জাগো নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্র্রী অমূল্য চন্দ্র দাস এর স্ত্রী তুলসী রানী দাস সংখ্যালঘুর দোহাই দিয়ে শ্বশুরের বিক্রিত জমি অবৈধভাবেই দখলে রাখতে চান। তার এমন প্রতারণার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করলেন সোনারগাঁ থানা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্রী লোকনাথ দত্ত।
দখলে থাকলেই মালিক নয়, থাকতে হবে দলিলসহ জমির প্রয়োজনীয় দস্তাবেজ। চলমান এই আইনের কোন ভ্রুক্ষেপই করেন না তুলসী রানী দাস। তিনি সংখ্যালঘু, বিধবা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের দোহাই দিয়ে জেলা প্রশাসক, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর মিথ্যা লিখিত অভিযোগ করেন জমির দাবিদার স্থানীয় গাজী ও তার মেয়ের জামাই চুন্নুর বিরুদ্ধে।
এই অভিযোগের ফলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের খ- সার্কেল নোটিশ দিয়ে গাজী ও তার মেয়ের জামাই চুন্নুকে তলব করেন। সেখানে তাদের পাশাপাশি সাক্ষী হিসেবে সোনারগাঁ থানা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্রী লোকনাথ দত্তকেও তলব করেন। তাদের সবার লিখিত জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়।
শ্রী লোকনাথ দত্তের লিখিত জবানবন্দীতে যা বলেছেন তার হুবহু দেয়া হলো- সূত্রঃ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ এর স্মারক নং-০৬.৪১.৬৭০০.৬০১.২৭.০০১.২১-৬৭৪, তাং- ০৬/০৬/২০২৩খ্রিঃ
এবং পুলিশ অফিস, নারায়ণগঞ্জ স্মারক নং-৪৮১২/অপরাধ, তাং- ১৪/০৬/২০২৩খ্রিঃ এর সাক্ষী শ্রী লোকনাথ দত্ত (৭০), পিতা-মৃত শন্তু দত্ত, সাং- কামারগাঁও, থানা- সোনারগাঁ, জেলা- নারায়ণগঞ্জ এবং সভাপতি, সোনারগাঁ থানা পূজা উদযাপন পরিষদ এর জবানবন্দিঃ-
আমার নাম ঠিকানা উপরে বর্ণিত আছে। আপনার জিজ্ঞাসাবাদে জানাচ্ছি যে, গাজীউর রহমান ও চুন্ন সাহেব ভূমিদস্যু পরবিত্তলোভী লোক না। গাজীউর রহমান একজন সুনামধন্য ব্যক্তি ও দানশীল ব্যক্তি । সোনারগাঁওয়ের প্রয়াত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোশারফ হোসেন ক্রয় করেন এবং এসএ, নামজারী জমাভাগ করেন। পরবর্তীতে তিনি অত্র জমিতে টিনসেড ঘর তৈরি করে ০৪ সাটার গুদাম ঘর নির্মাণ করেন। যাহা বর্তমানে বিদ্যমান আছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোশারফ হোসেনের মৃত্যুর পর তাহার ওয়ারিশগণ ০১ স্ত্রী, ০১ পুত্র সন্তান গত ০৯/০৯/২০২১ইং তারিখে অপ্রত্যাহার যোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়োগ করেন (পণমূল্য ব্যতীত)। যাহার দলিল নং-১২২৯৫, তাং- ০৯/০৯/২০২১ইং এবং আরএস জামাভাগ করেন।
তিনিরা অভিযোগকারীনিকে কোন প্রকার হুমকি ধামকি প্রদান করেন নাই। তারা মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করিয়া তাহাদের সুনাম নষ্ট করছেন।
সরজমিনে জানা যায়, তুলসী রানী দাসের শ্বশুরের কাছ থেকে সোনারগাঁয়ের প্রয়াত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ক্রয় করেন এবং এসএ, আরএসএ ও সিএসএ নামজারী ও নিয়মিত খাজনাও পরিশোধ করেন। পরবর্তীতে তিনি অত্র জমিতে একটি টিনসেড ঘর ও চার সাটার গুদাম ঘর নির্মাণ করেন। আর সেখানেই তুলসী রানী দাসের পরিবারকে মানবিক কারণে কিছুদিনের জন্য থাকার অনুমতি দিয়েছিলেন ক্রেতা প্রয়াত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন। যা এখনও বিদ্যমান আছে। জনাব মোশারফ হোসেন মৃত্যুর পর তাহার ওয়ারিশগণ ০১ স্ত্রী, ০১ পুত্র সন্তান গত ০৯/০৯/২০২১ ইং তারিখে অপ্রত্যাহার যোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়োগ করেন একই এলাকার গাজী ও তার মেয়ের জামাই চুন্নুকে (পণমূল্য ব্যতীত)। যার দলিল নং-১২২৯৫, তাং- ০৯/০৯/২০২১ইং।
জমির মালিক (অপ্রত্যাহার যোগ্য পাওয়ার অব অ্যাটর্নি হিসেবে) গাজী ও তার মেয়ের জামাই চুন্নু উক্ত যায়গা তুলসী রানী দাসকে ছেড়ে দিতে বললে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে গাজী ও তার মেয়ের জামাই চুন্নু স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের নিয়ে কয়েকবার বিচার সালীস বসালেও তুলসী রানী দাস এতে উপস্থিত না হয়ে তাদেরকে প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন রকমের হয়রানী ও হুমকি ধামকি দিয়েই যাচ্ছে।
এ বিষয়ে চুন্নু বলেন, যে জায়গাটি নিয়ে আমার নামে সরকারের উপর মহলে মিথ্যা অভিযোগ করছেন সেই জমিটি মূলত আমার।
অভিযোগকারীনিকে আমি কোন প্রকার হয়রানী ও হুমকি ধামকি প্রদান করি নাই। মূলত তিনি আমাকে হয়রানী সহ আমার জমিটি অত্মসাৎ করার জন্য আমাকে হুমকি ধামকি সহ বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করিয়া হয়রানী করছেন। অভিযোগকারীনির অভিযুক্ত জমিতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেছেন।
এ বিষয়ে তুলসী রানী দাস বলেন, এই জায়গা কেউ বিক্রি করে নাই। তারা ভুয়া কাগজ বনিয়ে আমার বাড়ি দখল নিতে চায়। আমি তা কোনদিনও দিব না।