জাগো নারায়ণগঞ্জ
বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দ শ্যামপুর আড্ডা এলাকা থেকে বুধবার (১০ জুলাই) উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাতনামা যুবকের লাশের পরিচয় মিলেছে । নিহতের নাম শিপন হাওলাদার (৪২)। পিতার নাম রহিম হাওলাদার। লক্ষিপুর জেলার রায়পুর থানার চর আবাবিল এলাকায় তার বাড়ি।
থানা পুলিশ, নৌ পুলিশ ও সোনারগাঁ থানা পুলিশের রশি টানাটানির পর বন্দর ব্রন্মপুদ নদ থেকে অজ্ঞাতনামা এক যুবকের (৪৬) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার ১০ জুলাই বিকেলে উপজেলার লাঙ্গলবন্দ শ্যামপুর আড্ডা এলাকায় ব্রন্মপুত্র নদ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, নিহতের পরনে ছিল ডোড়াকাটা গেন্জি ও উলঙ্গ। ধারনা করা হচ্ছে ২ থেকে ৩ দিন আগে তাঁকে হত্যা করা হতে পারে। এরপর এখানে লাশ ফেলে গেছে। পরে কলাগাছিয়া নৌ-পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এমন অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে বুধবার রাত ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে উপস্থিত হয়ে স্ত্রী সোনিয়া আকতার ও পরিবারের অন্যান্যরা শিপন হাওলাদারের (৪২) লাশ শনাক্ত করেন।
ঘটনাস্থলে যাওয়া কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (ইনচার্জ) সাব্বির আহমেদ বলেন, দুপুরে শ্যামপুর আড্ডা রাস্তায় দিয়ে যাতায়াত করতে কয়েকজন পথচারী দুর্গন্ধ পায়। পরে নদের পারের কিনারায় পানিতে লাশটি ভেসে থাকতে দেখে। তারা আশেপাশের লোকজনকে জানালে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। নিহতের নাম ও পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। ধারণা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা অন্য কোথাও হত্যা করার পর লাশ এখানে ফেলে গেছে।
ঘটনার বিষয়ে নিহতের স্ত্রী সোনিয়া আকতার বলেন, `আমার স্বামীর চার ভাই। তিন বোন । পরিবারের ভাই বোনদের সাথে চরম বিরোধ দীর্ঘদিন যাবত। জমি সংক্রান্ত বিরোধের দ্বন্ধে বাবাও নিখোঁজ দুই বছর যাবত। সম্ভবত আমার স্বামীর মতো আমার শ্বশুড় রহিম হাওলাদারকেও ঘুম করেছে আমার ভাসুর ননদরা। কয়েক বছরের এমন বিরোধের কারণে প্রায়ই আমার স্বামী শিপন হাওলাদারকে তার ভাই মাইনুদ্দিন সহ অন্যান্যরা খুন করবো বইল্লা হুমকি দিয়ে আসতেছিলো।
গত ৮ জুলাাই সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে আমার স্বামী ও তার ফুফাতো ভাই আলী আকবর হাইস গাড়ি নিয়ে লক্ষিপুর জেলার রায়পুর থেকে ফতুল্লার ভূইঘর আসার পথে সোনারগাঁয়ের মোগড়াপাড়া চৌরাস্তায় একটি গাড়িতে থাকা আমার দেবর মাইনুদ্দিন ও তার স্ত্রী ময়নাসহ আরো ৫/৬ জন আমার স্বামীর গাড়ীর সামনে এসে গতিরোধ করে এবং তাকে গাড়ী থেকে টেনেহিচরে অপহরণ করে। এ সময় আলী আকবর দৌড়ে পালালেও পরে পুলিশ এসে আলী আকবরকে আটক করে। এসময় মোঘড়াপাড়া থেকে পুলিশ আমার স্বামীর গাড়ী ও মোবাইল উদ্ধার করলেও জীবিত অবস্থায় আমার স্বামীকে আর উদ্ধার করতে পারে নাই।
এমন ঘটনায় পুলিশ আলী আকবর ও ময়নাকে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছেন নিহতের শ্যালক ফাহিম হোসেন। একই সাথে ফাহিম জানায়, নিহতের লাশ বৃহস্পতিবার রাতেই গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হবে।
এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ নৌ পুলিশের পুলিশ সুপার মীনা মাহমুদা বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের পুলিশ কাজ করতেছে। আসামী গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। এই মামলা টি তদন্ত করছে নৌ পুলিশের দল । তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি নিয়ে আমরা পরবর্তীতে আপনাদের জানতে পারবো।