নারায়ণগঞ্জে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শহরজুড়ে মিছিল ও সমাবেশের মধ্য দিয়ে সংগ্রামের চার দশক পূর্তি উদযাপন করা হয়। এই কর্মসূচি শহীদদের আত্মত্যাগকে স্মরণ ও উৎসর্গ করার মাধ্যমে শুরু হয়। ফেডারেশনের নেতারা তাদের বক্তব্যে ছাত্র আন্দোলনের গৌরবময় ঐতিহ্য তুলে ধরেন এবং বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।
জেলা সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান সভাপতির বক্তব্যে বলেন, “১৯৮৫ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের উত্তাল সময়ে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আমরা প্রতিটি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছি। গোলাম আজমের বিচারের দাবিতে ঐতিহাসিক ৯২’র আন্দোলন, ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলন, ফুলবাড়ি কয়লা খনি আন্দোলন, রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবি, এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনসহ প্রতিটি গণসংগ্রামে আমরা ছিলাম সোচ্চার।”
তিনি আরও বলেন, “নারায়ণগঞ্জে ২০০৯ সাল থেকে তোলারাম কলেজ ও মহিলা কলেজে ভর্তি বাণিজ্য বিরোধী আন্দোলন, ত্বকী হত্যার প্রতিবাদ, এবং মাফিয়াতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ছাত্র ফেডারেশনই নেতৃত্ব দিয়েছে। ওসমান পরিবারের দখলদারিত্ব চিহ্নিত করার মাধ্যমে আমরা নারায়ণগঞ্জে পরিবর্তনের বীজ বপন করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, সংগ্রামের এই ঐতিহ্য ধরে রেখে আগামীতে সব ধরনের দুর্নীতি, হিংসা, লোভ ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।”
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা সহ-সভাপতি সৌরভ সেন, সাধারণ সম্পাদক সৃজয় সাহা, সহ-সাধারণ সম্পাদক ইউশা ইসলাম ও তাইরান আবাবিল রোজা, সাংগঠনিক সম্পাদক মৌমিতা নূর, অর্থ সম্পাদক শাহীন মৃধা, রাজনৈতিক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মুক্ত শেখ, প্রচার সম্পাদক রাতুল দেওয়ান, দপ্তর সম্পাদক অপূর্ব রায়, কার্যকরী সদস্য জান্নাতুল ফেরদৌস নিসা, এবং তোলারাম কলেজের সংগঠক রাইসা ইসলাম ও মুন্নী আক্তার প্রত্যাশাসহ আরও অনেকে।
কর্মসূচি শেষে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন আগামী দিনের সংগ্রাম ও অগ্রযাত্রায় নিজেদের আরও সুসংগঠিত ও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে। নেতৃবৃন্দ ঘোষণা করেন, “আমাদের জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের আত্মত্যাগ ও আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে আমরা নতুন দিনের রাষ্ট্র বিনির্মাণে কাজ করে যাব।”
এই উদযাপন শুধু অতীতের সংগ্রামের ইতিহাস নয়, ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শক্তি সঞ্চয়ের একটি বার্তা।