পলাতক শেখ হাসিনার প্রেস সচিব শামীমের দোসর হুমায়ুন কবিরের দূর্নীতির ব্যবস্থা নিতে ডিসিকে স্মারকলিপি
ষ্টাফ রিপোর্টার:
নারায়ণগঞ্জ শহরের বার একাডেমি স্কুলের দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবিরকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগে কারচুপি, অনিয়ম ও ব্যপক দূর্নীতির অভিযোগ তুলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন বৃহত্তর খানপুর এলাকাবাসী ও বার একাডেমি স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র বৃন্দের পক্ষে রিয়াজ খান মিন্টু, মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন,মোঃ আলী ইমলান, আবুল কালাম ও মোহাম্মদ আলী এহসান।
এ ব্যাপারে (১২ ফেব্রুয়ারী) বুধবার তদন্ত টিম প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে যাবে বার একাডেমি স্কুলে।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস নারায়নগঞ্জের প্রধান অফিস সহকারী বিপুল বাবু প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবিরের কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে অভিযোগের সাথে সংযুক্ত সকল প্রমাণপত্র হুমায়ুন কবিরকে প্রদান করার অভিযোগ তুলেছেন অভিযোগ কারী মিন্টু ও দেলোয়ার হোসেন। এতে করে তদন্ত সুষ্ঠু হবেনা বলে আশংকা ব্যক্ত করেছেন তারা।
একটি সুত্র হতে জানা যায়, স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনে বাধ্য হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার প্রেস সচিব স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এ কে এম শামীম চৌধুরীর আস্থাভাজন ও আওয়ামী লীগের দোসর হুমায়ুন কবির বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ বাগিয়ে নেন।
কারন প্রধান শিক্ষক হতে হলে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিন্মতম ৩ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
সুচতুর ও দুর্নীতিবাজ,পদলোভী, ফাঁকিবাজ, অযোগ্য হুমায়ুন কবির আওয়ামী লীগ ও পলাতক শেখ হাসিনার সাবেক প্রেস সচিব একেএম শামীম চৌধুরীকে নানাবিধ সুবিধা দিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ বাগিয়ে নেন।
পরে প্রশ্ন ফাঁসে পরীক্ষা নিয়ে হুমায়ুন কবিরকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া হয়।
সভাপতি শামীম চৌধুরী হুমায়ুন কবিরকে প্রধান শিক্ষক পদের নিয়োগ দিতে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রাখেন এবং হুমায়ুন কবির কে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন।
শেখ হাসিনার প্রেস সচিবের পদ ব্যবহার করে হুমায়ুন কবিরের মাধ্যমে দুর্নীতি, অনিয়ম করেছেন একেএম শামিম চৌধুরী।
প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শামিম চৌধুরী ১৭ লক্ষ টাকা স্কুল ফান্ডে জমা না করে তা আত্মসাৎ করেন।
এছাড়াও ২০১০ সালে বই পাঠ্যের ৮২ হাজার টাকা, সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন থেকে ফেরত কৃত ৫০০০০/ টাকাও হুমায়ুন কবির ও শামীম চোধুরী আত্মসাৎ করেন। এছাড়াও পলাতক শেখ হাসিনার প্রেস সচিবের পদ ব্যবহার করে একেএম শামিম চৌধুরী ১৫ বছর সভাপতি পদ দখল করে রেখে ছিলেন।
নিয়োগ পরীক্ষার নামে লাখ লাখ টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নেন একেএম শামীম চৌধুরী ও হুমায়ুন কবির সহ কতিপয় কয়েকজন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য যা পর্যায়ক্রমে প্রকাশিত হবে।
হুমায়ুন কবির ২০১৭ সালে অষ্টম শ্রেণী ও এসএসসি পরীক্ষায় বহিরাগত আটটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের রেজিঃ বাবদ ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৯৫০ টাকা আত্মসাৎ করেন।
স্কুল হলো মারজিয়া, আইডিয়াল, ইউনিভার্স,সাইনরাইজ মডেল, ফিলোসোফিয়া,হ্যারিটেজ,নিউক্লিয়াস ও সাদ্দাম মডেল স্কুল।
এছাড়াও, ২০১৭,২০১৬,২০১৫, ২০১৪ সালে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন এর নাম করে ৫৬৬৮০০/ টাকা আতœসাত করেন। বিভিন্ন সাময়িক পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরী বাবদ অতিরিক্ত টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ২৬৩১২০/ টাকা আতœসাত করেন। অন্ধ কল্যান সংস্থার পূরনো বিল্ডিং বিক্রি বাবদ ১২০০০০/ টাকা স্কুল ফান্ডে জমা না করে পুরো টাকা আতœসাত করেন। সিলেবাস ছাপানো বাবদ অতিরিক্ত খরচ দেখিয়ে ৪৪২১০/ টাকা,বিভিন্ন খাত বাবদ বাস্তব খরচের চেয়ে বেশী দেখিয়ে ৩৮০৯৮৪/ টাকা আতœসাত করেন হুমায়ুন কবির। কিন্ডারগার্টেন শাখা হতে অতিরিক্ত খাত দেখিয়ে ৩৮৫০০/ টাকা আতœসাত করা সহ মোট ১৭৪৪৪৯৯ টাকা চুরি করে সস্তাপুরে বহুতল ভবন গড়ে তুলেছেন বলে জানা গেছে।
নিজেকে আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয়ে ১৬ বছর ধরাকে সরাজ্ঞান করে অযোগ্য থাকা সত্বেও পলাতক শেখ হাসিনার দোসর ও সাবেক প্রেস সচিব একেএম শামীম চৌধুরীকে ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকা আতœসাত করে এখনো বহাল তবিয়তে রয়ে গেছে দূর্নীতির রাজপুত্র খ্যাত হুমায়ুন কবির।
গত ০১/০৭/২০২৪ ইং তারিখ তড়িঘড়ি করে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রভাবে সারা দেশে দূর্নীতিবাজ শিক্ষক ও আওয়ামী লীগের দোসর দের স্কুল কলেজ গুলো হতে সরানো হলেও বার একাডেমি স্কুলে এর প্রভাব পড়েনি।সচেতন অভিবাবক ও সাবেক শিক্ষার্থীদের দাবী আওয়ামী লীগের দোসর দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবিরকে যেন স্কুল থেকে সরিয়ে দিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সাথে জড়িত নেতৃবৃন্দ।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির মুঠোফোনে বলেন,যে কেউ অভিযোগ করতে পারেন। আমি ৫ কোটি টাকা আতœসাত করেছি তারা ডকুমেন্টস দিক। আগের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামানের দূর্নীতির টাকা আমাকে দিয়ে গেছে এটা বিশ্বাস যোগ্য নয়। আমি ৩৩ বছর যাবত উক্ত স্কুলে শিক্ষকতা করছি। আমার চেয়ে কেউ সিনিয়র নয় বলে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মাওলানা আব্দুল মান্নান নামে এক জন শিক্ষক ১৪ বছর যাবত বহিষ্কৃত। হাই কোর্টে মামলা বিচারাধীন। উনি সব করাচ্ছেন। তাকে পূর্নবহাল করতে বলে যেখানে মামলা বিচারাধীন আমি কি করতে পারি। রিয়াজ খান মিন্টু স্কুলের কেউনা এমনকি তার ছেলেমেয়ে কেউ স্কুলে পড়েনা তাকে তাকে কমিটিতে রাখতে বলে। সাবেক সভাপতি একজন সিনিয়র সচিব সে নাকি ডিগ্রি পাশ করে নাই এটা কথা হলো। মূল অভিযোগ হলো যারা অভিযোগ করেছে তারা কিছুনা। মাওলানা মান্নান সব কিছু করাচ্ছে। আপনি স্কুলে আসুন মোবাইলে সবকিছু বলা যায়না। কাগজপত্র দেখে যান।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জিয়াউদ্দিন আহমেদ মুঠোফোনে বলেন,আগের সভাপতি হুমায়িন কবিরকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। তার দূর্নীতির বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।