ডলার সংকট নিয়ে দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম ‘ডলার উধাও‘।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাজার থেকে হঠাৎ করে উধাও হয়ে গেছে ডলার। আমদানিকারকরা এলসি খুলতে ব্যাংকের কাছে ধরনা দিলেও ডলার পাচ্ছেন না।
বাধ্য হয়ে খোলাবাজার থেকে ডলার কিনে দেনা পরিশোধ করছেন কোনো কোনো আমদানিকারক।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ৮ই মে ডলারের দাম ও ঋণের সুদের ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত পালনের অংশ হিসেবে ডলারের দাম ১১০ টাকা থেকে একলাফে সাত টাকা বাড়িয়ে ১১৭ টাকা করা হয়।
এতে সরাসরি প্রভাব পড়েছে ব্যাংক ও খোলাবাজারে। ফলে এলসি খোলার ক্ষেত্রে ১২০ টাকা এবং খোলাবাজারে প্রতি ডলারের দাম ১২৫ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান কালের কণ্ঠকে বলেন, ”ব্যাংকগুলো এলসি খোলার গতি কমিয়ে দিয়েছে। যেসব রপ্তানিকারকের ডলার অ্যাকাউন্টে জমা আছে, বর্তমানে শুধু তাঁরাই আমদানির দায় পরিশোধ করতে পারছেন। এর বাইরে যাঁরা ব্যাংক থেকে ডলার কিনে আমদানি বিল পরিশোধের চিন্তা করছেন, তাঁরা সবাই ফিরে যাচ্ছেন। কারণ বেশির ভাগ ব্যাংকের কাছেই ডলার জমা নেই। আবার যাঁদের কাছে আছে তাঁরা ভবিষ্যৎ আমদানি পেমেন্টের কথা চিন্তা করে ডলার খরচ করছেন না।”
ডলারের দাম বৃ্দ্ধির প্রভাব নিয়ে প্রতিবেদন করেছে দৈনিক মানবজমিনও। পত্রিকাটির প্রধান শিরোনাম ‘বিদেশি ঋণ পরিশোধে চাপে সরকার‘।
আইএমএফের দেয়া প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের শর্ত অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
বলা হচ্ছে, ডলারের এই দর বৃদ্ধিতে চাপ তৈরি হবে বিদেশি ঋণ পরিশোধে।
পাশাপাশি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসায় আরেক চাপ তৈরি হয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ব্যয়ে বড় অংশের জোগান আসে বিদেশি ঋণ সহায়তায়। এ ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধে সরকারের ব্যয় এখন ক্রমেই বাড়ছে।
ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে সুদহার বেড়ে যাবে। বাড়বে সংকট।
সরকারি-বেসরকারি বিদেশি ঋণ আরও ব্যয়বহুল হবে। পুঁজিবাজার থেকে বিদেশি বিনিয়োগ প্রত্যাহার বেড়ে যাবে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থা চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) বাংলাদেশের অনুকূলে ঋণের অর্থ ছাড় করেছে ৫৬৩ কোটি ডলার।
এ সময় সরকারকে বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করতে হয়েছে ২৫৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার।
সে হিসেবে অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে বাংলাদেশের অনুকূলে ঋণ হিসেবে ছাড়কৃত অর্থের অর্ধেকের কাছাকাছি (প্রায় ৪৬ শতাংশ) ব্যয় হয়েছে ঋণের কিস্তি (সুদ ও আসল) পরিশোধে।
সম্ভাব্য অনেক বড় প্রকল্প থেকে সরে আসছে সরকার‘ – দৈনিক বণিক বার্তার মূল শিরোনাম এটি।
প্রতিবেদনের তথ্য, ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে দ্রুতগতির রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা করে সরকার। এ জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় ১১০ কোটি টাকা ব্যয় করে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
রেলপথটির প্রাক্কলিত নির্মাণ ব্যয় এক হাজার ১৪০ কোটি ডলার বা এক লাখ ৩৩ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা (গতকালের মুদ্রা বিনিময় হার অনুযায়ী)।
বছর সাতেক আগে সমীক্ষা হলেও এখন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, আপাতত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে না।
বাংলাদেশ রেলওয়ের আরেক প্রকল্প ঢাকায় সার্কুলার রেল নির্মাণ। প্রায় ৯৭ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের ক্ষেত্রেও একই নীতি গ্রহণ করেছে সংস্থাটি।
সমীক্ষা সম্পন্ন করেও দেশের যোগাযোগ অবকাঠামো খাতের সম্ভাব্য এমন বড় অনেক প্রকল্প থেকেই সরে আসছে সরকার।
বলা হচ্ছে, এসব প্রকল্প পরবর্তী সময়ে বাস্তবায়ন করা হবে।
বড় প্রকল্প থেকে সরে আসার কারণ হিসেবে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়টিও আলোচনায় আসছে।
যদিও প্রকল্পগুলোর সমীক্ষার পেছনে এরই মধ্যে খরচ হয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। সমীক্ষা বাবদ ব্যয়ের এ অর্থকে অপচয় হিসেবে দেখছেন যোগাযোগ অবকাঠামো বিশেষজ্ঞরা।
রোববার চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় সব পত্রিকাতেই ফলাফলের পরিসংখ্যান ও বিভিন্ন আঙ্গিকের খবর প্রথম পাতায় স্থান পেয়েছে।
এসএসসি’র ফল নিয়ে দৈনিক নয়া দিগন্তের শিরোনাম, ‘ইংরেজির ভীতি কাটিয়ে পাসের হার ৮৩.০৪‘।
এবার গত বছরের তুলনায় পাসের হার সামান্য বেড়েছে, কিন্তু জিপিএ ৫ কিছুটা কমেছে।
৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডসহ ১১ বোর্ড মিলিয়ে গড় পাসের হার ৮৩.০৪ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন।
গত বছর এসএসসি ও সমমানে পাসের হার ছিল ৮০.৩৯ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছিল এক লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন।
সেই হিসাবে এ বছর পাসের হার বেড়েছে ২.৬৫ শতাংশ। আর জিপিএ ৫ কমেছে এক হাজার ৪৪৯ জন।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে দৈনিক প্রথম আলোর শিরোনাম, ‘মুখের কথায় বাজার থামছে না‘।
বলা হচ্ছে, বছরের এই সময় আলু সাধারণত সস্তা থাকে। সরকারি সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালের ৯ই মে তারিখে বাজারদরের তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, আলুর কেজি সর্বনিম্ন ২২ থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ টাকার মধ্যে ছিল।
এবার সেই আলুর দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। গত বছরের তুলনায় মূল্যবৃদ্ধি ৫৭ শতাংশ।
বিগত বছরগুলোর সঙ্গে এ বছর নিত্যপণ্যের দামের একটা তুলনামূলক চিত্র পাওয়া যায় প্রতিবেদনটিতে।
যেমন – ২০২১ ও ২০২২ সালের ৯ই ঢাকার বাজারে মিষ্টিকুমড়া সর্বনিম্ন ২০ টাকা কেজি ছিল। এখন তা ৩০ টাকা।
২০২১ সালে যে বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা ছিল, তা বাড়তে বাড়তে এবার (গতকাল রোববার) ৮০ থেকে ১০০ টাকা হয়েছে।
২০২১ সালের ৯ মে ঢাকার বাজারে পাঙাশ মাছের কেজি ছিল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। তা এখন ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা।
এক হালি ডিম উঠেছে ৫০ টাকায়, যা সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করত।
‘বাড়তি রাজস্ব সংগ্রহে করছাড় ও অব্যাহতি কমাবে এনবিআর‘ – দৈনিক সমকালের প্রধান প্রতিবেদনের শিরোনাম।
সংবাদের ভাষ্য, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের শর্তের পাশাপাশি বর্তমান সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।
এ বাস্তবতা মাথায় নিয়ে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে চলতি অর্থবছরের চেয়ে অন্তত ৭০ হাজার কোটি টাকার বাড়তি রাজস্ব আহরণে কর্মকৌশল ঠিক করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এ বাড়তি রাজস্ব সংগ্রহে বিভিন্ন ক্ষেত্রে করছাড় এবং অব্যাহতি কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
ঢাকার মেয়রদের চার বছরের খতিয়ান নিয়ে মূল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার। শিরোনাম ‘Failures stifle successes‘ বা, ব্যর্থতার ভারে চাপা পড়েছে সাফল্য।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ঢাকার দুই মেয়রের দায়িত্বের সময়কাল চার পেরিয়ে পাঁচ বছরে পড়তে যাচ্ছে এই সপ্তাহে।
তারা ‘মশা’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যর্থ হয়েছেন।
দায়িত্ব নেয়ার আগে শেখ ফজলে নূর তাপস এবং আতিকুল ইসলাম বায়ু দূষণ কমানোরও অঙ্গীকার করেছিলেন।
কিন্তু, ঢাকার বাতাস বিশ্বের মধ্যে নিকৃষ্ট অবস্থানেই থাকছে দিনের পর দিন।
অবশ্য, ঈদ-উল আযহার সময়ে বর্জ্য অপসারণের জন্য বাহবা পেতে পারেন দুই মেয়র। গত বছর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্থানগুলো পরিষ্কার করে ফেলা সম্ভব হয়েছিল।
দখলদারদের হাত থেকে কয়েকটি খাল মুক্ত করেছেন তারা। বুড়িগঙ্গার পুরনো চ্যানেল পুনর্খননও করেছেন।
আলাদা এক প্রতিবেদনে দুই মেয়রের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হয়েছে।
যেখানে উত্তরের মেয়র বলেছেন, তিনি সফল নাকি ব্যর্থ তা জনগণই বিচার করবে।
আর দক্ষিণের মেয়রের বক্তব্য, ডিএসসিসি সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি-মুক্ত সরকারি সংস্থা।
বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগের প্রতিবন্ধকতা নিয়ে দৈনিক দেশ রূপান্তরের শিরোনাম, ‘২১ দিনের কাজ হয় না ১০ মাসেও‘
প্রতিবেদনের ভাষ্য, জাপানিদের এ দেশের দেওয়ার তেমন কিছুই নেই। কিন্তু ভিসার মতো ন্যূনতম যে সুযোগ নির্দিষ্ট সময়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের এ দেশে বিনিয়োগ করার অনুরোধ করা হয়, তা-ও সময়মতো নিশ্চিত করা যায় না।
২১ কর্মদিবসের মধ্যে ভিসা নিরাপত্তা ছাড়পত্র না পেলে ধরে নেওয়া হবে তা পাওয়া গেছে এবং ভিসা ইস্যু করা হবে।
এমন নিশ্চয়তার বিধিবিধান করে বিনিয়োগে তাদের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু ওই যে কাজির গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই। নিয়ম আছে সরকারের বিধিতে, বাস্তবে নেই। ২১ দিনের কাজ হয় না ১০ মাসেও।
এখানেই শেষ নয়, সময়মতো ভিসা না নেওয়ার অজুহাত দেখিয়ে তাদের ৫ লাখ টাকা অতিরিক্ত চার্জ (জরিমানা) করা হয়।
সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর এমনকি স্থলবন্দরে কার্গো খালাসে এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে।
বন্দরের ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনার তাগিদ দিয়েছে জাপান। এ ছাড়া গ্যাস সরবরাহ, রেমিট্যান্স পাঠানো ও বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের রেজিস্ট্রেশনসহ বিনিয়োগের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে এশিয়ার শিল্পোন্নত এ দেশটি।
ঋণের বিলম্বে ঝুলছে রেলপথ প্রকল্প‘ – দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম।
বলা হচ্ছে, জমি অধিগ্রহণ, ঠিকাদার নিয়োগ—কিছুই হয়নি। অথচ প্রকল্পের সময় কেটে গেছে পৌনে ছয় বছর।
এই হাল বগুড়া-সিরাজগঞ্জ ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারতীয় ঋণ না আসায় প্রকল্প থমকে আছে।
ঋণছাড়ের সময়সীমা এখনো নিশ্চিত না থাকায় প্রকল্প কবে শেষ হবে, তা নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। কারণ, পাঁচ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পের তিন হাজার ১৪৬ কোটি টাকাই ঋণ হিসেবে দেবে ভারত। বাকি দুই হাজার ৪৩৩ কোটি টাকা দেবে বাংলাদেশ সরকার।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. ইয়াসীন বলেন, নকশা জটিলতার কারণে অনেক সময় লেগেছে। ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে।
২০২৬ সালের মধ্যে প্রকল্প শেষ হবে বলে তারা আশাবাদী।
ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এইজের মূল প্রতিবেদন Laws rarely applied to stop public nuisance বা, পাবলিক নুইসেন্স (জন উৎপাত) প্রতিরোধে আইনের প্রয়োগ নেই।
নাগরিক অধিকারকে ক্ষুন্ন করে এমন উৎপাত প্রতিরোধ সংক্রান্ত আইনের প্রয়োগ হয় না বলে প্রকাশ্যে এসব অপরাধ করেও পার পেয়ে যান অনেকে।
১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি, ১৯৭৬ সালের ঢাকা মেট্রোপলিটন অর্ডিন্যান্স এবং কিছু বিশেষ আইনে পাবলিক নুইসেন্সকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে এর জন্য জরিমানা বা কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
আইন বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা অন্যান্য বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকে বলে এসব ছোটোখাটো অপরাধে পদক্ষেপ নিতে অনীহা দেখা তাদের মধ্যে।
সুত্র : বিবিসি বাংলা