জাগো নারায়ণগঞ্জ
বন্দরে গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট বন্দর বাজার থেকে ১নং খেয়াঘাট পর্যন্ত। মোটামুটি এই সড়কের পাশেই আছে ফুটপাত। ব্যস্ততম এই পয়েন্ট ঘিরে গড়ে উঠেছে সক্রিয় একাধিক চাঁদাবাজ চক্র। তবে হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে এই ফুটপাতের ‘চাবি’ ছিল আওয়ামী লীগ নেতা খান মাসুদের হাতে। সেখানকার অবৈধ দোকানের ভাড়ার টাকা গুনতেন সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা। এমনকি টাকার ভাগ যেত পুলিশের পকেটেও। শক্তি হারিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা খান মাসুদ পালালেও ফুটপাতজুড়ে এখনও আছে সারি সারি দোকান, আছে ফুটপাতও। তবে এখনকার দখলদার, চাঁদাবাজ কারা?।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বন্দর ১নং খেয়াঘাট থেকে কুমাড়পাড়া পর্যন্ত ফুটপাতে দখল, চাঁদাবাজি, উৎপাত– সবই আছে আগের মতো। শুধু বদলেছে কুশীলব। বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধেই মিলেছে বেশির ভাগ দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ। এরই মধ্যে জোফেস বাহিনীর অনুসারী যুবদল নেতা সোহাগ, হুমায়ন, ২২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শিবু দাস, বন্দর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক টিপু, মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব শাহেদ এর অনুসারী যুবদল নেতা মিনহাজ মিঠু। এসব চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের প্রধান দায়িত্ব পালন করছেন জাতীয় পার্টির নেতা সানাউল্লাহ সানুর অনুসারী সাত্তার। এই ফুটপাতে প্রায় দুইশত মত দোকান রয়েছে, দৈনিক ১০০ থেকে ১৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছেন চাঁদাবাজরা। ফলে এই রাস্তায় প্রতিনিয়তই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে এবং ফুটপাত দখল থাকায় পথচারীরা চলতে গিয়ে দুঘর্টনার শিকার হচ্ছেন। মূলত: চাঁদার টাকা প্রতিদিন হারে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা সাত্তারের কাছে জমা হয়। ফুটপাত থেকে চাঁদা তোলেন চা দোকানদার ফিরোজ ও যুবদল নেতা সোহাগের অনুসারী আকাশ। মাস শেষে বন্দর ঘাট সংলগ্ন চান মিয়ার মাকের্ট এর দ্বিতীয় তলায় চাঁদাবাজদের মাঝে ওই টাকা ভাগাভাগি করে দেয়া হয়। কোন গ্রুপ ১০ হাজার আবার কোন গ্রুপকে ১৫ হাজার টাকা করে প্রতিমাসে দেয়া হয়। এরই মধ্যে বন্দর থানা পুলিশের নামে ১০ হাজার টাকা খরচ আছে বলেও জানা গেছে।
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, বন্দর ঘাটের পাশাপাশি বন্দর স্কুল ঘাট থেকে রূপালী পর্যন্ত রয়েছে সড়কের পাশে দোকান। এসব দোকান নিয়ন্ত্রণ করেন মহানগর যুবদল নেতা জোফেসের অনুসারী বন্দর থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি আমির হোসেন ও যুবদল নেতা হুমায়ন। নতুন দোকান বসিয়ে ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত এডভান্স নেওয়া হয়। প্রতিদিন দোকান থেকে ১৫০ টাকা করে শুরু করে সর্বনিম্ন ৪০ টাকা করে নেয়া হয়।
এসব চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযান জরুরী মনে করছেন স্থানীয়রা।