ষ্টাফ রিপোর্টার:
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৬নং ওয়ার্ডে অবস্থিত আদমজী ইপিজেড। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন আদমজী ইপিজেড মতি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বর্তমানে বিএনপি’র নামধারী পরিচয়ে কতিপয় কিছু সন্ত্রাসী গ্রুপ ইপিজেডের ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। এসব সন্ত্রাসীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন আদমজীর ৬নং ওয়ার্ডের দুই মামা- ভাগ্নে। এদের একজন আইলপাড়ার মৃত জাহের আলীর পুত্র মনির হোসেন ও অপরজন তারই ভাগ্নে একই এলাকার মৃত সিরাজুলের পুত্র সন্ত্রাসী রুহুল আমিন। গত ৫ আগস্টের পর তাঁদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখল বাণিজ্য, লুটপাট, মারামারি, হামলা সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করতে মামা- ভাগ্নের নেতৃত্বে বিশাল একটি সন্ত্রাসী গ্রুপও গড়ে তোলা হয়েছে। এ গ্রুপে সন্ত্রাসীদের মধ্যে রয়েছেন নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের যুবলীগের মতি বাহিনীর একাধিক সন্ত্রাসী। এদের মধ্যে আইলপাড়ার পাবনাইয়া বাবু, মাইচ্ছা মানিক, চাঁদাবাজ আক্তারুজ্জামান মৃধা, বুইট্টা রনি, শাহজাহানের ছেলে পাগলা মিজান, সম্রাট, কাশেমের ছেলে সৈকত, মোফাজ্জল মুন্সীর ছেলে ফেন্সী শাকিল, মতিউরের ছেলে খোকন, আজিজের ছেলে স্বপন সহ বিশাল সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট। যার নেতৃত্ব দেন বিএনপির সাবেক ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন।
এ সন্ত্রাসী গ্রুপের কারণে বর্তমানে আতঙ্কিত নাসিক ৬নং ওয়ার্ডবাসী। গত (০৬ মার্চ) বৃহস্পতিবার আদমজী ইপিজেডে গার্মেন্টস ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপি’র দুই গ্রুপ মনির ও সাগর গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
এসময় এক সাংবাদিকের মোটরসাইকেলসহ ১০টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও আশেপাশে কয়েকটি দোকানে হামলা করা হয়। এতে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী তোফাজ্জল হোসেনসহ উভয় পক্ষের প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী মুনলাইট এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এসময় নারায়ণগঞ্জ-আদমজী- শিমরাইল সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পুলিশসহ যৌথবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে আদমজী ইপিজেড অভ্যন্তরে নাসিক ৬নং ওয়ার্ড বিতর্কিত বিএনপি নেতা মনির হোসেনের নেতৃত্বে রুহুল আমিন বাহিনী মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মানিক ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোহনকে কুপিয়ে জখম করে। এর জেরে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত আদমজী এলাকায় উভয় পক্ষের সংঘর্ষে চলে। এ সময় উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়ারা যায়, আদমজী ইপিজেডের ইউনিভার্সেল নামের একটি গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর এবং বিএনপি নেতা মনির হোসেনের সহযোগীদের মধ্যে দুপুরে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। তখন মনির হোসেনের নেতৃত্ব তার সহযোগীরা ইপিজেডের ভেতরেই ছাত্রদলের দুই নেতাকে কুপিয়ে জখম করে। এরই জের ধরে পরবর্তীতে বিকেলে উভয় পক্ষের মধ্যে গুলিবর্ষণসহ ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনুর আলম জানান, নাসিক ৬নং ওয়ার্ড একটি ব্যবসা কেন্দ্রিক এলাকা। এ এলাকায় কারা কারা সন্ত্রাসের সাথে যারা জড়িত তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। মানুষের জান মালের নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বদা বদ্ধপরিকর।