শিশু রাফিন হত্যা:
জাগো নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী নতুন মহল্লা দোয়েল চত্বরে ট্রাক চাপায় শিশু সাফিন নিহতের ঘটনায় জামিনে বের হয়ে এসে মামলা তুলে নিতে অব্যাহত হুমকি দিচ্ছে আসামী মোঃ ফারুক হোসেন গংরা। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন একমাস আগে বন্দর থানায় বদলী হয়ে গেলেও থানায় চার্জশীট জমা দিলেও কোর্টে চার্জশিট জমা দেননি।
মামলার বাদী চায়ের দোকানী মোঃ শাহ জালাল জানান,আমার পুত্র সাফিন হত্যার তদন্ত কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন থানায় চার্জশীট জমা দিলেও কোর্টে প্রেরন করেনি। আমি কোর্টে খোঁজ নিয়ে জেনেছি আদালতে চার্জশিট জমা দেয়নি। প্রায় পনের দিন হলো আসামী ফারুক হোসেন, সিদ্দিক ও রানা মামলা তুলে নিতে হুমকি প্রদান করছে। এতে আমি পরিবার পরিজন নিয়ে চরম আতংকের মধ্যে দিনযাপন করছি।
শাহজালাল আরো জানান,ট্রাকের ভিতর ৩শ বস্তা সিমেন্ট ছিল কিন্তু এসআই সানোয়ার হোসেন সেই সিমেন্ট আটক না দেখিয়ে মোটা অংকের টাকার খেয়ে ট্রাক হতে সিমেন্ট সরিয়ে ফেলে।
চলতি মাসের ১০ তারিখ এসআই সানোয়ার চায়ের দোকানে এসে বলে আমাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। আমি সেখানে নিয়ে গেলে তিনি ঘটনাস্থলের দুই পাশের বাড়ির মালিকের মোবাইল নম্বর নিয়ে চলে আসেন। থানায় চার্জশিট জমা দেওয়ার আগে আমাকে জানায়নি। আমি আসামীদের ঠিকানা ২ বার দিলেও এসআই সানোয়ার হোসেন কোন আসামী গ্রেফতার করেনি।
মামলা সুত্রে জানা যায়, মোঃ শাহ জালাল পিতা- মোঃ আব্দুল ছোবহান, মাতা- খুরসেদা বেগম, সাং- চরব্র্রাম্মন চর, থানা- মেঘনা, জেলা- কুমিল্লা, এ/পি মোশারফের বাড়ির ভাড়াটিয়া, সাং- পাইনাদী নতুন মহল্লা, দোয়েল চত্ত্বর, থানা-সিদ্ধিরগঞ্জ, জেলা-নারায়নগঞ্জ। এই মর্মে এজাহার দাখিল করিতেছি যে, বিবাদী ১। (ট্রাক ড্রাইভার) মোঃ ফারুক হোসেন পিতা- আফাজ উদ্দিন, মাতা- কদবানু, সাং- মরিচ বুনিয়া, থানা- পটুয়াখালী সদর, জেলা- পটুয়াখালী, এ/পি সোহাগের বাড়ির ভাড়াটিয়া আনোয়ার কাউন্সিলর এর বাড়ির পাশে, সাং- পাইনাদী, থানা- সিদ্ধিরগঞ্জ, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, ২। সিদ্দিক , পিতা- সেলিম শরীফ সাং- বাজার খোনা সল্লা মিয়ার কান্দা,থানা ও জেলা- পটুয়াখালী , গাড়ির মালিক সহ অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩ জন ইং ২৯/৯/২০২৩ তারিখ রাত অনুমান ০৯.৩৫ ঘটিকার সময় আমার ছেলে সায়েম (১১) ও সাফিন (০৬) সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন পাইনাদী নতুন মহল্লার দোয়েল চত্ত্বর গনির বাড়ির সামনে পাকা রাস্তার পাশে দাড়িয়ে ছিল। এমতাবস্থায় দক্ষিন দিক হইতে বেপরোয়া ও দ্রুত গতিতে একটি মালবাহী ট্রাক যাহা ঢাকা মেট্রো-ট-১৮-৩০৯৫ আমার ছেলে সাফিন (০৬) কে পিছন থেকে ধাক্কা মেরে চাকার নিচে পিষ্ট করে ফেলে। ইহাতে আমার ছোট ছেলে সাফিন (০৬) ঘটনাস্থলে মৃত্যু বরণ করে এবং সাথে বড় ছেলে সায়েম (১১) ট্রাকের ধাক্কায় ছিটকে পরে এবং তাহার হাতে আঘাত প্রাপ্ত হয়। পরবর্তীতে আমাদের ডাক চিৎকারে স্থানীয় সাক্ষী ১। সিরাজুল ইসলাম মিলন পিতা-মৃত- নুরুল ইসলাম, সাং- শাপলা চত্ত্বর, ২। মোঃ মজনু (৩৪), পিতা- মোঃ দানেশ আলী, সাং- বউলা, থানা- ধনবাড়ী, জেলা- টাঙ্গাইল, এ/পি এনায়েত উল্লাহ এর বাড়ির ভাড়াটিয়া, সাং- দোয়েল চত্ত্বর, উভয় থানা- সিদ্ধিরগঞ্জ, জেলা- নারায়ণগঞ্জদের সহায়তায় উক্ত ট্রাকটি আটক করি। কিন্তু ট্রাকে থাকা বিবাদীদ্বয় সহ অন্যান্য লোকজন পালিয়ে যায়। বিষয়টি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশকে অবগত করিলে তাৎক্ষনিক রাত্রিকালীন ডিউটিতে থাকা স্পেশাল-৩ টহল পার্টি দ্রুত ঘটনাস্থলে হাজির হয় এবং আমার ছোট ছেলে সাফিন (০৬) এর সুরতহাল প্রস্তুত করিয়া মৃত দেহ ময়নাতদন্তের জন্য ভিক্টরিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে নারায়গঞ্জ প্রেরণ করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সানোয়ার হোসেন মুঠোফোনে বলেন,সার্ভারের সমস্যার কারনে কোর্টে চার্জশিট যায়নি। কাল পরশু চলে যাবে।