ষ্টাফ রিপোর্টার:
নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি বিসিক শিল্পাঞ্চলে একটি গ্রুপের দুটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কয়েকশো শ্রমিক সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কটির একপাশ অবরোধ করে রেখেছেন।
বিক্ষোভ শুরুর পর শ্রমিকদের একটি দল বিসিক শিল্পাঞ্চলের ভেতরে কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুর চালালে অধিকাংশ কারখানার শ্রমিকদের ছুটি দিয়ে দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ।
বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পঞ্চবটি বিসিক শিল্পাঞ্চলে ৪৩২টি কারখানা রয়েছে। শ্রমিক অসন্তোষের মুখে অধিকাংশ কারখানায় লাঞ্চের আগেই শ্রমিকদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
সুলতানা আক্তার নামে এক নারী পোশাক শ্রমিক বলেন, আমাদের লাঞ্চ হয় সাড়ে ১২টায়। কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুর করায় ভয়ে ১১টার দিকে আমাদের কারখানা ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা বিসিক শিল্পাঞ্চলে অবস্থান করছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এছাড়া শ্রমিকদের সঙ্গে সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশের কর্মকর্তারা আলোচনা করছেন বলেও জানা গেছে।
শামীম আরা নামে এক শ্রমিক বলেন, গত বছর থেকে কারখানার মালিক বেতন নিয়ে গড়িমসি করে আসছে। গত আগস্ট মাস থেকে আমার বেতন বকেয়া। বেতন না দিয়েই গতমাসে কারখানা লে-অফ ঘোষণা করে। ডিসি, এসপি, শ্রম দপ্তর, বিকেএমইএসহ অনেকের কাছে আমরা গিয়েছি, কোনো সমাধান পাইনি। আজকে তাই সড়কে নামছি।
গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ওই গ্রুপের কারখানা দুটিতে বেতন পরিশোধ নিয়ে অসন্তোষ চলছে। গত এপ্রিলে বকেয়া বেতনের দাবিতে গ্রুপের অবন্তী কালার টেক্সের শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জন আহত হন।
নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশের পরিদর্শক সেলিম বাদশা জানান, ক্রনী গ্রুপের অবন্তী গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন দিতে পারছে না। দীর্ঘদিন ধরে এ নিয়ে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ রয়েছে। আলোচনায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত আছেন, আমাদের পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন। সবাই মিলে শ্রমিক নেতাদের নিয়ে বিষয়টি সমাধানের জন্য আমরা আলোচনা করছি।
আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া শ্রমিক আন্দোলন মঞ্চের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম গোলক ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু সাঈদ বিকেল ৩টায় জানান, আমরা এই মুহূর্তে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আলোচনায় রয়েছি। সকালে বকেয়ার দাবিতে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করলেও দুপুরে একটার দিকে প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বকেয়া আদায়ের ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বুঝিয়ে অধিকাংশ শ্রমিককে সরিয়ে দেয়। তবে এর পরেও ৪০-৫০ জন শ্রমিক অবন্তী কালারের সামনের রাস্তা অবরোধ করে বসে আছে। এদেরকে পিছন থেকে একদল ঝুট সন্ত্রাসী সহায়তা করছে। এদের উদ্দেশ্য লুটপাট করা। আমরা এদের সঙ্গে নেই।
ফতুল্লা থানার ওসি মো.শরিফুল ইসলাম জানান, শ্রমিকরা ঢাকা মুন্সীগঞ্জ সড়কের একাংশ দখল করে রাখায় গাড়ি ধীরগতিতে চলছে। ২০ শতাংশ শ্রমিক এখনো বকেয়া পায়নি। আমরা চেষ্টা করছি বুঝিয়ে শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরানোর।