শিক্ষার্থীদের অহিংস কোটা সংস্কারের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)। দলের চেয়ারম্যান এবং বিরোধীদলের নেতা জি এম কাদের যৌক্তিক আন্দোলনে সশস্ত্র হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী তরুণদের অভিনন্দন। তাদেরকে বীর মুক্তিসেনা হিসেবে অভিহিত করতে চাই।’
আজ মঙ্গলবার বিবৃতিতে এসব কথা বলেন জি এম কাদের। তিনি আরও বলেন, বাঙ্গালি জাতির ইতিহাসে সুদীর্ঘকাল থেকে বৈষম্যের মাধ্যমে সৃষ্ট বঞ্চনা, নিপীড়ন, নির্যাতন ও দারিদ্রের অভিশাপ প্রচলিত ছিল। বৈষম্যের এই অভিশাপ থেকে মুক্তি লাভের জন্য তারা বারবার সংগ্রাম করেছেন, অনেকে আত্মদান করেছেন এবং বারবার বিজয়ী হয়েছেন। কিন্তু তাদের সেই বিজয় প্রতিনিয়ত ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জি এম কাদের আরও বলেন, ব্রিটিশ আমলে উপনিবেশিক শাসকরা দেশে সুবিধাভোগী জমিদার শ্রেণি এবং সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিবর্গ সৃষ্টির মাধ্যমে একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠী দ্বারা বাঙালি জাতিকে শোষণ ও লুণ্ঠন করেছে। পরবর্তীতে বাঙালি জাতি পাকিস্তান সৃষ্টির মাধ্যমে এ বৈমষ্য থেকে মুক্ত হতে চেয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানিরাও সে বিজয়কে ছিনিয়ে নেয়।
বিরোধীদলের নেতা বলেছেন, বর্তমান সরকার বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় দেশে আবার বিভাজন সৃষ্টি করছে। এর মাধ্যমে একটি সুবিধাভোগী গোষ্ঠী তৈরি করা হচ্ছে। কোটা পদ্ধতি সেই প্রক্রিয়ার অংশ মাত্র। বর্তমান শাসক শ্রেণি সরকারসৃষ্ট এই সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর মাধ্যমে দেশের জনগণকে শাসন-শোষণ করে চলেছে। সামনের দিনগুলোতেও এ উদ্দেশ্য আরও ব্যাপকভাবে বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। তরুণ সমাজ এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। সেই কারণে তাদের বৈষম্য মুক্তির এ সংগ্রামের বীরযোদ্ধা বা বীর মুক্তিসেনা বলে মনে করছি। মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ব্যবহার বা অপব্যবহার করে তাদের যেভাবে কলঙ্কিত করা হচ্ছে, তাতে করে আশঙ্কা হয় ভবিষ্যতে কোনো প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তাদের পরিচয় প্রকাশ করতে সংকোচ বোধ করতে পারেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, পরবর্তী করণীয় ঠিক করা যেতে পারে ও সে বিষয়গুলো আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের জানানো যেতে পারে। অন্যথায়, দেশ ও আগামী প্রজন্ম একটি সংঘাতময় অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছে। মনে রাখতে হবে, অযৌক্তিক জেদ কারো জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না।