ষ্টাফ রিপোর্টার:
জুলাই-আগষ্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুথানে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গিয়েছেন দীর্ঘ ১৭ বছরের স্বৈরশাসক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সাথে পালিয়েছে সারাদেশের প্রভাবশালী আওয়ামীলীগের এমপি-মন্ত্রীসহ অনেক নেতা। কিন্তু এখনও রয়েছে তাদের সকল অপকর্মের সহযোগি প্রেতাত্মার দল। ফতুল্লা পশ্চিম মাসদাইর এলাকায় এখনও অনেক আওয়ামী প্রেতাত্মা প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীদের আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে। যাদের মধ্যে অন্যতম নারায়ণগঞ্জের গডফাদার হিসেবে খ্যাত সাবেক সাংসদ শামীম ওসমানের আস্থাভাজন ভুমিদস্যু ও ঝুট সন্ত্রাসের অন্যতম সিপাহসালার মধ্যমনি ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক ও বৃহত্তর এনায়েতনগর ইউনিয়ন ৭.৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মতিউর রহমান প্রধান এবং সাংসদ শামীম ওসমানের তনয় অয়ন ওসমানের সিপাহসালার অন্যতম দুই সৈনিক নিষিদ্ধ ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আশরাফুল ইসমাইল রাসেল ও মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের সহযোদ্ধা মো. সিফাত। এদের মধ্যে মতিউর রহমান প্রধান হলেন জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির আপন ছোট মামা এবং সিফাত হলেন প্রয়াত সৈনিকলীগ নেতা মোকলেসের ছেলে এবং রনির আপন ভাগিনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক স্থানীয়রা জানান, ৫ আগষ্টের পর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পড়ে দি কুইন অব ডেভিল শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যায়। সুদুর ভারতে থেকে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পায়তারা এখনও চালাচ্ছেন দি কুইন অব ডেভিল শেখ হাসিনা। দেশে শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখতে ইতিমধ্যে দেশব্যাপী চলছে অপারেশন ডেভিল হান্ট। অথচ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির আপন মামা এবং ভাগিনা সেই ডেভিল বাহিনীর অন্যতম সদস্য হলেও তারা এখনও রয়েছে প্রকাশ্যে আর পুর্বের ন্যায় বর্তমানে রয়েছে বহাল তবিয়তে।
স্থানীয়রা জানান,শামীম ওসমানের পাশে থেকে মতিউর রহমান প্রধান মাসদাইরসহ আশপাশ এলাকাতে ভুমিদস্যুতা ও ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রন করতো। আপর ভাগ্নি জামাই মোকলেস হত্যাকারী বড় মিজান,গাফফার,খলিল ও মন্টুগংদের সাথে নিয়ে মাসদাইর,চৌধুরী কমপ্লেক্স,টাগাড়পাড় এলাকার বিভিন্ন গার্মেন্টস থেকে ঝুট নামাতো মতি প্রধানগং। এছাড়াও মাসদাইর ও আশপাশ এলাকায় নিরীহ মানুষের শেষ সম্বল জমিগুলো মামলা ও জেলখাটিয়ে ভুয়া দলিলের মাধ্যমে তাদের কজ¦ায় নিয়ে উচ্চ দামে অন্যত্র বিক্রি করতো মাসদাইর তালা ফ্যাক্টরী এলাকা শাহজালাল প্রধানগংদের নিয়ে। ভুমিদস্যুতা ও ঝুট নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা মালিক বনে গেছেন মতি প্রধান। অপারেশন ডেভিল হান্টে যখন বিভিন্ন এলাকাতে আওয়ামীলীগের দোসররা একের পর এক গ্রেফতার হচ্ছে এবং গ্রেফতার এড়াতে অনেকে গা ঢাকা দিয়েছিন ঠিক সেই সময়ে ভাগিনা মশিউর রহমান রনির হেফাজতে থেকেই মতি প্রধান নিজ বাড়িতে বহুতল বিল্ডিংয়ের নির্মান কাজ করছেন। এ যেন “মামা-ভাগিনা যেখানে,আপদ নাই সেখানে’র” মত অবস্থা। তবে স্থানীয়দের মতে,অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে মতি প্রধান রাতারাতি ১০ তলা ভবনের নির্মান কাজ করছে। সত্যি সেল্যুকাস বর্ননা করে অনেকে বলেন,যেখানে আওয়ামীলীগের করার অপরাধে অনেক নেতাকর্মী সবকিছু ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সেখানে মতি প্রধানের মত ভুমিদস্যু ও ঝুট সন্ত্রাসীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার উপর হামলা চালিয়ে হত্যা ও আহতের ঘটনায় কোন প্রকার মামলা ছাড়াই দিব্ব্যি প্রকাশ্যেই রয়েছেন শুধুমাত্র ভাগিনা মশিউর রহমান রনি বিএনপির সহযোগি সংগঠন যুবদলের সদস্য সচিব হওয়ার সুবাদে। সত্যি অনেক সৌভাগ্যবান মতি প্রধান আওয়ামী ডেভিল হওয়া সত্তে¡ও অপারেশন ডেভিল হান্টে তিনি একেবারেই নিরাপদ।
মশিউর রহমান রনির ভাগিনা সিফাত। বিগত কয়েক বছর আওয়ামী ছাত্রলীগের ব্যানারে অয়ন ওসমানের সিপাহসালার অন্যতম দুই সৈনিক নিষিদ্ধ ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আশরাফুল ইসমাইল রাসেল ও মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের সহযোদ্ধা হিসেবে দুর্দান্ত প্রতাপ দেখিয়ে চলাচল করছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন রুখতে অয়ন ওসমান-রাফেল-রিয়াদের নির্দেশে বড়ভাইয়ের শশুর বড় মিজানগংদের মাথে মাসদাইর কবরস্থান এলাকাতে হামলা চালায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে। ৫ আগষ্টের পর জেলার বিভিন্ন থানাতে হামলা ও হত্যা সংক্রান্ত বিষয়ে আওয়ামীলীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগসহ সকল নেতাকর্মীরা আসামী হলেও মামার আর্শীবাদে পুরোটাই নিরাপদ রয়েছে সিফাত। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের এ ডেভিল সিফাত এখনও প্রকাশ্যেই আগের ন্যায় তাফালিং অব্যাহত রেখেছেন। মাসদাইর ও কবরস্থান এলাকায় ডেভিল সিফাত এখন একটি আতংকের নাম। মামার আর্শীবাদে এতটাই বেপরোয়া যে ওর অপরাধ রুখার মত সামর্থ্য কারোর নেই বললেই চলে।
তবে স্থানীয়দের দাবী, যদি আত্মীয়তার সুত্রে সকল অপরাধ ক্ষমা যোগ্য হয় তাহলে তো কথা নেই। কিন্তু আইনের ভাষায় যদি অপরাধীর শাস্তি হওয়ার প্রয়োজন তাহলে মতি প্রধান ও সিফাতের মত ডেভিলদেরকে দ্রæত আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় মতি প্রধান-সিফাতের মত ডেভিলরা আত্মীয়তার সুবাদে প্রকাশ্যে থেকেই পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার নানা প্রকার অনৈতিক নির্দেশনা গুলো পালন করতে সহায়তা করছে এবং প্রতিটি পাড়া-মহল্লার শান্তি ভঙ্গের কারন হয়ে দাড়াচ্ছে।
তাই প্রশাসনের কাছে স্থানীয়দের দাবী, আত্মীয়তার সুত্রে নিরাপদে নয় অপরাধের সুত্রে প্রকৃত ডেভিলদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক। তারা অনতিবিলম্বে মতি প্রধান ও সিফাতের মত ডেভিলদেরকে গ্রেফতারের জন্য জেলা পুলিশ সুপার ও র্যাব-১১’র সদসয় হস্তক্ষেপ কামনা করেন।