Views: 5
সাংবাদিক ও বিএনপি নেতাকর্মীরাও আসামী!
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঠেকাতে সরকার দলীয় নেতাকর্মী ও পুলিশের গুলিতে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে একের পর এক মামলা দায়ের করা হচ্ছে থানাগুলোতে। সারা দেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁয়ে দায়েরকৃত এসব মামলায় আসামী করা হচ্ছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীদের। তবে, ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে এসব মামলায় এবার সাংবাদিক, নিরীহ জনগণ ও বিএনপি নেতাকর্মীদেরকেও আসামী করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার(২৪ আগস্ট) সোনারগাঁ থানায় আরোও একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।এতে বাদী হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ইব্রাহিমের পিতা মোঃ হানিফ।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান,নজরুল ইসলাম বাবু, গোলাম দস্তগীর গাজী, আব্দুল্লাহ আল কায়সার, স্থানীয় সাংবাদিক,বিএনপি নেতাকর্মীসহ ২৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। সেই সাথে ৫০/৬০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে।
মামলায় তিনি উল্লেখ করেন গত ১৯ জুলাই বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে কাঁচপুর এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও ৫০-৬০ জন দুষ্কৃতিকারীর ছোড়া গুলি তার ছেলে ইব্রাহিমের মাথায় লেগে বাহির হয়ে যায়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে ডাক্তার মৃত ঘোষনা করে।
এদিকে সোনারগাঁ থানায় দায়ের হওয়া মামলাকে মিথ্যা ও হয়রানীমূলক দাবী করে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন একজন অধ্যক্ষ। গতকাল রোববার বিকেলে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় তার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি । ডেমরা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ ড.নুরে আলম লিখিত বক্তব্য এ মামলা প্রত্যাহারে দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের সহকারী অধ্যাপক সালাউদ্দিন জুয়েল, সোনারগাঁ কাজী ফজলুল হক উইমেন্স কলেজের সহকারী অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমজিয়াজ বকুল, সোনারগাঁ গঙ্গাবাসী ও রামচন্দ্র পোদ্দার ইনস্টিটিউশন মডেল স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক গোলাম মর্তুজা কাজল।
লিখিত বক্তব্যে ড. নুরে আলম বলেন, তিনি বিএনপির রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। ছাত্রজীবনে ৮৮-৮৯ সালে তিনি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আ. ফ.ম বাহাউদ্দিন হলের ছাত্র সংসদের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৩-৯৪ সালে সোনারগাঁ ছাত্রদলের আহবায়ক ছিলেন। সোনারগাঁ ছাত্রদলকে সুসংগঠিত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ২০২৩ সালে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন
করেন। ২০০৮ সাল থেকে বিএনপি দলীয় সাংসদ সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুলের প্রতিষ্ঠিত সরদার আজমত আলী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি ডেমরা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বলেন,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাঁচপুর ব্রীজের ঢালুতে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা ককটেল বিস্ফোরণ, দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত করেন। সেখানে ইব্রাহিম নামের এক যুবক মারা যায়। ওই ঘটনায় গত ২৩ আগষ্ট নিহতের বাবা মো. হানিফ বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন । ওই মামলায় ২৮ নম্বর আসামী হিসেবে তাকে অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। বিএনপির একটি অংশ ঈশ্বার্ণিত হয়ে তাকে এ মামলা উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে জড়িয়েছে। এ মামলা তদন্ত করে যাঁরা জড়িত নয় তাদের নাম প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
অপর দিকে উপজেলার ৪ জন সাংবাদিককে এ মামলায় জড়ানোতে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয় সাংবাদিকরা।
জাতীয় দৈনিক বাংলা একাত্তর এর সোনারগাঁ প্রতিনিধি ও সোনারগাঁ জার্নালিষ্ট ক্লাবের সভাপতি শেখ এনামূল হক বিদ্যুৎ বলেন,আমরা মনে করি, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য সাংবাদিকদের বিরত রাখতে হুমকি স্বরূপ কতিপয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার নির্দেশে এই মামলায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে হয়রানী করার জন্য জড়িয়েছেন। অবিলম্বে এই মামলা থেকে নিজ দায়িত্বে তার নামসহ সকল সাংবাদিকের নাম প্রত্যাহার করানোর জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি।