নিজস্ব প্রতিবেদক
নারায়নগঞ্জের ফতুল্লায় ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপন করা হয়েছে। ফতুল্লা থানা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্দেগ্যে বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে এ উপলক্ষে সমাবেশ ও র্যালি করা হয়।
র্যালিতে ফতুল্লা থানার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে দলে দলে এসে যোগ দেন। যা এক সময় জনসমুদ্রে রুপ নেয়। র্যালিটি ফতুল্লার ডিআইটি মাঠ থেকে শুরু হয়ে ঢাকা- নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়কে পঞ্চবটী বাস স্ট্যান্ড গিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
র্যালিটির নেতত্ব দিয়েছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু ও থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী।
র্যালিটির পূর্বে ডিআইটি মাঠের সমাবেশে জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন কে উদ্দেশ্য করে ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন,গিয়াসউদ্দিন এবং শামীম ওসমান একই সূত্রে গাঁথা, এদের কোন পার্থক্য নেই। পার্থক্য শুধু একজন লম্বা আরেকজন খাটো। আরেকটা পার্থক্য হলো একজন ঘোষনা দিয়ে প্রকাশ্যে খুন করায় আর একজন গোপনে খুন করে। এরা দু’জনই গডফাদার।
তিনি বলেন, আপনি মনে প্রানে শেখ মুজিবের আদর্শ লালন করেন বলেই আপনি ১৫ আগস্ট পালন করেছেন, নাসিক নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার পর মিষ্টি খাইয়ে খুশি রাখার চেষ্টা করেছেন, আপনার পরিবারের সদস্যরা নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছেন। এসব করে আপনি নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। আর এখন বাঘ সেজে হুংকার দিচ্ছেন, বাঘ সাজতে চান তাতে সমস্যা নাই, কিন্তু এই বাঘকে আমরা ভয় পাই না। আমার প্রশ্ন ৫ আগস্টের আগে আপনি কোথায় ছিলেন, তখন কেন বাঘ সাজেননি। আন্দোলন করতে গিয়ে যে গুলি শহিদুল ইসলাম টিটু খেয়েছে তা আপনার খাওয়ার কথা, তখন আপনি কোথায় ছিলেন?
গিয়াসকে উদ্দেশ্য করে রিয়াদ চৌধুরী বলেন, ২০০১ সালের নিবার্চনের ১৭দিন আগে আওয়ামীলীগ থেকে বিএনপিতে এসে এমপি হয়ে আপনি বিএনপির ত্যাগী, নিবেদিত নেতাকর্মীদের দমন-পীড়ন চালিয়ে আওয়ামীলীগকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। দীর্ঘ ১৫ বছর আন্দোলনের বাইরে ছিলেন। আপনাকে ফতুল্লা বিএনপি সমর্থন দিয়ে আলোচনায় এনে জেলা বিএনপির সভাপতির জায়গায় বসানো হয়েছে। আপনি এ পদে এসেই আগের ন্যায় বিভাজনের রাজনীতি শুরু করেছেন। যারা আওয়ামীলীগের আদর্শ লালন করে তারা বিএনপির ত্যাগীদের সহ্য করতে পারবে না এটাই প্রমাণিত। দীর্ঘদিন ত্যাগের বিনিময়ে বিএনপি আজ এ অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে।
সে অজর্ণকে ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করছে একটি পক্ষ এমন মন্তব্য করে রিয়াদ চৌধুরী বলেন, গিয়াস সাহেব আপনি ৫আগষ্টের পর বহিষ্কার খেলায় লিপ্ত হয়েছেন। সিদ্ধিরগঞ্জে কোথায় কার মার্কেট দখল করেছেন, লুটপাট কি করেছেন সব আমরা জানি, আপনি এর দায় এড়াতে পারবেন না। আমাদের হুমকী দিয়ে লাভ নাই, শামীম ওসমানের মতো গডফাদারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে আমরা রাজনীতি করেছি, সেই শামীম ওসমান পালিয়েছে, আর আপনি এসে নারায়ণগঞ্জের মানুষকে হুমকি দিচ্ছেন। এসব করে আপনি বিএনপিকে বিতর্কীত করতে যা করনীয় আপনি সব করছেন। আপনার পরিবার কি অপরাধ করেছেন, আর আমরা কি অপরাধ করেছি। একটি মঞ্চ করে বসেন ফতুল্লায় কি হয়েছে আর সিদ্ধিরগঞ্জে কি হয়েছে। তখনই বুঝা যাবে কে কি দখল করেছে। কে কতোটুকু অন্যায় করেছে। আপনি প্রতিদিন অন্যায় করছেন আর সভামঞ্চে বসে পরের সমালোচনা করছেন, পরের অন্যায়ের কথা আর কতোদিন বলবেন।
আপনি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কথা বলে বিএনপিকে আর বিতর্কীত করবেন না।
ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু বলেন যারা মাঠে ছিলোনা, যারা ২০০১ সালে মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজী করেছে, এখন তাঁদের শেল্টার দিচ্ছেন, আমরা উড়ে এসে জুড়ে বসিনি, আমরা তৃনমূল থেকে উঠে আশা কর্মী। আমাদের হুমকী দিয়ে, ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। যারা আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন আপনার আন্দোলনের সময় কোথায় ছিলেন। বিভাজনের রাজনীতি পরিহার করে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করুন।
এসময় বক্তব্য রাখেন ফতুল্লা থানা শ্রমিকদলের আহবায়ক শাহ আলম, থানা যুবদলের সদস্য সচিব সালাউদ্দিন সালু,স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক জাকির হোসেন রবিন, ফতুল্লা থানা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আঃ খালেক টিপু, ফতুল্লা থানা বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক বাবুল আহমেদ, বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক সুমন আকবর, নজরুল ইসলাম প্রধান,কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার, ফতুল্লা থানা বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক সাগর সিদ্দিকী, মুসলিম আহমেদ।