চিলির মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত ল্যাগুনা দেল মৌলে আগ্নেয়গিরি অঞ্চলে শুক্রবার মাত্র ২ ঘণ্টায় ১৬০ বার ভূ–কম্পন অনুভূত হয়েছে। এ ঘটনায় সতর্কতা জারি করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আর্জেন্টিনার সীমান্তের কাছাকাছি রাজধানী সান্তিয়াগো থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার (১৯০ মাইল) দক্ষিণে অবস্থিত এই আগ্নেয়গিরির জটিল ক্ষেত্রটি প্রায় ৫০০ বর্গকিলোমিটার (১৯৩ বর্গমাইল) এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এখানে আগ্নেয়গিরির গম্বুজ, শঙ্কু ও লাভার প্রবাহ রয়েছে এবং প্রায় ১৩০টি আগ্নেয়গিরির ছিদ্র (vents) রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
সান্তিয়াগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ ও অধ্যাপক আয়াজ আলম বলেন, ‘এই লক্ষণগুলো দেখাচ্ছে যে আগ্নেয়গিরিটি সক্রিয়, এর ভেতরে ম্যাগমা রয়েছে এবং সেগুলো নড়াচড়া করছে। এগুলো ভবিষ্যতে মাঝারি ধরনের কোনো ঘটনা ঘটাতে পারে। তবে কবে সেটা ঘটবে, তা আমরা জানি না’।
চিলির জাতীয় ভূতাত্ত্বিক ও খনিসেবা সংস্থা সেরনাজিওমিন জানিয়েছে, ভূমিকম্পগুলোর মাত্রা কম ছিল এবং এখনো আগ্নেয়গিরি ক্ষেত্রটিকে ‘সবুজ সতর্কতা’ অবস্থায় রাখা হয়েছে। যার অর্থ তাৎক্ষণিক কোনো ঝুঁকি নেই।
চিলির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা সেনাপ্রেড বলেছে, তারা আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করে যাবেন। এর ফলে যে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে সতর্কতা ও প্রতিক্রিয়া জানানো যাবে।
অধ্যাপক আলম আরও বলেন, আগ্নেয়গিরির এলাকায় ভূমিকম্পের ঝাঁক (seismic swarm) সাধারণত হালকা মাত্রার হয়। এগুলো টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষের কারণে নয়, বরং ম্যাগমার প্রবাহের জন্য ঘটে।
এদিকে দেড় শতাধিক ভূকম্পনের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি ছিল মাত্র ২.১ মাত্রার। তবে অপেক্ষাকৃত নতুন এই আগ্নেয়গিরি ক্ষেত্রটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কয়েকবার সক্রিয়তার লক্ষণ দেখিয়েছে।
এ বিষয়ে চিলি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূভৌতিক বিশেষজ্ঞ ও আগ্নেয়গিরি গবেষক ড্যানিয়েল দিয়াজ বলেন, ‘এই অঞ্চলটি বেশ অনন্য। কারণ এখানে একটি নির্দিষ্ট আগ্নেয়গিরি গঠন নেই। বরং হ্রদের চারপাশে ডজনখানেক গঠন রয়েছে। যার কিছু গত ২,০০০ বছরের মধ্যে তৈরি হয়েছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘এই আগ্নেয়গিরির গঠন সাম্প্রতিক সময়ে। তাই আমরা এখানে এর কার্যক্রম প্রত্যাশিত। তবে এটি একটি কেন্দ্রীয় শঙ্কুতে কেন্দ্রীভূত নয়, বরং ল্যাগুনা দেল মৌলের চারপাশের পুরো অঞ্চলে বিস্তৃত’।