বিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত শিক্ষিকা শারমিন আক্তারের বাসায় এভিলিন আক্তার রুনা, ইসমত আরা ও মিলি আফরোজ যৌথভাবে মিলে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়ে সভা করে বিদ্যালয়ের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার ও প্রধান শিক্ষকে অপসারণ করার পরিকল্পনা গ্রহন করে। স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নিয়েও হোয়াটসএপে স্টেপডাউন রাজ্জাক নামে একটি গ্রুপে খোলা হয় যেখানে সরাসরি বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে প্রধান শিক্ষিকের রুমে প্রবেশ করে বন্ধ করার, মাইনুদ্দিন নামে এক শিক্ষকে মারা এবং কেউ বাধা দিলেই মাইর দিতে নির্দেশ দেন মিলি আফরোজ। অন্যদিকে স্কুলের ক্ষতি করতে না দেবার জন্য সকাল থেকেই একদল প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন বিদ্যালয়ে।
হঠাৎ দুপুরে মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব শাহেদ আহমেদ ওরফে বোমারু শাহেদকে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেখা যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ফোন কল পেয়ে। এসময় তিনি দীর্ঘ সময় নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে ও বহিষ্কৃত শিক্ষিকা ইসমত আরার সাথে কথা বলেন। পরে সদর এসিল্যান্ডের কাছে এসে কথা বলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফারহানা মানিক মুনা তার ছোট বোন বলে পরিচয় দেন। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলেও জানান এবং শিক্ষার্থীদের এসিল্যান্ডের কাছে লিখিত অভিযোগ করতে বলেন।
পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফারহানা মানিক মুনাকে ফোন দিয়ে আসার কথা জানতে চাইলে সে জানায় এবিষয়ে সে অবগত নয়।
এসময় শাহেদ কেন অত্র বিদ্যালয়ে এসেছে জানতে চাইলে জানান, সকালে জানতে পারি প্রিপারেটরী স্কুলের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। আমরা এখানে এসেছি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা একটা সুন্দর সমাধানে আসবে। আপনে বলতে পারেন যে আমি শিক্ষার্থীদের পক্ষ হয়ে এসেছি।
আপনে কি উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষক বা অভিভাবক প্রতিনিধি কিনা জানোট চাইলে তিনি জানান, নিজ উদ্যোগেই এসেছি। যেহেতু এই স্কুলটি একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। তাই আমি এখানে এসেছি।সমন্বয়ক যে সে তো অনেক ব্যস্ত থাকে। হয়তো সে বিষয়টা অবগত না কিন্তু অন্য যারা সমন্বয়ক যারা তারা বিষয়টা জানে। সমন্বয়কের পক্ষ থেকে একজন এসেছে আমরা দেখেছি। আশাকরি তারা বসে একটা ভালো সমঝোতার মাধ্যমে এটার সমাধান দিবে।
তিনি আরো বলেন, আমার জানামতে কোন তৃতীয়পক্ষের হাত নেই। এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আমি এসে যেটা দেখতে পেরেছি। আমি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি। একটা খুব খারাপ বিষয় সেটা হচ্ছে এই স্কুলে দুইজন শিক্ষকের মধ্যে মারামারি হয়েছে। যা খুবই দুঃখজনক বিষয়।আমরা চাই এটা তদন্ত করে সুষ্ঠু একটা পদক্ষেপ নিয়ে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
সাংবাদিক ও পুলিশ এবং বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে শাহেদ আহমেদ নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরী স্কুলের প্রধান শিক্ষককে শাসিয়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করে।