ষ্টাফ রিপোর্টার:
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীনুর আলমের বিরুদ্ধে দিনদিন বেড়েই চলেছে অভিযোগের পাহাড়। গত ডিসেম্বরে ওসি হিসেবে তিনি থানায় যোগদানের পর থেকেই সব ধরনের অপরাধ বেড়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জে হত্যা, নারী-শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, চুরি, ডাকাতি, দস্যুতা, ছিনতাই, অপহরণ, চাঁদাবাজি, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে প্রকাশ্য হামলা, দখল, চোরাচালান, মাদক ব্যবসার মতো সকল অপরাধ কর্মকান্ড বেড়েছে। ফলে দিনদিন বসবাসের অনিরাপদ নগরীতে পরিণত হচ্ছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকা। এবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ সাবেক এক কাউন্সিলরের নাম থাকায় মামলার কাগজ ছুঁড়ে ফেলার। অভিযুক্ত ঐ সাবেক কাউন্সিলরের নাম ইকবাল হোসেন। যিনি বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা। যার সাথে রয়েছে ওসি শাহীনুর আলমের ব্যাপক ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ।
ইকবালের বিরুদ্ধে মামলা করতে চাওয়ায় কাগজ ছুঁড়ে ফেলার ওসির একটি ভিডিও দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের পেজে আপলোড করা হয়েছে। এতে ওসির রুমে বিএনপি নেতাদের আলাপনের বেশকিছু কথোপকথন রয়েছে।
জানা যায়, নীলাচল নামে একটি পরিবহনের বাস ডিপোকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে শনিবার রাতে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ৮জন আহত হয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
একটি পক্ষ দাবি করছে বিএনপির বহিস্কৃত নেতা, নাসিক ২ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ইকবাল এই পরিবহনের ডিপো থেকে প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা চাঁদা তোলেন। ইকবালের এই চাঁদাবাজির ক্ষেত্র বহাল রাখতে ইকবাল অনুসারী ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুক্তার হোসেন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পলাশের নেতৃত্বে ৫০ থেকে ৬০ জন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে অতর্কিতভাবে এ হামলা চালায়। হামলার ঘটনায় এলাকার পঞ্চায়েত কমিটি ও আহতরা রাতে থানায় ইকবালকে প্রধান করে মামলা করতে গেলে ওসি ইকবালের নাম দেখে মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা ওসির সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
এসময় তারা ওসির বিরুদ্ধে ইকবালের পক্ষ অবলম্বনের অভিযোগ তুলে বলেন লাশ হলে কি আপনি মামলা নিবেন। কেনো আপনি মামলা নিবেন না। ইকবালের নাম আছে বলে। এসময় ওসি শাহীন উত্তেজিত হয়ে তাদের রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি নেতারা জানান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি কিছু বিএনপি নামধারী নেতার কাছে বিক্রি হয়ে গেছেন। যারা একসময় আওয়ামী লীগের দোসর ছিলেন। তিনি অপরাধীদের দিনদিন প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছেন যার ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির দিকে যাচ্ছে। আমরা সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একজন সৎ যোগ্য ওসি নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি। এদিকে আদমজী ইপিজেডে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনায় পিস্তল দিয়ে প্রকাশ্যে গুলি করা সোহাগ কে ১২ দিনেও শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে না পারায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের চরম ব্যর্থতা দেখছে ব্যবসায়ী ও সাধারণ জণগণ।
তাঁদের বক্তব্য, প্রকাশ্যে গুলি করা আসামি কে রহস্য জনক কারণে পুলিশ গ্রেফতার করছে না। কেনো করছে না তার কারণ সিদ্ধিরগঞ্জবাসী জানে। তারা অবিলম্বে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের নিকট সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কর্মে বলিষ্ঠ দায়িত্ববান ওসি নিয়োগের দাবি জানান।