ষ্টাফ রিপোর্টার:
পিতার নীতি কথাকে উপহাস বানিয়ে একই দলের নেতাকর্মীদের ঝুটের গাড়ী ছিনতাই। এমনই ঘটনা ঘটেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি গিয়াসপুত্র গোলাম মুহাম্মদ কায়সার ওরফে রিফাতের ক্ষেত্রে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা শিল্প বানিজ্যে পরিচিত একটি জেলা। এজেলায় রয়েছে আদমজী ইপিজেড ও বিসিক শিল্প নগরী। লাখ লাখ মানুষের কর্মস্থল হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ। এই শিল্প নগরীর গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানগুলোতে পোষাক শিল্পের পাশাপাশি ঝুট ব্যবসায়ও জড়িত অনেক ব্যবসায়ীরা। গত ৫ আগষ্ট গনঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের লোকজন পলায়ন করলে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে বিএনপি। সর্বত্র চাঁদাবাজির পাশাপাশি ঝুট বানিজ্য দখল নিয়ে শুরু হয়ে নিজ দলের লোকেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবী নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রেও জমাছে পাহাড় সমান অভিযোগ।
ইতিমধ্যে ফতুল্লার শিল্প নগরী বিসিকে একের পর ঝুট বানিজ্য নিয়ে নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। তবে আদমজী ইপিজেডে সে রকম কোন প্রভাব না পড়লেও গত ২৯ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে যায় ঝুটের গাড়ী নিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা। এ যেন হরিলুট ঘটনা। দখল না পুরোপুরি ১৩ টি গাড়ীই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
জেলা বিএনপির প্রতিটি সভা সমাবেশে অন্যায় ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে শক্ত হাতে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে সকল চাঁদাবাজি, ছিনতাই,খুন, গুম এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোরও নীতিবাক্য ছাড়েন জেলার সভাপতি গিয়াসউদ্দিন। যেখানেই অন্যায় হবে, চাঁদাবাজি হবে বা দলের যেই অপরাধের সাথে যুক্ত হবে তাকেই আইনের আওতায় এনে কঠোর হাতে শাস্তির ব্যবস্থা করারও বুলি আওরান গিয়াসউদ্দিন। অথচ তার ছেলেই একই দল নারায়ণগঞ্জ মহানগরের বৈধ ঝুট ব্যবসায় গলাচ্ছেন নাক, করেছেন আস্ত ১৩ টি গাড়ী ছিনতাই। এ যেন “বাবার মুখে রাম রাম আর ছেলের কাজে ভূতের প্রলাপ”। সিদ্বিরগঞ্জ এর আদমজী ইপিজেড অবস্থিত উর্মি গ্রুপ থেকে কারখানার ওয়ার্ক অর্ডার নিয়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব শাহেদ আহমেদ। বৈধভাবে ঝুটের অনুমতি নেন শাহেদ কারখানা মালিক থেকে। সেক্ষেত্রে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ছিলো তার উর্মি গ্রুপ থেকে ঝুট বের করার দিন। সেদিন ১৩টি গাড়ী ঝুট লোড করে ইপিজেড থেকে গাড়ী বের হলে ১৩ টি গাড়ীই লোকবল নিয়ে থামিয়ে ছিনতাই করে রিফাত বলে জানা যায়।
একটি সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা আনুমানিক পৌনে ৬টায় আদমজী ইপিজেডের উর্মি গার্মেন্টস থেকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব শাহেদ আহমেদের ১৩টি জুটের গাড়ী বের হলে তা ছিনতাই করে নিয়ে যায় জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিনের পুত্র রিফাত ও তার লোকজন। ছিনতাইকৃত ১৩টি গাড়ী তিনটি স্থানে রাখা হয়। জালকুড়িতে ৩ টি, মোগড়াপাড়ায় ৬টি ও মেঘনায় ৪ টি গাড়ী রাখেন। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনী নিয়ে গিয়ে ১৩টি গাড়ী উদ্বার করে শাহেদ নিজেই।
ঝুট বোঝাই গাড়ী ছিনতাইয়ের বিষয়টি জানতে গিয়াসপুত্র রিফাতের সাথে যোগাযোগ করতে মুঠোফোনে ০১৯৬০-৮৯০৭** একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে শাহেদ আহমেদের সাথে মুঠোফোনে ০১৯১৬-৭৮৩৯** যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করে সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই কলটি কেটে দেন।