নিজস্ব প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর উপর অতর্কিত হামলাকে কেন্দ্র করে শহরে বিএনপির দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৭ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ও বিকেলে পাল্টাপাল্টি সমাবেশের আয়োজন করে দুই গ্রুপ।
গতকাল ৬ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ বন্দরের একটি অনুষ্ঠানে যাত্রাপথে বন্দরের তিন রাস্তা মোড়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড.আবু আল ইউসূফ খান টিপুর উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়।এতে টিপু সহ যুবদল নেতা মুন্না ও মাসুদ রানাও গুরুতর আহত হয়।আহত টিপুর ভাষ্যমতে মহানগর বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল, আবুল কাউছার আশার নির্দেশে সৌরভ ও নূর হোসেন এ হামলা চালিয়েছে হত্যার উদ্দেশ্যে।
এদিকে আশা এবং মুকুল এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন।টিপুর উপর হামলার ঘটনায় তারা কোনভাবেই সম্পৃক্ত নয় বলেও জানান।টিপুর আস্তাভাজন সুজন নামে এক ব্যক্তি মামলায় নাম কাটাকে কেন্দ্র করে তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দাবীকে কেন্দ্র করে নূর হোসেনের সাথে বিরোধের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে তারা দাবী করে।
টিপুর মিথ্যা বক্তব্যের প্রতিবাদে সকাল সাড়ে ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
এসময় প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে নাসিক ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপি নেতা আবুল কাউছার আশা বলেন,এই স্বাধীনতা নতুন বোতলে পুরান মদ ঢালার জন্য হয়নি।আমরা চেয়েছি বৈষম্য মুক্ত একটা সমাজ। যেই সমাজে ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্নে ব্যবসা করবে। ছাত্ররা নির্বিঘ্নে পড়ালেখা করবে,চাকুরীজীবীরা নির্বিঘ্নে চাকুরী করবে।প্রশাসনের কর্মকর্তারা যে জনগনের সেবার জন্য শপথ নিয়েছে সে মোতাবেক কাজ করবে।আপনাদের হুশিয়ারী দিয়ে বলতে চাই আপনারা দুই চারজন পাঁচ জন বিএনপি নেতা ছাড়াও এই দেশে হাজার হাজার নেতাকর্মী আছে যারা জীবন দেবার জন্য প্রস্তুত।আমি প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো ৫ তারিখের পর আমরা থানা সহ উপজেলা ও সরকারি দপ্তর রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় কাজ করেছি কিন্তু কারা এই শহরের সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য লুটপাট ও হামলা চালিয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হোক।
তিনি আরো বলেন,কোন চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন।শেখ হাসিনার অস্ত্র ছিলো মামলা দিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা এখন মহানগর বিএনপিতে যারা আছেন তারাও একই রাস্তায় হাঁটছে।সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের বাঁচাতে নিজ দল থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ সবার নামে ঢালাও করে মামলা দিচ্ছে।আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং চার্টশিট থেকে নাম কাটতে মোটা অংকের টাকা নিচ্ছেন। এর জন্য আমাদের সন্তানরা রক্ত জড়ায় নাই।এখনো নিজের লজ্জাবোধ থেকে ভালো হয়ে যান। ইনশাআল্লাহ যদি ভালোভাবে চলেন আজকে এখানে যারা আছি সবাই আপনাদের সাথে থাকবো আর যদি এভাবে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, নৈরাজ্য চালাতে থাকেন তাহলে কে কি করবে জানি না হায়াতের মালিক আল্লাহ কিন্তু আমি আবুল কাউছার আশা প্রতিটি জায়গায় আপনাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলবো।
টিপুর উপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিকেল সাড়ে ৩টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে ৭২ ঘন্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার করার দাবী জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে মহানগর বিএনপি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড.সাখাওয়াত হোসেন খান সহ মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এসময় বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত বক্তারা আতাউর রহমান মুকুল,আবুল কাউছার আশা, সৌরভ ও নূর হোসেন সহ টিপুর উপর হামলাকারীদের ৭২ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, বন্দরের আতাউর রহমান মুকুল,আবুল কাউছার আশা, সৌরভ এরা আওয়ামী লীগের দোসর।আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তাদের সাথে আতাত করে বিভিন্ন অপরাধ করে চলেছে।এখনো আওয়ামী সরকার যাবার পর এলাকা দাবরিয়ে অপরাধ করে চলছে।তাদের অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ। তাই কেন্দ্র থেকেই তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।তাহলে তারা কিভাবে বিএনপির দলের বলে দাবী করে।তারা পরিকল্পিতভাবে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির অন্যতম কান্ডারি নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে এগিয়ে নিতে সাখাওয়াত-টিপুর কোন বিকল্প ছিলো না।এই টিপুর অবদান বিএনপি ভূলবে না।সেই টিপুকে হত্যার উদ্দেশ্যেই হামলা চালিয়েছে।এর আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি টিপুর উপর হামলাকারীদের ৭২ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে না হলে এই নারায়ণগঞ্জ আমরা অচল করে দিবো।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বক্তারা আরো বলেন, কাউছার ও মুকুল আওয়ামী লোক নারায়ণগঞ্জের কে না জানে।তারা আওয়ামী লীগের সাথে আতাত করেই এই কাজ করেছে। বিএনপির লোক যদি হতো তাহলে তারা এই কাজ করতো না।তবে এখনো সময় আসে বসে এটা সমাধান করুক।আমরা রাজপথে এক সাথে অনেক লড়াই সংগ্রাম করেছি।জেল জুলুমেরও শিকার হয়েছে।তাই তাদের অনুরোধ করবো আমাদের বিএনপি দলকে কোনভাবে যেন তারা কলুষিত না করে তাহলে আমরা আজকে মহানগর এর আহবায়ক সাখাওয়াত ভাইয়ের জন্য কিছু বলি নাই।তাদের বিরুদ্ধে যদি ৭২ ঘন্টার মধ্যে কোন একশন না নেওয়া হয় তাহলে আমরা তারা কিভাবে বাসা থেকে বের হয় এবং নারায়ণগঞ্জে থাকে তা আমরা দেখিয়ে দিবো।